শিরোনাম

South east bank ad

সেই পথশিশু মারুফ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে

 প্রকাশ: ২৪ এপ্রিল ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ভিন্ন খবর

সেই পথশিশু মারুফ সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে

পুরান ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এলাকা থেকে এক সাংবাদিকের লাইভের মাঝে ঢুকে পড়ে লকডাউন নিয়ে প্রশ্ন তোলা পথশিশু মারুফকে অবশেষে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
জজকোর্ট এলাকার বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনে থেকে বেলা সাড়ে ১১টায় মারুফকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মিরপুরের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

এরপর শিশুটিকে আদালতের আদেশের ভিত্তিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) মাহবুবুর রহমান।

তিনি বলেন, আজ (শনিবার) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে জজকোর্ট এলাকার বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের সামনে থেকে মারুফকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি থানা-পুলিশ। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মিরপুরের আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।

ফেসবুকে ভাইরাল পথশিশু মারুফকে বৃহস্পতিবার থেকে বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় দেখা যাচ্ছিল না। শিশুটির অবস্থান সম্পর্কে তার সঙ্গী পথশিশুরাও কিছু বলতে পারেনি।
তবে শিশুটির নিয়মিত খোঁজখবর রাখছিলেন সহমর্মিতা ফাউন্ডেশন উদ্যোক্তা পারভেজ হাসান। শনিবার ভোরে ফেসবুকে এক পোস্টে পারভেজ জানান, মারুফের খোঁজ মিলেছে বাহাদুর শাহ পার্কেই। দিনের বেলায় তাকে দেখা না গেলেও রাতে সে পার্কে ফিরে এসেছে।

ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালত এলাকা থেকে গত সোমবার দুপুরে ফেসবুকে লাইভ এর প্রায় শেষের দিকে ক্যামেরার ফ্রেমে ঢুকে পড়ে পথশিশু মারুফ। সে বলে ওঠে, ‘এই যে লকডাউন দিছে, মানুষ খাবে কী? সামনে ঈদ। এই যে মাননীয় মন্ত্রী একটা লকডাউন দিছে, এটা ভুয়া। থ্যাঙ্কু।’

পরদিন মারুফের চোখে জখমসহ একটি ছবি ছড়িয়ে পড়ে ফেসবুকে। ওই ছবি শেয়ার করে অসংখ্য ফেসবুক ব্যবহারকারী অভিযোগ তোলেন, লকডাউন নিয়ে সরকারি অবস্থানের বিরোধিতা করার কারণেই তাকে পুলিশ বা ছাত্রলীগ কর্মীরা মারধর করেছে।

কিন্তু আসলে মারুফের সঙ্গে তার এলাকার পথশিশুদের মারামারিতেই জখমের ঘটনাটি ঘটে। সাংবাদিক পলাশের লাইভের পরদিন এক ব্যক্তি শিশুটির সঙ্গে আদালত এলাকায় একটি সেলফি তোলেন। সেই সেলফি থেকে শিশুটির ছবিটি কেটে নিয়ে ‘মনগড়া’ অভিযোগ তুলে ভাইরাল করা হয় ফেসবুকে।

বাহাদুর শাহ পার্কে বসবাসকারী নুপুর নামের এক পথশিশু জানায়, মারুফ ওই এলাকায় এসেছিল কিছুদিন আগে। এর আগে সে কমলাপুর এলাকায় ছিল।

নুপুর শুক্রবার বলে, ‘কালকা থাইকা ওরে (মারুফ) দেখতাছি না। অনেকে ওর খোঁজ করতাছে দেইখা আমরা কোর্টের মইধ্যেও খুঁজছি। আবার ওই যেহান যেহান যায় সেইহানের গেছি, কিন্তু পাই নাই। মারুফের তো এমনতেই মাথার ঠিক নাই। কই গেছে কে জানে।’

এলাকাবাসী জানান, বাহাদুর শাহ পার্ক এলাকায় ছিন্নমূল বেশ কয়েকজন শিশু থাকে। তাদের সঙ্গেই থাকত মারুফ। এসব শিশুর বেশির ভাগই ড্যান্ডি (আঠাজাতীয় নেশা) আসক্ত। মারুফও এই নেশাদ্রব্য গ্রহণ করায়, তার আচরণ ও বক্তব্য ছিল অসংলগ্ন।

জজকোর্ট এলাকার রিকশাচালক মোস্তফা মিয়া বলেন, ‘দেখতাম ওরা ড্যান্ডিম্যান্ডি নিয়া আশপাশে দৌড়াদৌড়ি করত। এরপর শুনলাম মারুফকে কারা যানি ভাইরাল করছে।’

মারুফের বিষয়ে শুক্রবার সূত্রাপর থানায় যোগাযোগ করা হলে ওসি মামুনুর রহমান বলেন, ‘আমরাও শিশুটিকে খুঁজছি, কিন্তু গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাত থেকে এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাইনি।’

তবে শনিবার মারুফকে উদ্ধারের পর কোতয়ালি থানার ওসি মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘মারুফ ছিন্নমূল হওয়ায় তার কোনো স্থায়ী ঠিকানা নেই। বৃহস্পতিবার রাত থেকে সে পার্ক ছেড়ে জজকোর্ট এলাকার বাংলাদেশ ব্যাংক ভবনের আশপাশে ছিল। এ কারণে সে এলাকার কারও চোখে পড়েনি।’

BBS cable ad

ভিন্ন খবর এর আরও খবর: