শিরোনাম

South east bank ad

আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু'র ৮ম মৃত্যু বার্ষিকী আজ

 প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২০, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   মৃত্যুবার্ষিকী

চট্টল দরদী, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর ৮ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ৪টা নভেম্বর।
তার মৃত্যুবার্ষিকীকে সামনে রেখে নভেম্বরের শুরু থেকে আনোয়ারা-কর্ণফুলীতে শুরু হয়েছে নানা আনুষ্ঠানিকতা।
আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু' মৃত্যু বার্ষিকী উপলক্ষে আনোয়ারার হাইলধরে মরহুমের গ্রামের বাড়িতে তার সমাধিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ,খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত সহ নানান ধরনের কর্মসূচীর আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ, মহিলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিকলীগ, স্বেচ্চাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ, আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ, বিভিন্ন সামাজিক ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ।
আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু চট্টগ্রামের আনোয়ারা থানায় হাইলধর গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান চৌধুরী। তিনি আইনজীবী ছিলেন। তাঁর মাতার নাম খোরশেদা বেগম। এবং তিনি স্বনামধন্য শিল্পপতি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার মরহুম সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর দ্বিতীয় কন্যা নুর নাহান জামান এর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ১৯৫৮ সালে পটিয়া হাই স্কুল থেকে ম্যাট্রিক পাস করে ঐ বছরই ঢাকা নটরডেম কলেজে ভর্তি হন। ইন্টারমিডিয়েট ক্লাসে পড়ার সময় তিনি বৃত্তি পেয়ে আমেরিকার ইলিনয় ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স এন্ড টেকনোলজিতে ভর্তি হন। পরে তিনি নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটিতে বিজনেস এডমিনিস্ট্রেশনে পড়াশোনা করেন। ওখান থেকে এসোসিয়েট ডিগ্রি নিয়ে ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে দেশে ফিরেন। এবং দেশে এসে ১৯৬৫ সালে ব্যবসা শুরু করেন। আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ১৯৬৭ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি সত্তরের সাধারণ নির্বাচনে আনোয়ারা ও পশ্চিম পটিয়া থেকে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। স্বাধীনতার পর তিনি দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এ পদে বহাল ছিলেন। তিনি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেছেন। পঁচাত্তর সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হলে তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ করে দল পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। আশির দশকে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখায় কারাভোগসহ নির্যাতনের শিকার হন তিনি। চট্টগ্রাম-১২ (আনোয়ারা-কর্ণফুলী) আসন থেকে চার বার- ১৯৭০, ১৯৮৬, ১৯৯৬ ও ২০০৮ সালে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক আখতারুজ্জামান চৌধুরী আওয়ামীলীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবনে আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু’র স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মেয়ে আছে। তিন ছেলে মধ্যে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ বর্তমান সরকারের ভূমিমন্ত্রী, আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনি এবং আসিফুজ্জামান চৌধুরী জিমি পারিবারিক ব্যবসা বাণিজ্য দেখাশুনা করেন। তিন জনই স্ব স্ব ক্ষেত্রে সুপ্রতিষ্ঠিত। কর্মজীবন আখতারুজ্জামান বাবু ১৯৭৭ সাল থেকে আওয়ামীলীগ চট্টগ্রাম (দক্ষিণ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। তিনি সংসদের পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি চট্টগ্রামের একজন নেতৃস্থানীয় শিল্পোদ্যোক্তা। আখতারুজ্জামান বাবু ছিলেন ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি), জনতা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড ও আরামিট গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। এছাড়াও তিনি ফেডারেশান অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) এর সভাপতি, দুইবারের জন্য চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (সিসিসিআই)-এর নির্বাচিত সভাপতি, প্রথম বাংলাদেশী হিসেবে গ্রুপ-৭৭ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সহ-সভাপতি এবং ও আই সিভুক্ত দেশসমুহের চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রামের সর্বস্তরের মানুষ চট্টল দরদী আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুকে আন্তরিকতার সাথে ভালবাসে, শ্রদ্ধা করে ও সম্মান করে। চট্টগ্রামের জন্য চট্টগ্রামের স্বার্থের জন্য এবং চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু ছিলেন আপোষহীন।
আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, বাবু ভাইকে হারানোর শূন্যতা আনোয়ারাবাসী কখনো পূরণ করতে পারেনি। করোনা মহামারির কারণে ব্যাপকভাবে মৃত্যু বার্ষিকী পালন করা না হলে ও সমাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সংক্ষিপ্ত পরিসরে প্রিয় নেতার কবর জেয়ারত, পুষ্পার্পণ, খতমে কোরআন, মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাতের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী কর্মসূচি পালন করা হবে।
উল্লেখ্য যে, বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ, সমাজসেবক, বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সকল মহলের প্রশংসিত ব্যক্তিত্ব আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু একটি সফল অধ্যায় শেষ করে ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে চলে যান। তারা মৃত্যুর পর ছেলে সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ একই আসন থেকে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি ভূমি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।

BBS cable ad

মৃত্যুবার্ষিকী এর আরও খবর: