'পুল সেল': ক্রেতা যখন সিভিল সার্ভেন্ট

ইয়াকুব আলী:
"মেঘ-রৌদ্রের দিন" বইটির সৌভাগ্যই বটে! এ পর্যন্ত বিতরণের এক তৃতীয়াংশের বেশি সিভিল সার্ভেন্টদের হাতে উঠেছে। আমি অনুপ্রাণিত যে আমার এনলাইটেন্ড কলিগরা শুভেচ্ছামূল্য পরিশোধে ইতস্তত করেননি।
শেষ বিকেলে হাতের শেষ কপি যখন সিভিল সার্ভিসের নবীন কর্মকর্তা কাজী শাম্মীনাজ আলমের হাতে দিয়ে বললাম, ‘এই যে শাম্মী, তোমার কপি! শুভেচ্ছামূল্য …। ’ সে দ্রুত ব্যাগ থেকে টাকা বের করে দিল।
ব্যাচমেট পরীক্ষিত চৌধুরী (কবি ও সাবেক ডাকসাইটে পিআরও) বলে উঠলেন, এ তো ‘পুল সেল’- কাছে টেনে ধরিয়ে দেয়া।
গতকাল তথ্য ভবনে তৈয়ব ভাই নিলেন আরো দুই কপি। গিফট করবেন।
‘আমাদের বেড়ে ওঠার দিনগুলো তো প্রায় একই রকম। ফেসবুকে সবটাই পড়েছিলাম। আবার নতুন করে পড়ছি। বইটি সুখপাঠ্য’, বললেন তিনি। ব্যাচমেট মনিরও কিনলেন দুই কপি। মেলা থেকেই কিনতেন। কাছে পেয়ে ভালো হলো। বললেন তাঁকে আরো ১০/১৫ কপি দিতে। বিক্রি করে দেবেন। ধন্যবাদ, বন্ধু। পাশে থাকার জন্য। মনিরের রুমে আসা এক গেস্ট। আগ্রহভরে তিনিও কিনলেন এক কপি। আরো যাদের পৌঁছে দিয়েছি তারা হলেন সেলিনা আপা, সায়েম, ইশরাত জাহান, নুসরাত ও লিয়াকত হোসেন ভুইয়া।
গণযোগাযোগ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বিধান স্যার বললেন, ‘ফেসবুকে তোমার স্মৃতিমন্থন পড়ি। ভালোই লাগে।’
ডিএফপির মহাপরিচালক কিবরিয়া স্যার মিটিং রুমে মিটিংয়ে ছিলেন। কিছু সময় অপেক্ষার পর সেখানেই ঢুকে যাই। প্রিয়জন মোহাম্মদ আলী সরকার নেন এক কপি। অনুযোগ করে বললেন, ‘একটি বই লেখার পেছনের গল্প’ পোস্টে তাঁর নামটি আসেনি। সত্যিই, বইটি লেখার এক পর্যায়ে তাঁর কম্পিউটারেও কাজ করেছি। অফিসের বাইরে থাকা অবস্থায় আমাকে কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড পর্যন্ত টেক্সট করে দিয়েছেন তিনি। আমাদের কত ভুলো মন! ধার নিয়ে ভুলে যাই। কিন্তু যিনি ধার দেন তিনি মনে রাখেন। মোহসিন রেজাও মিটিংয়ে ছিলেন। তিনি পুশসেলের শিকার।
কিবরিয়া স্যার প্রায় দুই বইয়ের দামে এক বই কিনলেন। তাঁর নিজের বইয়ের প্রচ্ছদ, ফ্ল্যাপ হয়ে যাওয়ার পরও কি চিন্তা করে প্রকাশ করেননি কয়েক বছর আগে। আশা করি শিগগিরই বইটি বাজারে আসবে।
ডিএফপির জুনিয়র সহকর্মী মইন ফেসবুকে আমার লেখালেখি পড়ে। সেও এক কপি নিল। কিনবেন কিনবেন ভাবছিলেন। এবিসি শাখায় আজাদকেও দিলাম এক কপি।
আগের দিন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য অফিসার আমাদের হোসেনপুরের কৃতিসন্তান কামরুল ইসলাম ভূইয়া নেন দুই কপি। ফেসবুকে লেখার সময়ে কামরুলও অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। দিনটি শুরু করেছিলাম প্রধান তথ্য অফিসার সুরথ কুমার সরকার স্যারকে কপি দিয়ে। এর পর এপিআইও শাহেনুর মিয়া স্যার, ব্যাচমেট পরীক্ষিত চৌধুরী ও আবদুল জলিল, জাকির হোসেন, আসাদ, ইমদাদ, আশরোফা, কামাল ও মাহমুদুল হাসানকে বই তুলে দিই। নিউজরুমের জসিমকেও দিই এক কপি। পরশু কামাল জানিয়েছেন, ‘…. … …ঘটনাগুলো সব মিলে যাচ্ছে। প্রথম অংশ শেষ করলাম। হাসতে হাসতে দম বন্ধ হবার উপক্রম। মনে হলো বই কেনা সার্থক।’ লকডাউন ও সঙ্গনিরোধের কারণে অনেক প্রিয় মুখকে এ মুহূর্তে পাওয়া যাচ্ছে না। উদাহরণস্বরূপ আফরাজ। ছিল না। বহুদিন আগে আফরাজ ডিএফপির সাবেক মহাপরিচালক সনৎ কুমার বিশ্বাস স্যারকে উদ্ধৃত করে বলেছিলেন শ্রীলংকার এক ভদ্রলোক অটোবায়োগ্রাফি লিখেছিলেন যা বেস্টসেলার হয়েছিল। তিনি একটিই বই লিখেছিলেন। বিষয়টি মাথায় ঘুরপাক খেত। যাহোক, যাদের সঙ্গে দেখা হচ্ছে না আশা করি শিগগিরই তাদের হাতেও বইটির কপি তুলে দেওয়া হবে। ধন্যবাদ সবাইকে।
(ইয়াকুব আলী, সিনিয়র ডেপুটি প্রিন্সিপ্যাল ইনফরমেশন অফিসার, প্রেস ইনফরমেশন ডিপার্টমেন্ট, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রনালয় এর ফেসবুক টাইমলাইন থেকে নেয়া। যোগ করা দরকার অমর একুশে বইমেলায় পাওয়া যাচ্ছে মেঘ-রৌদ্রের দিন। প্রাপ্তিস্থান: ‘মেলা’ (স্টল নম্বর ৬৪২,৬৪৩,৬৪৪)। মূল গেট দিয়ে ঢুকে বাংলা একাডেমির স্টল পার হয়ে হাতের ডানে।)