ত্রিভুজ প্রেমেরই বলি মিরাজ তিনজন গ্রেফতার
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ায় পৌর পার্কের চাঞ্চল্যকর যুবলীগ নেতা মিরাজ হত্যাকা-ের রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। ত্রিভুজ প্রেমেরই বলি হোন মিরাজ। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) হত্যাকা-ে জড়িত অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করেছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাতে সদর ও সোনাতলা উপজেলা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অভিযানে হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত চাকু ও রক্তমাখা জ্যাকেট উদ্ধার করে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন, মিরাজের কথিত সাবেক প্রেমিকার বর্তমান প্রেমিক ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর। তার সহযোগী সোনাতলা উপজেলার মুন্নু মিয়ার ছেলে তারেক রহমান (১৮) ও বগুড়া শহরের রহমান নগর এলাকার আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে মোহাম্মাদ মিঠুন (২৮)।
জেলার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বুধবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টায় তার নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার হওয়া কথিত প্রেমিক ও মূল অভিযুক্ত ১৬ বছর বয়সী কিশোর হত্যাকা-ে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে।
ভিকটিম মিরাজের সঙ্গে বগুড়া শহরের বাদুরতলা এলাকার এক মেয়ের প্রায় এক বছর ধরে সম্পর্ক চলছিল। ঘটনার কিছুদিন আগে ওই মেয়ের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় (কথিত প্রেমিক) মূল অভিযুক্তের। এরপর তাদের দুজনের সঙ্গে মেয়েটি ম্যাসেঞ্জারে ম্যাসেজ আদান-প্রদানসহ কথাবার্তা চালাতে থাকে।
মেয়েটির ফেসুবক আইডির পাসওয়ার্ড ছিল মিরাজের কাছে এবং তিনি মেয়েটির ফেসবুকে ঢুকে দেখতে পায় মেয়েটি (কথিত প্রেমিক) এর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পরছে। তখন মিরাজ (কথিত প্রেমিক) এর বিষয়ে মেয়েটির কাছে জানতে চাইলে মেয়েটি জানায়, (কথিত প্রেমিক) মেয়েটিকে বিভিন্নভাবে বিরক্ত করে ও প্রেমের জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।
ঘটনাটি জানার পর থেকে মিরাজ এবং (কথিত প্রেমিক) দু-জন দু-জনকে ফেসবুক ও মুঠোফোনে বারবার হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিল। ঘটনাটি মিমাংসার জন্য মিরাজ (কথিত প্রেমিক) অভিযুক্ত কিশোরকে বগুড়া শহর পৌর পার্কে ডাক দেয়। মঙ্গলবার বিকেলে অভিযুক্ত কিশোর তার দুই সহযোগী তারেক ও মিঠুনকে নিয়ে পার্কে আসে।
তবে ঘটনাস্থলে মিমাংসার জন্য প্রেমিকার উপস্থিত থাকার কথা থাকলে সে আসে না। একপর্যায়ে মিরাজ ও তার বন্ধু নাজমুলের সঙ্গে অভিযুক্তদের কথা কাটাকাটি ও ধাকাধাক্কিসহ কিলঘুষি শুরু হয়। ওই সময় কথিত প্রেমিক কিশোরের সহযোগী মিঠুন তার কাছে থাকা বার্মিজ চাকু দিয়ে মিরাজ ও নাজমুলে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায়।
স্থানীয় লোকজন ভিকটিম মিরাজ এবং তার সঙ্গে থাকা নাজমুলকে গুরুত্বর আহত অবস্থায় চিকিৎসার জন্য শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতাল নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা মিরাজকে মৃত ঘোষণা করেন এবং নাজমুলকে চিকিৎসা প্রাথমিক চিকিৎসা দেন।
পুলিশ সুপার সুদীপ জানান, ঘটনায় জড়িত গ্রেফতার হওয়াদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পাশাপাশি কথিত প্রেমিকারও কোন সম্পৃক্ততা আছে কিনা খতিয়ে দেখা হবে। এ ঘটনায় বগুড়া সদর থানায় নিহতের বড় ভাই আতাউর রহমান অজ্ঞাতদের আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।