নারীর অদম্য যাত্রা ও ক্ষমতায়ন উদযাপন: ৯ নারীকে সম্মাননা প্রদান করলো দারাজ

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
শীর্ষস্থানীয় ই-কমার্স প্ল্যাটফর্ম দারাজ বাংলাদেশ সম্প্রতি নারীদের জনপ্রিয় কমিউনিটি ‘নিবেদিতা’ -এর সাথে অংশীদারিত্বে ‘দারাজ প্রেজেন্টস নিবেদিতা ইকুয়ালাইজার ২০২২’ আয়োজন করেছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সম্প্রতি গত শুক্রবার (১১ মার্চ) আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে নারী বা পুরুষ পরিচয়ের ঊর্ধ্বে গিয়ে সকলের জন্য ব্যক্তি হিসেবে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তার ওপরে আলোকপাত করা হয়।
ডিজিটাল পরিসরে নারী-পুরুষ ভেদাভেদ ও বৈষম্যের শৃঙ্খল ভাঙতে ভূমিকা রাখার জন্য আটটি ক্যাটাগরিতে ৯ জন নারীদেরকে সম্মাননা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি ডিভিশনের বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) বিকর্ণ কুমার ঘোষ ও সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান।
অনুষ্ঠানে মূলবক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এসবিকে টেক ভেঞ্চারস অ্যান্ড এসবিকে ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও ম্যানেজিং পার্টনার সোনিয়া বশির কবির। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন এবং নিবেদিতা ওমেনস কমিউনিটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিকা ইসলামসহ অন্যান্য বিশিষ্ট অতিথিরা।
সমাজের সকল নারীদের সহায়তা করার লক্ষ্যে নিবেদিতা কমিউনিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। নারীদের উন্নত জীবনধারা, প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান ও দক্ষ করে গড়ে তোলার মাধ্যমে তাদের ক্ষমতায়ন করাই নিবেদিতার লক্ষ্য; যাতে করে নারীরা নিজেদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সমাজে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন।
এই লক্ষ্য অর্জন করার অংশ হিসেবে, সমাজে কিছু উদ্যমী নারীদের সম্মাননা দিতেই নিবেদিতা ও দারাজ এ উদ্যোগ গ্রহণ করে।
অনুষ্ঠানে সম্মাননা প্রাপ্ত নারীরা হলেন: শাহনাজ শিমুল রহমান (বিউটি ব্লগার); ডা. কাশফিয়া আমিনা এবং হাবিবা আক্তার সুরভী (ফ্যাশন ব্লগার); নুসরাত ইসলাম (ফুড ব্লগার); শামস আফরোজ চৌধুরী (কন্টেন্ট ক্রিয়েটর: এন্টারটেইনমেন্ট); সামিনা সারা (মেকআপ আর্টিস্ট); কামরুন্নেসা মীরা (সোশ্যাল কজ/ওয়েল-বিয়িং); কামরুন এন. কলি (মেন্টাল হেলথ/ফিটনেস) এবং ইশরাত আমিন (ভ্রমণ ও ফটোগ্রাফি)।
অনুষ্ঠান চলাকালীন ‘ইমপ্যাক্ট অব বায়াসনেস অন মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স’ নিয়ে একটি প্যানেল আলোচনার আয়োজন করা হয়, যেখানে আলোচকরা মানসিক স্বাস্থ্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং ইতিবাচক মনোভঙ্গির মাধ্যমে ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে নারীরা কীভাবে এ সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারে সে সব বিষয় তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে ছিলো ’দারাজ পাওয়ার-কাপল ডিসকাশন’ সেশন, যেখানে সফল যুগল (জারা মাহবুব ও নাভিদ মাহবুব; সাদিয়া হক ও কাশেফ রহমান) তাদের সাফল্যের গল্পগুলো তুলে ধরেন; একইভাবে জীবনসঙ্গী হিসেবে একে অপরকে সাহায্য করা কতটুকু জরুরি সেসব বিষয়ও আলোচনায় উঠে আসে।
