‘বিকাশ দিদি’ মুন্নী বড়ুয়ার গল্প এখন ‘সিএনএন’-এ

রাজধানী ঢাকার সবুজবাগ এলাকায় অনেকেই চেনেন মুন্নী বড়ুয়া-কে। ‘বিকাশ দিদি’ নামে পরিচিত এ নারী এজেন্টের গল্প এখন দেশের গণ্ডি পেরিয়ে পৌঁছে গেছে বিশ্বদরবারেও। তার সংগ্রামী জীবন এবং একজন সফল উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প সম্প্রতি উঠে এসেছে প্রখ্যাত আন্তর্জাতিক টেলিভিশন নেটওয়ার্ক সিএনএনে।
সিএনএনের এ তথ্যচিত্রে মুন্নীকে বলতে শোনা যায়, কীভাবে তার মতো একজন নারী নানা আর্থসামাজিক বাধা পেরিয়ে হাল ধরলেন পরিবারের। দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশের একজন এজেন্ট হয়ে বদলে ফেললেন ভাগ্যের চাকা, হলেন একজন সফল উদ্যোক্তা। তিনি বলেন, ‘এলাকায় আমাকে মোটামুটি সবাই চেনে। কিন্তু আমি চাই আরো অনেকে আমাকে চিনুক। সবাই জানুক, একজন নারী তার ইচ্ছাশক্তি দিয়ে অনেক কিছুই করতে পারে তার পরিবারের জন্য, নিজের জন্যও।’
১৯৯৬ সালে পরিবারসহ ঢাকায় আসেন মুন্নী। আসার পর স্বামীর মুদি দোকানের আয়ের ওপর ভর করে ভালোই কেটে যাচ্ছিল দিন। কিন্তু হঠাৎ অন্ধকার নেমে আসে মুন্নী ও তার দুই সন্তানের জীবনে। ২০১২ সালে স্ট্রোকে মারা যান মুন্নীর স্বামী। মুন্নী বলেন, ‘ সে সময় দোকান চালাতে গিয়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছি। এমনকি দোকান হারানোর পর ভ্যানে করে বাসা থেকে মাল টেনে এনে রাস্তার মধ্যে দোকানদারি করেছি। পরবর্তী সময়ে আমি বিকাশের একজন এজেন্ট হিসেবে কাজ শুরু করি। তাদের কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিই। এর পর থেকে আমার দিন বদলাতে থাকে। টাকা লেনদেনের যেকোনো প্রয়োজনে কিংবা যেকোনো জরুরি মুহূর্তে বিকাশ এজেন্ট হিসেবে মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারছি। বিকাশ দিয়ে লেনদেন অনেক সহজ, নিরাপদ আর ঝামেলাহীন। ব্যাংকে যেতে হয় না, লাইনে দাঁড়াতে হয় না, দিনে-রাতে সবসময় লেনদেন করা যায়। মানুষ একদিকে টাকা দিচ্ছে আর বিকাশের মাধ্যমে তা সঙ্গে সঙ্গে চলে যাচ্ছে প্রাপকের কাছে। আমাদের কাছে এসে প্রয়োজনমতো ক্যাশ আউট করছে। বাড়ির পাশেই এ সেবা দিচ্ছি বলে সাধারণ মানুষের এখন অনেক সুবিধা।’
সিএনএনকে মুন্নী আরো বলেন, ‘মানুষের লেনদেনে কাজে আসি বলে সবাই আমাকে ‘‘বিকাশ দিদি’’ বলে ডাকে। আমার দোকানে কেউ এলেই দ্রুত সেবাটা দেয়ার চেষ্টা করি। মাথায় রাখি লেনদেনটা নিশ্চয়ই কোনো জরুরি কাজে লাগবে।’