দেশের অক্সিজেন চাহিদা পূরণে এগিয়ে এসেছে আবুল খায়ের গ্রুপ

নভেল করোনাভাইরাসের চিকিত্সায় অতিপ্রয়োজনীয় হয়ে উঠেছে মেডিকেল অক্সিজেন। করোনার এ সময়ে সারা বিশ্বেই অক্সিজেনের চাহিদা বেড়েছে। কয়েক দিন ধরেই দেশী-বিদেশী গণমাধ্যমে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিত্সায় অক্সিজেনস্বল্পতার বিষয়টি উঠে এসেছে। অক্সিজেনের অভাবে সেখানে অনেকেই মারা গেছে।
বাংলাদেশেও করোনাভাইরাস পরিস্থিতি এখন অনেকটাই নাজুক। একইসঙ্গে বড় শঙ্কার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে অক্সিজেনের চাহিদা ও সরবরাহের তারতম্য। এ অবস্থায় নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে বিনামূল্যে অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে আবুল খায়ের গ্রুপ। নিজেদের অক্সিজেন প্লান্ট থেকে গ্রুপটি করোনা রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করবে।
ইস্পাত তৈরির ক্ষেত্রে অক্সিজেন, নাইট্রোজেন ও কার্বনের প্রয়োজন হয়। আবুল খায়ের গ্রুপ চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের শীতলপুরে অবস্থিত তাদের ইস্পাত কারখানার প্রয়োজন মেটাতে ২০১২ সালে বহুজাতিক কোম্পানি লিন্ডে বাংলাদেশের সহায়তায় অক্সিজেন্ট প্লাট নির্মাণের কাজ শুরু করে। নির্মাণ শেষে ২০১৫ সালে প্লাটটিতে উত্পাদন শুরু হয়। প্লান্টটির দৈনিক ২৬০ টন অক্সিজেন উত্পাদনের সক্ষমতা রয়েছে।
জানা গেছে, শিল্পে ব্যবহূত অক্সিজেন আর চিকিত্সাকাজে ব্যবহূত অক্সিজেনের প্রসেসিং ভিন্ন। এজন্য মেডিকেল অক্সিজেন উত্পাদনের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জামাদি এনেছে আবুল খায়ের গ্রুপ। পাশাপাশি বিদেশ থেকে ৩০০টি অক্সিজেন সিলিন্ডারও আমদানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। করোনা সংকট-পরবর্তী সময়ে এ অক্সিজেন প্লান্ট নিয়ে বাণিজ্যিক কোনো পরিকল্পনা নেই তাদের। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সীমান্ত বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে অক্সিজেন সরবরাহ নিয়ে কিছুটা সমস্যা তৈরি হয়েছে। এ অবস্থায় আবুল খায়ের গ্রুপের পক্ষ থেকে মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহের সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আবুল খায়ের গ্রুপ এরই মধ্যে তাদের প্লান্ট থেকে মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহ শুরু করেছে। জানতে চাইলে আবুল খায়েরের অক্সিজেন প্লান্টের সিনিয়র ম্যানেজার ও ইনচার্জ মো. ইমরুল কাদের ভূঁইয়া বলেন, নিজেদের শিল্প-কারখানার প্রয়োজনে প্লান্টটি তৈরি করা হলেও করোনা সংকটকালে আমরা বিনামূল্যে মেডিকেল অক্সিজেন সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছি। গত মঙ্গলবার আমরা ফৌজদারহাটের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজেসে (বিআইটিআইডি) ১০টি সিলিন্ডার প্রদানের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক অক্সিজেন সেবা প্রদানের ঘোষণা দিয়ে এসেছি। পর্যায়ক্রমে আমরা সব করোনা হাসপাতালে অক্সিজেন পৌঁছে দেব। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আমরা দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালসহ সব করোনা রোগীকে বিনামূল্যে অক্সিজেন সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তাব দিয়েছি। করোনার সংকট যতদিন থাকবে, ততদিন পর্যন্ত যে কেউ আমাদের কাছ থেকে বিনামূল্যে অক্সিজেন সিলিন্ডার রিফিল করে নিতে পারবে।