শিরোনাম

South east bank ad

রজনীকান্ত সেনের জন্মবার্ষিকী

 প্রকাশ: ২৬ জুলাই ২০১৭, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   জন্মদিন

রজনীকান্ত সেনের জন্মবার্ষিকী
কবি, গীতিকার ও সুরকার রজনীকান্ত সেন ১৮৬৫ সালের ২৬ জুলাই সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার সেন ভাঙাবাড়ী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার অনেক গান এখনও শ্রোতাদের মুখে মুখে ফেরে। স্রষ্টার আরাধনায় ভক্তিমূলক ও দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ তার গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য। গুরুপ্রসাদ সেন ও মনোমোহিনী দেবীর তৃতীয় সন্তান রজনীকান্ত। গুরুপ্রসাদ ৪০০ বৈষ্ণব ব্রজবুলী কবিতা সঙ্কলনকে একত্রিত করে ‘পদচিন্তামণিমালা’ নামক কীর্তন গ্রন্থ প্রকাশ করেন। এ ছাড়াও ‘অভয়াবিহার’ গীতিকাব্যের রচয়িতা তিনি। মা মনোমোহিনী দেবী বাংলা সাহিত্যের প্রতি বেশ অনুরক্ত ছিলেন। তিনি এ বিষয়ে কিশোর রজনীকান্তের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করতেন। এ আলোচনা-পর্যালোচনাই তার ভবিষ্যৎ জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলে। রজনীকান্ত ১৮৮৩ সালে কুচবিহার জেনকিন্স স্কুল থেকে ২য় বিভাগে এন্ট্রান্স পাস করেন। ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিমাসে দশ রূপি বৃত্তি পেতেন। ১৮৮৫ সালে রাজশাহী কলেজ থেকে ২য় বিভাগে এফএ পাস করেন। সিটি কলেজ থেকে ১৮৮৯ সালে বিএ পাস করেন। ওই কলেজ থেকে ১৮৯১ সালে বিএল ডিগ্রি অর্জন করেন। শৈশবকাল থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে বাংলা ও সংস্কৃত- দুই ভাষাতেই কবিতা লিখতেন। কবিতাগুলোকে গান আকারেও রূপ দিতে শুরু করেন। ১৫ বছর বয়সে কালীসংগীত রচনা করেন। পরে আইন পেশার পাশাপাশি সাহিত্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনে বিশেষত সংগীত, সাহিত্য, নাটকে অভিনয় ইত্যাদিতে গভীরভাবে যুক্ত থাকেন। তার কবিতা স্থানীয় উৎস, আশালতা প্রভৃতি সংবাদ-সাময়িকীতে প্রকাশিত হতো। রজনীকান্ত শৈশবকাল থেকে সংগীতপ্রিয় ছিলেন। কোথাও কোনো সুমধুর গান শুনলেই সুর, তালসহ তৎক্ষণাৎ তা কণ্ঠস্থ করতে পারতেন। তার বাবাও একজন সংগীতজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ফলে শৈশবে সংগীত অনুশীলনের সুযোগ ঘটে। কলেজ জীবনে অভিষেক ও বিদায় অনুষ্ঠানে তার গান গাওয়া হতো। গান লেখায় তার সময় বেশি লাগত না। এছাড়া অল্প সময়ে গানগুলো জনপ্রিয় হয়ে উঠে। স্বদেশি আন্দোলন ও বঙভঙ বিরোধিতায় তার গান ছিল প্রেরণার উৎস। বিশেষ করে ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই’ গানটি স্বদেশি আন্দোলনে ব্যাপক জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার গানগুলোকে বিষয়বস্তু অনুযায়ী চারটি ভাগে বিভক্ত- দেশাত্মবোধক, ভক্তিমূলক, প্রীতিমূলক ও হাস্যরসের গান। তারমধ্যে দেশাত্মবোধক গানের আবেদনই বিশাল ও ব্যাপক। এখনও বাংলাদেশ ও ভারতের অনেক শিল্পী তার গানগুলো গেয়ে ধাকেন। এ ছাড়া আধ্যাত্মিক গানের জন্য তিনি চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। তার গানগুলো হিন্দুস্তানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ঘারানার। এতে কীর্তন, বাউল ও টপ্পার যথাযথ সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন। জীবদ্দশায় তার ‍তিনটি বই প্রকাশ হয়- বাণী (১৯০২), কল্যাণী (১৯০৫) ও অমৃত (১৯১০)। মৃত্যুর পর প্রকাশিত হয়- অভয়া (১৯১০), আনন্দময়ী (১৯১০), বিশ্রাম (১৯১০), সদ্ভাবকুসুম (১৯১৩) ও শেষদান (১৯১৬)। এর মধ্যে বাণী ও কল্যাণী গানের সঙ্কলন। ১৮৮৩ সালে হিরন্ময়ী দেবীকে বিয়ে করেন। তাদের চার ছেলে- শচীন্দ্র, জ্ঞানেন্দ্র, ভুপেন্দ্র ও ক্ষীতেন্দ্র এবং দুই মেয়ে- শতদলবাসিনী ও শান্তিবালা। তিনি ১৯১০ সালে ১৩ সেপ্টেম্বর মারা যান।  
BBS cable ad

জন্মদিন এর আরও খবর: