অটোরিকশা হারিয়ে ইয়াছিনের চারপাশ অন্ধকার
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
পরিবারের হাল ধরতে ১৩ বছরের ইয়াছিন অটোরিকশার প্যাডেলে পা রেখেছে দেড়মাস আগে।
গতকাল রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কৌশলে তার অটোরিকশাটি চুরি করে নিয়ে যায় যাত্রীবেশে অচেনা দুই ব্যক্তি। এতে যেন ইয়াছিনের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। তার কান্নায় চোখের জল এসেছে উপস্থিত অনেকের। ইয়াছিনের চারপাশ যেন এখন অন্ধকার।
বিভিন্ন স্থানে ঘুরে সুযোগ বুঝে চালকের চোখ ফাঁকি দিয়ে মুহূর্তেই রিকশা নিয়ে দুই চোর লাপাত্তা। লক্ষ্মীপুর পৌরসভার দক্ষিণ মজুপুর এলাকার পলোয়ান মসজিদ এলাকা থেকে রিকশাটি চুরি হয়। ইয়াছিনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের চরভূতা গ্রামে।
ইয়াছিন জানায়, রোববার বেলা ১১টার দিকে জেলা শহরে আসার কথা বলে ভবানীগঞ্জের চৌরাস্তা বাজার থেকে তার অটোরিকশায় দুইজন যাত্রী ওঠে। বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে দুপুর দেড়টার দিকে পৌরসভার পলোয়ান মসজিদের পাশে নেমে চা পান করে ওই যাত্রীরা। এ সময় তারা (যাত্রী) তাকে পাশের একটি ভবন দেখিয়ে একটি সাউন্ড বক্স আনার জন্য পাঠায়। এ সুযোগে রিকশাটি নিয়ে তারা পালিয়ে যায়। মুহূর্তেই এমন ঘটনায় ছোট্ট ইয়াছিন হতবিহ্বল হয়ে পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে ইয়াছিন বলে, দেড় মাস ধরে সে রিকশাটি ভাড়ায় চালাচ্ছে। দৈনিক ৩০০ টাকা জমা দিয়েও ২০০-৩০০ টাকা তার থাকতো। ওই টাকায় সংসার চলতো। রিকশার মালিককে এখন কী বোঝাবো?
ইয়াছিনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে সে। কয়েক বছর আগে তার বাবা মো. ইব্রাহিম মিয়া অন্যত্র বিয়ে করে তাদের রেখে চলে গেছেন। অভাবেব কারণে মা ও তিন বোনকে নিয়ে রিকশা চালিয়ে কোনোমতে সে দিনাতিপাত করছিল। ৬ মাস আগে ব্রেন ক্যান্সারে তার এক ছোট ভাই মারা গেছে। তার চিকিৎসা করাতে গিয়েও ধারদেনা ও ঋণ করতে হয়েছে ইয়াছিনকে।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর শহর ফাঁড়ির পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জহিরুল আলম বলেন, বিষয়টি কেউ জানায়নি। খোঁজ-খবর নিয়ে রিকশাটি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।