বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে ওরিয়ন ইনফিউশন

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
গেলো সপ্তাহ কিছুটা ঊর্ধ্বমুখীতার মধ্যদিয়ে পার করেছে দেশের শেয়ারবাজার। এ ঊর্ধ্বমুখী বাজারে সপ্তাহজুড়েই দাম বাড়ার ক্ষেত্রে দাপট দেখিয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন। এ কোম্পানিটির শেয়ার এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীদের পছন্দের শীর্ষে থাকায় সপ্তাহজুড়েই দাম বেড়েছে। ফলে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ স্থানটি দখল করেছে কোম্পানিটি।
গেলো সপ্তাহজুড়ে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার দাম বেড়েছে ৫০ দশমিক ৮৯ শতাংশ। টাকার অঙ্কে বেড়েছে ৭৪ টাকা ২০ পয়সা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ২২০ টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ১৪৫ টাকা ৮০ পয়সা।
কোম্পানিটির শেয়ারের এ দাম বাড়ানোকে অস্বাভাবিক বলছে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসই। এ জন্য বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে প্রতিষ্ঠানটি বার্তাও প্রকাশ করেছে। কিন্তু তারপরও কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ার প্রবণতা থামেনি।
গত ৪ আগস্ট ডিএসই থেকে বিনিয়োগকারীদের জানানো হয়, কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে নোটিশ পাঠানো হয়। তার উত্তরে কোম্পানিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে— সম্প্রতি কোম্পানিটির শেয়ারের যে অস্বাভাবিক দাম বেড়েছে এবং লেনদেন বেড়েছে তার পেছনে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদশীল তথ্য নেই।
ডিএসই থেকে যখন বিনিয়োগকারীদের সতর্ক করে বার্তা প্রকাশ করা হয়, সেসময় কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ১২৫ টাকা ৫০ পয়সা। অর্থাৎ ডিএসই থেকে সতর্ক বার্তা প্রকাশের পর কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম বেড়েছে ৯৪ টাকা ৫০ পয়সা।
শেয়ারের এমন দাম বাড়া কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরেও কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয়। তার আগে ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত বছরে বিনিয়োগকারীদের ১৪ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দেয় কোম্পানিটি।
সর্বশেষ প্রকাশিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, কোম্পানিটি ২০২১ সালের জুলাই থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত নয় মাসের ব্যবসায় শেয়ারপ্রতি ১ টাকা ১২ পয়সা মুনাফা করেছে। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি মুনাফা হয় ২৬ পয়সা।
এদিকে দাম বাড়ায় বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ তাদের কাছে থাকা কোম্পানিটির শেয়ার বিক্রি করে দিয়েছেন। ফলে সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১১১ কোটি ৪৮ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। আর প্রতি কার্যদিবসে গড়ে লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ২৯ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
২০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২ কোটি ৩ লাখ ৫৯ হাজার ৭৬০টি। এর মধ্যে ৪০ দশমিক ৬১ শতাংশ শেয়ার আছে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের হাতে। বাকি শেয়ারের মধ্যে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে আছে ৩৯ দশমিক ৮২ শতাংশ। আর ১৯ দশমিক ২৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী এবং দশমিক ২৯ শতাংশ আছে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে।
গেলো সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেট্রো স্পিনিংয়ের শেয়ার দাম বেড়েছে ৫০ দশমিক ৩৯ শতাংশ। ৩১ দশমিক ৫৯ শতাংশ দাম বাড়ার মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।
এছাড়া দাম বাড়ার শীর্ষ দশে স্থান করে নেয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ইউনিয়ন ক্যাপিটালের ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ, বাংলাদেশ মনোস্পুল পেপার প্রসেসিং ২৫ দশমিক ৪৯ শতাংশ, রতনপুর স্টিল রি-রোলিং মিলসের ২৪ দশমিক ১২ শতাংশ, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের ২৩ দশমিক ৬৫ শতাংশ, আইপিডিসি ফাইন্যান্সের ২৩ দশমিক ১০ শতাংশ, অ্যাপেক্স ফুডসের ২২ দশমিক ৩৩ শতাংশ এবং ফারইস্ট নিটিংয়ের ২২ দশমিক ২২ শতাংশ দাম বেড়েছে।