পুরস্কার বিজয়ী ছাড়াও, আরো ছয়জন নারী তাহসিন বাহার সূচনা, আইরিন খান, তাহেরা নাজরীন, নবনীতা চৌধুরী, নুজহাত চৌধুরী ও মাহফুজা লিজাকে নিজ নিজ খাতে অবদান রাখার জন্য বিশেষ ভাবে সম্মানিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে দারাজের প্রধান বিপণন কর্মকর্তা (সিএমও) মো তাজদীন হাসান বলেন, “তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক বর্তমান সমাজে নারীদের অংশগ্রহণ বিশ্বজুড়ে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে।
সম্মাননাপ্রাপ্ত এই ৯ জন নারীর মতো আমাদের এমন আরো অনেককে প্রয়োজন, যারা তাদের ভেতরের সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর মাধ্যমে অন্যদের অনুপ্রাণিত করতে পারবেন। কঠোর পরিশ্রমী এবং উদ্যমী এই নারীদেরকে আজ সম্মাননা জানাতে পেরে দারাজ গর্বিত বোধ করছে”।
“বাংলাদেশে উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গে এই মুহূর্তে নারীদের এগিয়ে থাকা জরুরি। আমি দারাজকে ধন্যবাদ জানাই তাদের ভিন্নধর্মী চিন্তার প্রতিফলন ঘটিয়ে এমন আকর্ষণীয় একটি ইভেন্টের আয়োজন করা এবং এতে আমাদের সাথে অংশীদারিত্ব করার জন্য যেখানে মহিলারা তাদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে ওঠার স্বপ্নকে অনুসরণ করতে আরো সাহসী হয়ে উঠতে শিখবেন”, বলেন নিবেদিতা ওমেনস কমিউনিটি’র প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আনিকা ইসলাম।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য আকর্ষণের মধ্যে ছিল চমৎকার আদিবাসী নৃত্যের পরিবেশনা এবং জনপ্রিয় তারকা বিদ্যা সিনহা মিমের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা । আমন্ত্রিতদের মধ্যে অনেকেই অনুষ্ঠানের বিশেষ ফটো বুথে ছবি তুলে তাদের মুহূর্ত স্মরণীয় করে রাখেন।
ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রির প্রথম সারির প্রতিষ্ঠান হিসেবে দারাজ এই উদ্যমী নারীদের অবদানকে স্বীকৃতি দিয়ে এবং তাদেরকে সম্মাননা জানানোর মধ্য দিয়ে এমন সম্ভাবনাময় আরো অসংখ্য নারীকে অনুপ্রাণিত করতে পারবে বলে মনে করে।
দারাজ:
দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষস্থানীয় অনলাইন মার্কেটপ্লেস দারাজ, অসংখ্য বিক্রেতাকে লক্ষাধিক ক্রেতাদের সাথে যুক্ত করেছে। একশো’রও বেশি ক্যাটাগরির প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখের বেশি পণ্য কেনাকাটায় গ্রাহকদের তাৎক্ষণিক এবং সহজ সুবিধাদানের সাথে সাথে প্রতি মাসে ২০ লাখেরও বেশি পণ্য বিশ্বের সকল প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে দারাজ।
দারাজ তার গ্রাহকদের জন্য একইসাথে একটি বাজার, মার্কেটপ্লেস এবং কমিউনিটি। দারাজ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো, কেননা প্রতিষ্ঠানটি প্রতিমাসে ই-কমার্স সম্পর্কে ৫ হাজারেরও বেশি নতুন বিক্রেতাকে সচেতন করে তোলে। দারাজ বিভিন্ন লজিস্টিক চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে, বিশেষত তাদের ই-কমার্স অপারেশনগুলোকে মাথায় রেখে ‘দারাজ এক্সপ্রেস’ (ডেক্স নামে পরিচিত) নামক নিজেদের লজিস্টিক কোম্পানি গঠন করেছে।
দারাজ বিদ্যমান এবং নতুন লজিস্টিক সরবরাহকারীদের ডিজিটালকরণে সহায়তা করছে। ২০১৮ সালে আলীবাবা গ্রুপ দারাজকে অধিগ্রহণ করে এবং ‘ডিজিটাল অর্থনীতির যুগে যেকোন স্থানে ব্যবসা সহজীকরণ’- এই লক্ষ্যের অংশ হিসেবে দারাজ গর্বের সাথে কাজ করে চলেছে। আলীবাবার অংশ হিসেবে, দারাজ বাজারে তার প্রতিষ্ঠানগত উন্নয়নে আলীবাবার নেতৃত্ব এবং প্রযুক্তি, অনলাইন বাণিজ্য, মোবাইল পেমেন্ট এবং লজিস্টিকের অভিজ্ঞতাকে ব্যবহার করছে।