স্কুলের সামনে গণপ্রস্রাব তীব্র দুর্গন্ধে বেহাল শিক্ষার্থী-পথচারী
মোঃ জামাল হোসেন, (যশোর):
বন্দরনগরী বেনাপোলে অবস্থিত বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ফুটপথের পাশেই স্কুলের দেয়াল ঘেষে পাবলিকের প্রস্রাবের তীব্র দুর্গন্ধে শিক্ষার্থী ও পথচারীর চলাচল ব্যাপকভাবে বিঘ্ন হচ্ছে।
পাশাপাশি বালিকা বিদ্যালয়সহ দুটি স্কুল থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকির আশঙ্কাও রয়েছে।
সচেতনতার অভাবে সড়কের পাশে যত্রতত্র প্রস্রাব করার কারণে ঠেকানো যাচ্ছে না পরিবেশ দূষণ। এ বর্জ্যে উচ্চমাত্রায় অ্যাসিড এবং লবণ থাকায় মাটি, পার্শ্ববর্তী গাছপালাসহ সার্বিকভাবে পরিবেশকে দূষিত করছে।
ব্যস্ত সড়কের বাতাসে বর্জ্যের এ উৎকট গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় মানুষের চলাচলেও বিঘ্ন ঘটছে।
জানা গেছে, এভাবে প্রস্রাব করার ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে। প্রতি মিনিটে গড়ে ঐ স্থানে দুইজন করে ব্যক্তি প্রস্রাব করছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগ ব্যক্তিই কাস্টম গেটের পাশে ট্রাকস্টান্ড নামে পরিচিত স্থানে ট্রাক ভাড়ার জন্য অপেক্ষারত ট্রাক ড্রাইভার।
এর ফলে মানুষের সার্বিক চলাচল ব্যাহত হচ্ছে।
যারা এ ধরনের কাজ করছে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা এই পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে মোটেও সচেতন নন। তাছাড়া পাশে কোন পাবলিক টয়লেট না থাকায় তারা নিরুপায় হয়ে এখানে প্রস্রাব করছেন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দাঁড়ালে দেখা যায়, দুটি সুন্দর মুর্যাল, যার একটা দেখলে মনে পড়ে যায় ১৫ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল শোক দিবসের নির্মম ঘটনা। যেদিন সড়ক দূর্ঘটনায় বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯ জন শিশু নিহত হয়েছিলো। অন্যটি শিক্ষার প্রতীক। এমন সুন্দর একটি স্থানে এমন অব্যবস্থাপনা বেনাপোলের সচেতন মানুষের মনে ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
যেখানে-সেখানে প্রস্রাব করার মাধ্যমে পরিবেশের পাশাপাশি মানুষের মধ্যেও রোগব্যাধির প্রকোপ বাড়ছে। সড়কে যে স্থানে এ ধরনের কাজ হচ্ছে, সেখানে এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা দূষিত হচ্ছে। পাশাপাশি গাছপালাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এবং অনেক গাছ মরে যেতে দেখা যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, যেসব পথচারী ও স্কুলগামী শিক্ষার্থীরা এ ফুটপাত ধরে চলাচল করতো, তারা এখন ফুটপাত ছেড়ে রাস্তার পাশ দিয়ে চলাচল করছে। ফলে সড়ক দুর্ঘটনার ঝুঁকি রয়েছে কোমলমতী শিক্ষার্থীদের।
এ ব্যাপারে বেনাপোল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ ইজ্জত আলী বলেন, আমরা বিদ্যালয়ের মধ্যে থাকি। এটা বিদ্যালয়ের প্রাচীরের অপর পাশে। অনেক বার মৌখিক ভাবে বলা হয়েছে কেউ মানে না। এ ব্যাপারে ম্যানেজিং কমিটির সাথে কয়েকবার আলোচনা হলেও স্থায়ী ভাবে সমস্যাটার সমাধান হয়নি। এ সমস্যাটা সমাধানে স্কুল কমিটি মিটিং করে কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে তিনি জানান। তবে এখানে একটা স্বাস্থ্যকর পাবলিক টয়লেট হলে এ সমস্যাটার একটা স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব।
এ ওয়ার্ডের কাউন্সিলর এবং স্কুল কমিটির সহ-সভাপতি আলহাজ¦ মিজানুর রহমান বলেন, এ সমস্যা রোধে আমরা চেষ্টা করেছি, কিন্তু জনগণকে সচেতন করতে পারিনি। তবে এবার আমরা ঐ স্থানটি লোহার রেলিং দিয়ে ফুলের চারা রোপন করবো।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশেই অবস্থিত মরিয়ম মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইনামুল হক রিপন বলেন, এই পথ দিয়ে আমাদের বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রী যাতায়াত করে কিন্তু সকল সময় মানুষজন এখানে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করে যেটা খুবই দৃষ্টিকটু। আমি চাই এই সমস্যাটা সমাধান হোক এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষসহ পৌর প্রশাসন সমস্যা সমাধানে কার্যকারী ভূমিকা পালন করুক।
এ বিষয়ে পৌর স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর রাশিদা বেগমকে একাধিক বার মোবাইলে কল করা হলেও তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।