South east bank ad

দেশের ব্যাংকিং খাত পরিষ্কারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

 প্রকাশ: ২৩ অগাস্ট ২০২৪, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   ব্যাংক

দেশের ব্যাংকিং খাত পরিষ্কারে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, দেশের ব্যাংকিং খাত পরিষ্কার করা এখন তার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। আর্থিক ব্যবস্থায় পরিকল্পিত ডাকাতি হয়েছে, যা ব্যাংকগুলোর বড় ধরনের ক্ষতি করেছে। সেইসঙ্গে শেয়ারবাজার ও বৃহত্তর অর্থনীতিতে প্রভাব ফেলেছে। গতকাল বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেন তিনি।

আহসান এইচ মনসুর গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর এই প্রথম মিডিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আরও বলেন, আগামী দুয়েক দিনের মধ্যে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সুদের হার সাড়ে ৮ থেকে ৯ শতাংশ বৃদ্ধি করা হবে। আর মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আগামী মাসে সুদহার ১০ শতাংশ কিংবা এর চেয়ে বেশি করা হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বাংলাদেশের জন্য একটি প্রধান উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ছাড়াও রাজনৈতিক অস্থিরতায় রেমিট্যান্স কমে যাওয়া আর তৈরি পোশাকের রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

চলতি মাসের শুরুর দিকে শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট ও জারি করা কারফিউ বিভিন্ন পণ্যের দামের ওপর চাপ ফেলেছে জানিয়ে ব্যাংকিং খাত প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সঙ্গে জড়িত কিছু গোষ্ঠীর ঋণখেলাপির কারণে দেশের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। একইসঙ্গে ব্যাংকগুলো থেকে হঠাৎ মানুষের টাকা তুলে নেওয়ার প্রবণতা বেড়েছে।

ঋণখেলাপিকে তিনি রীতিমতো ডাকাতি বলে অভিহিত করে বলেন, তারা টাকা নিয়ে সিঙ্গাপুর, দুবাই, লন্ডনসহ আরও কিছু জায়গায় পাচার করেছে। তাই আমাদের প্রথম প্রচেষ্টা হবে বিষয়টি নিয়ে কাজ করা। আর পাচার করা অর্থ ফেরত পাওয়ার চেষ্টা করা। তবে আমাদের ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুনর্গঠন করতে হবে। এ কারণে আমরা একটি ব্যাংকিং কমিশন প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছি।

কমিশনের কার্যক্রম সম্পর্কে তিনি ধারণা দিতে গিয়ে বলেন, এ কমিশনের কাজ হবে ব্যাংকগুলোর বড় পরিসরে অডিট করা। আর বোর্ড পরিবর্তন করা। এর পাশাপাশি ব্যবস্থাপনার পরিবর্তন ও তারল্য সহায়তা বা কিছু ছোট ব্যাংকের ক্ষেত্রে একীভূত করার মতো পরামর্শ দেওয়া।

শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক সম্পর্কে তিনি বলেন, এ ব্যাংকগুলো কিছু ইসলামি ব্যাংকে সরকারকে হয়তো ১৫ থেকে ৩০ বিলিয়ন সহায়তা দিতে হবে। কার্যত যার অর্থ দাঁড়াবে ব্যাংকগুলোকে জাতীয়করণ করা। আমরা এটা করতে চাই না। কিন্তু লোকগুলো অনেক টাকা ঋণ নিয়েছে যা তারা ফেরত দিচ্ছে না। আমাদের অন্তত আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে।

আইএমএফের ঋণের কিস্তি প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, বাংলাদেশের জন্য চার দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ অনুমোদনের সময় বাংলাদেশকে তার মুদ্রানীতি কঠোর করতে আর বিনিময় হারকে নমনীয় রাখতে বলেছিল। আমরা আরও বাড়তি ৩ বিলিয়ন ডলারের জন্য সংস্থাটির সঙ্গে আলাপ চালিয়ে যাচ্ছি। এ ছাড়াও বিশ^ব্যাংকের কাছে অতিরিক্ত ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার এবং এডিবি ও জাইকার কাছ থেকে ১ বিলিয়ন ডলার চেয়েছি।

তিনি তার কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা দিতে গিয়ে বলেন, মুদ্রানীতিতে সংস্কারের পাশাপাশি ব্যয়ের লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করবে অন্তর্বর্তী সরকার। ব্যয় আরও ৯ থেকে ১০ শতাংশ কমাতে হবে, যেন বেসরকারি খাতের জন্য আরও বেশি ঋণ পাওয়া যায়।

নির্বাচন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে গভর্নর জানান, তিন বছর বা এর চেয়ে বেশি সময় লাগতে পারে। তবে সরকার সাধারণ নির্বাচনের আগে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাবে।

BBS cable ad

ব্যাংক এর আরও খবর: