শিরোনাম

South east bank ad

ইসলামী ব্যাংকের লোপাটকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি

 প্রকাশ: ২৫ অগাস্ট ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

ইসলামী ব্যাংকের লোপাটকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার দাবি

দেশের ব্যবসায়ীবৃন্দ ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি’র নতুন বোর্ড পুনর্গঠন করে আগের পরিচালকদের নিয়ে বোর্ড গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন। তারা সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে ইসলামী ব্যাংকের পর্যদ দখল এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাটের তীব্র নিন্দা জানান। ব্যবসায়ীবৃন্দ ইসলামী ব্যাংক থেকে এস আলম গ্রুপের লুট করে নেয়া অর্থ ফেরত আনা এবং দোষীদেরকে বিচারের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছেন।

শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে স্থানীয় এক হোটেলে অনুষ্ঠিত দেশের শরীয়াহভিত্তিক ইসলামী ব্যাংকগুলোর এক গ্রাহক সমাবেশে ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এসব বক্তব্য তুলে ধরেন। অর্থনীতিবিদ ও শিক্ষাবিদ অধ্যাপক আবু আহমেদ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে অংশ নেন সরকারের সাবেক সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এর প্রাক্তন চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ। এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক এবং দেশের অটোমোবাইল খাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আব্দুল হক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠানের অন্যতম আহ্বায়ক এবং অটোমোবাইল খাতের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম আলম অনুষ্ঠানে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যে বিজয় অর্জিত হয়েছে, সেই স্বাধীন পরিবেশে এখন ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকদেরকে এই ব্যাংকের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সোচ্চার হতে হবে। ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা এবং কার্যক্রমে ইসলামী মনোভাবাপন্ন ব্যক্তিদেরকে যুক্ত করতে হবে।  

তিনি আরও বলেন, ইসলামী ব্যাংকে ইসলাম থাকতে হবে। তাহলেই ইসলামী ব্যাংক ভালো চলবে। আর এ ব্যাংকটি ভালো চললে ইসলামী ধারার অন্যান্য ব্যাংকগুলোও ভালো চলবে। ইসলামী ব্যাংক যারা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তারা লাভের আশায় করেননি। এজন্য ব্যাংকটির সম্পদ বেড়ে গিয়েছিলো। আর এই সম্পদ বেড়ে যাওয়াই ব্যাংকটির জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। এস আলম ইসলামি ব্যাংক থেকে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি লুট করেছে। আর আমরা সৎভাবে যারা ব্যবসা করেছি, তারা এখন এলসি খুলতে পারছি না। প্রয়োজন অনুযায়ী ডলার পাচ্ছি না। এতে ব্যবসা ব্যাপকভাবে সংকটের মুখে পড়েছে। ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া ব্যবসায়ীদের ঋণ ১০ বছরের জন্য পুনঃতফসিল করার আহ্বান জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ বলেন, ইসলামী ব্যাংকে জবরদস্তিমূলক দখল এবং বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাটের মাধ্যমে দেশের এসএমই খাত তথা দেশের অর্থনীতি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রেমিটেন্স প্রাপ্তির হারও মারাত্মকভাবে কমে গেছে। তিনি বলেন যে, গ্রাহকরাই ব্যাংকের বড় শক্তি; তাদের দাবি অনুযায়ী এ ব্যাংকের অর্থ লোপাটকারী এস আলম গ্রুপকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

সভায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গ্রাহকবৃন্দ অংশ নেন। গ্রাহকরা বলেন যে, আমদানির ক্ষেত্রে এলসি খোলার ব্যাপারে ইসলামী ব্যাংক অগ্রাধিকার পেত, অথচ এখন ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে এলসি খুললে সেটি গ্রহণ করা হচ্ছে না। গ্রাহকবৃন্দ বলেন যে, দেশের প্রায় ১০ কোটি লোক প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ইসলামী ব্যাংকের সাথে জড়িত। মধ্যপ্রাচ্য থেকে প্রায় ৮০ লক্ষ প্রবাসী ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে রেমিটেন্স পাঠায়। কিন্তু বিগত বছরগুলোতে ইসলামী ব্যাংকে জবরদখলের কারণে রেমিটেন্স পাঠানোর হার লক্ষ্যনীয় হারে কমে এসেছে।

বক্তাবৃন্দ বিগত বছরগুলোতে যেসব ব্যবসায়ী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাদের ব্যাংক ঋণ ১০ বছরের জন্য রিশিডিউল করার দাবি জানান। বক্তাগণ ইসলামী ব্যাংকের পর্ষদে ব্যাংকের গ্রাহকদের মধ্য থেকে পরিচালক রাখার প্রস্তাব দেন। এছাড়াও তারা এস আলমের নেতৃত্বে ব্যাংকের দক্ষ ও যোগ্য যেসকল কর্মকর্তাকে চাকুরিচ্যুত করা হয়েছে তাদেরকে চাকুরিতে পুনর্বহাল করা এবং অবৈধ নিয়োগপ্রাপ্ত প্রায় ১০-১৫ হাজার জনবলের নিয়োগ বাতিল করার দাবি জানান।

সভায় উপস্থিত ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ ইসলামী ব্যাংকের হারানো গৌরব এবং জবাবদিহিতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে প্রস্তাবিত গ্রাহক ফোরামের পূর্ণাঙ্গ কমিটি অবিলম্বে গঠনের বিষয়ে মত দেন।

এফবিসিসিআই এর সাবেক পরিচালক জনাব আব্দুল হককে আহ্বায়ক করে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট গ্রাহক ফোরাম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। এই ফোরাম ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের স্বার্থ সংরক্ষণে কাজ করবে এবং ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকদের কল্যাণে সঠিক পথে পরিচালিত হচ্ছে কী না সে বিষয়ে প্রহরীর ভূমিকা পালন করবে।

BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: