পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকারের জন্মদিন আজ
রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার, বিপিএম (বার) পিপিএম এর জন্মদিন আজ।
বিপ্লব কুমার সরকার, তিনি বাংলাদেশ পুলিশের রংপুর জেলার পুলিশ সুপার, তার এসপি পরিচয়কে ছাপিয়ে, সব থেকে বড় পরিচয়, তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক ছাত্রনেতা, তিনি জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। দলের দুঃসময়ে, সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, লড়াই সংগ্রামে তিনি ছিলেন মিছিলের অগ্রভাগে।
বিপ্লব কুমার এর জন্ম কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার খরমপট্টিতে। তিনি কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এস এস সি ও গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে কৃতিত্বের সহিত এইচএসি সি পাশ করেন। ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার ছিল অন অসীম দুর্বলতা, তাই কলেজ জীবনে বঙ্গবন্ধুকে ভালোবেসে ছাত্ররাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ছোটবেলা থেকেই তিনি ছিলেন মেধাবী, স্কুল কলেজ জীবনের গণ্ডি পেরিয়ে, প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত, রাজনীতির প্রাণকেন্দ্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি হোন।তার রাজনীতির জন্য আবার প্রাণ ফিরে পায়, এরপর রাজপথে সামনে থেকে, লড়াই সংগ্রাম করে ১৯৯৪ সালে জগন্নাথ হল ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। দলের দুঃসময়ে, আওয়ামীলীগের জন্য নিবেদিত প্রাণ এই অকুতোভয় সৈনিক জেলও খেটেছেন বেশ কয়েকবার।
২১ তম বিসিএস এর মাধ্যমে পুলিশ ক্যাডারে চাকরি জীবনে প্রবেশ করেন , তিনি প্রথম যোগদান করেন মোহাম্মদপুর জোনের এএসপি হিসেবে, এরপর তিনি তেজগাঁও জোনের ডিসি হন। বিপ্লব কুমার সরকার ২০১৩ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) এর তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হিসেবে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অবদান রেখে রেকর্ড সংখ্যক ২৪ বার শ্রেষ্ঠ উপ-কমিশনার (ডিসি) হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ ও অত্যন্ত সফলতার পরিচয় দিয়ে তেজগাঁও বিভাগ পুলিশকে পরিচালনায় উপ-কমিশনারের (ডিসি) দায়িত্ব পালন করে প্রায় নিয়মিত শ্রেষ্ঠ ডিসির পুরস্কার জিতেছেন বিপ্লব কুমার সরকার। যা একটি বিরল ঘটনা।রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি স্বরূপ তিনি দুই বার পুলিশের সর্বোচ্চ পদক বিপিএম ও একবার পিপিএম পেয়েছেন। এর মধ্যে তিনি ২০১৪ সালে পিপিএম, ২০১৬ সালে বিপিএম এবং ২০১৮ সালে তিনি আবারো বিপিএম পদক পেয়েছেন।ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) আটটি বিভাগে বিভক্ত। এরমধ্যে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ তেজগাঁও। ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার গত ২০১৩ সালের ৭ এপ্রিল থেকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ অপরাধ নিয়ন্ত্রণে অবদান রেখেছেন।পেশাগত মর্যাদার কারণে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কর্মকর্তাদের মধ্যে তাকে বলা হয় সেরাদের সেরা।
তিনি শুধু পুলিশের গণ্ডির মধ্যে, নিজেকে আটকে রাখেন নি, সামাজিক কাজের সাথে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন।
নিজের পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি ‘বঙ্গবন্ধু পাগল’ অসাধারণ এবং বিশেষ বৈশিষ্ট্যের অধিকারী মানুষটি নিয়েছিলেন বিশেষ এক উদ্যোগ। দেশ ও দেশের মানুষের জন্য
বঙ্গবন্ধুর ভাবনা-দর্শন এবং ওই সময়ে বঙ্গবন্ধুর কারা জীবনের দিনলিপি নিয়ে বাংলা একাডেমি’র প্রকাশিত ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটিতে বিশেষ নজর দিয়েছিলেন এ পুলিশ কর্মকর্তা।
তাঁর নিজের ভাবনা আর স্বপ্ন থেকেই ‘কারাগারের রোজনামচা’ বইটি নিয়ে অনন্য এক উদ্যোগ নিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের এ উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি)।
বঙ্গবন্ধু রচিত এ বইটির ওপর কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন তিনি।
সুবিধাবঞ্চিত অসহায় শিশুদের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য অন্যতম একজন মানুষ উপ-কমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার। শতাধিক শিশুদের নিয়ে ইফতার ও বস্ত্র বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন তিনি।
বহুল আলোচিত শিশু হাসপাতালে ওয়াশরুমে পাওয়া শিশু ‘গহীনের ‘ দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিপ্লব কুমার সরকার, পরে তিনি তাকে ছোটমনি নিবাসের তত্তাবধায়কের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন।
ঐতিহাসিক মুজিবনগর দিবস উপলক্ষে, কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিলেন তিনি।
টাঙ্গাইল থেকে আসা ১০০ ছোট্ট শিশুকে নিয়ে সত্যিকার অর্থে ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন, ডিসি বিপ্লব কুমার সরকার। সুবিধাবঞ্চিত এই শিশুদের নিয়ে ঘুরে ঘুরে দেখিয়েছিলেন ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জাদুঘর। জাতির এই সূর্যসন্তান সম্পর্কে জানিয়েছিলেন ওদের। এমন দিন ওদের জীবনে আর কখনও আসবেনা। হয়ত ছোট্ট এই শিশুদের স্মৃতিতে থেকে যাবে এমন সুন্দর দিন।
বাইক চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করা, শাহাজান সরকারের একমাত্র বাইক টি ডাকাতি হয়ে গেলে,বিপ্লব কুমার সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে, বাইকটি কে উদ্ধার করা হয়েছিল। এ নিয়ে শাহজাহান সরকার একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন।
তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপে শাহনাজের চুরি হয়ে যাওয়া বাইকটি মাত্র ১২ ঘন্টার মধ্যে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছিল শেরে বংলানগর থানা পুলিশ।
মা বাবা ভাই বোন আশা ছেড়ে দিয়েছিল, কিন্তু আশা ছাড়েননি বিপ্লব কুমার সরকার, দুই বছর পর হারিয়ে যাওয়া শিশু সজিব কে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন মা বাবার কোলে।
১৩ জুন ২০১৯ রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের পুলিশ-১ অধিশাখার উপসচিব মোহাম্মদ হোসেন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে রংপুরের এসপি হিসেবে দায়িত্ব পান তিনি । ২৪ বার ঢাকা মেট্রোপলিটনের শ্রেষ্ঠ ডিসি উপাধি সফলতার পালকে লাগিয়ে রংপুরের পথে পাড়ি দেন তিনি।
দিন নেই, রাত নেই। সারাক্ষণই ছুটে বেড়াচ্ছেন রংপুর জেলার আনাচে কানাচে। কার কী সমস্যা, খুঁজে বের করে তারপর নিজের মতো করে দেন সমাধান। আর এজন্য ‘মানবিক’ পুলিশ সুপার হিসেবে রংপুর জেলা পুলিশসহ সবার কাছে পেয়েছেন গ্রহণযোগ্যতা। মানুষের জন্য অকাতরে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি।
করোনায় সারাদেশ যখন কার্যত লকডাউন, তখন বিপ্লব কুমার সরকার এর নেতৃত্বে রংপুর জেলা পুলিশের দায়িত্ব যেনো বেড়ে যায়। করোনায় ঝুঁকি আছে জেনেও থেমে থাকেননি রংপুর জেলা পুলিশের সদস্যরা। মানুষ যখন খাবারের জন্য রাস্তায় বেরিয়ে আসছে, তখন তাদের পাশে দাঁড়াচ্ছেন। শুধু তা-ই নয়, রংপুর জেলায় করোনা আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানোর ব্যবস্থা, চিকিৎসা নিশ্চিত করা, লকডাউনে থাকা বাড়িতে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী পৌঁছে দেওয়াসহ নানা মানবিক কাজে সবার আগে পাওয়া যায় রংপুর জেলা পুলিশকে। পুলিশের পোশাকের বাইরে তিনি যেনো সবার কাছে হয়ে উঠেছেন পরম প্রিয় একজন। করোনা ভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী মানুষকে সামাজিক দুরত্বে বজায় রাখতে কাজ করছে পুলিশ।পাশাপাশি স্বাভাবিক কাজ কর্ম বন্ধ থাকায় দিন মজুর সহ নিম্ন আয়ের মানুষ কষ্টে দিনাতিপাত করছে। নিম্ন আয়ের এরকম মানুষদের খাদ্যের কষ্ট লাগব করার উদ্দেশ্যে অসহায় ও দুস্থ মানুষদের মাঝে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন রংপুর জেলা পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার সরকার, বিপিএম (বার) পিপিএম।
পুলিশ সুপার বিপ্লব সরকার বলেন, আমরা বড় বড় দুর্যোগ দেখেছি। কিন্তু এমন মহামারি দেখেনি। সারা বিশ্বকে থমকে দিয়েছে করোনাভাইরাস। থানা সহ বিভিন্ন ইউনিটের পুলিশ অফিসার ও কনস্টেবলরা আমাদের সাথে দিনরাত সমানভাবে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। তাদের অনেকেই পরিবার নিয়ে থাকেন। তাদের বলে দেওয়া হয়েছে ভাল করে পোষাক খুলে জীবনানাশক ছিটিয়ে নিজেকে জীবানুমুক্ত মুক্ত হয়ে বাড়িতে যাবেন। দুরত্ব বজায় রাখবেন। কোন সমস্যা দেখা দিলে আমাকে জানাবেন।
বিপ্লব সরকার আরো বলেন, বৈশ্বিক এ মহামারী একা কখনোই মোকাবেলা করা সম্ভব না। দেশের মানুষকে সচেতন আর সহযোগিতার মধ্য দিয়েই একদিন করোনামুক্ত হবে বাংলাদেশ।
বিডি ফিনান্সিয়ালনিউজ২৪.কম এর পক্ষ থেকে বিপ্লব কুমার সরকারকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা।