এসপির দেওয়া ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধা মাহফুজা
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
অসহায় দরিদ্র বৃদ্ধা মাহফুজা বেগমের মাথা গোজার ঠাঁই করে দিয়েছেন ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান। শুধু নতুন ঘরই নয়, জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে বৃদ্ধার জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি মুদি দোকানও করে দেওয়া হয়েছে।
এরআগেও ফরিদপুরের এক ভিক্ষুক নারীকে বাড়ি ও দোকান ঘর নির্মাণ, একজন বীরঙ্গনাসহ বেশ কয়েকজন অসহায় পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দিয়েছেন তিনি।
জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে এই বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। বাড়ির মধ্যে স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট, টিউবয়েল, পাকা মেঝের বারান্দাসহ দোচালা দুইটি কক্ষ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও বাড়ির সঙ্গেই একটি দোকান ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে যাতে করে এই নারী ভিক্ষা না করে তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারেন।
গতকাল সোমবার (৩১ জানুয়ারি) দুপুরে শহরের চুনাঘাটা এলাকার বৃদ্ধা মাহফুজা বেগমের হাতে ঘরের চাবি তুলে দেন পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান। এ সময় সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন সরকার, কোতয়ালী থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. গাফফার হোসেন, পুলিশ লাইন্সের আনোয়ার হোসেনসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। চাবি হস্তান্তর শেষে বাড়ির আঙিনায় পুলিশ সুপার দুইটি আম গাছের চারা রোপণ করেন।
জানা যায়, বৃদ্ধা মাহফুজা বেগম (৪৯) ফরিদপুর পৌর সদরের চুনাঘাটা এলাকার বাসিন্দা। স্বামী আবুল কালাম মারা গেছেন বেশ কয়েক বছর আগে। শেখ মারুফ নামে এক ছেলে সন্তান রয়েছে তার। ছেলেটির পায়ে সমস্যা থাকায় কোনো কাজ করতে পারেন না। স্বামীর রেখে যাওয়া মাত্র ৩ শতাংশ ভিটের ওপর একটি ভাঙাচোরা ছাপড়া ঘরে বসবাস করতেন মাহফুজা বেগম।
এসপির দেওয়া ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধা মাহফুজা
জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে বিভিন্ন মানবিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা হয়। এই খবর পেয়ে বৃদ্ধা মাহফুজা বেগম পুলিশ সুপারের কাছে এসে তার দূরাবস্থার কথা খুলে বলেন। সে অনুযায়ী পুলিশ সুপার তার থাকার জন্য একটি ঘর ও জীবিকা নির্বাহের জন্য একটি মুদি দোকান করে দেন।
জেলা পুলিশের রিজার্ভ অফিসার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, এসপি স্যারের কাছে বৃদ্ধা মাহফুজা বেগম তার দূরাবস্থার কথা জানালে স্যার ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে খোঁজ খবর নিতে বলেন। ওই বৃদ্ধার বাড়িতে গিয়ে সত্যতা পাওয়া যায়। আসেলই তিনি খুব মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন। এসপি স্যারকে বিষয়টি অবগত করা হলে স্যারের নির্দেশনায় জেলা পুলিশের অর্থায়নে ওই বৃদ্ধার একটি টিনের ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়।
তিনি আরো বলেন, ঘরের পাশাপাশি ওই বৃদ্ধা ও তার ছেলের জীবিকা নির্বাহের জন্য বাড়ির উপরই একটি মুদি দোকান করে দেওয়া হয়েছে।
এসপির দেওয়া ঘর পেয়ে আনন্দে আত্মহারা বৃদ্ধা মাহফুজা
ঘর পেয়ে খুশি বৃদ্ধা মাহফুজা বেগম বলেন, এর আগে শুনেছিলাম এসপি স্যার মানুষরে অনেক উপকার করে, এবার নিজেই তার প্রমাণ পেলাম। ঘরটি পেয়ে এখন শান্তিতে ঘুমাতে পারবো। ঘরের পাশাপাশি স্যার একটি মুদি দোকানও করে দিয়েছেন। সেখান থেকে যা রোজগার হবে তা দিয়ে ভালোভাবে চলতে পারবো। আমি স্যারের জন্য মন খুলে দোয়া করি।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, অসহায় মানুষের পাশে সব সময় দাঁড়িয়েছে জেলা পুলিশ। এরই ধারাবাহিকতায় অসহায় বৃদ্ধা মাহফুজা বেগমকে একটি ঘর নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে একটি মুদি দোকানও করে দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও অসহায় মানুষের পাশে থাকবে জেলা পুলিশ।
তিনি আরও বলেন, পুলিশ জনগণ নিয়ে কাজ করে, পুলিশ আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি অনেক মানবিক কাজ করে থাকে। অতীতেও করেছে, যা হয়ত এখন বেশি দৃশ্যমান। আমরা জনগণের খুব পাশে যেতে চাই। সেই ধারাবাহিকতায় জেলা পুলিশের নিজস্ব অর্থায়নে দরিদ্র অসহায় এই নারীকে বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া।