শিরোনাম

South east bank ad

র‌্যাবের অভিযানে অস্ত্রসহ ১৫ জলদস্যু গ্রেপ্তার

 প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারী ২০২২, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের কিছু জলদুস্য বঙ্গোপসাগরে ডাকাতি অপহরণে যুক্ত হয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দেশের উপকূলীয় জেলা ভোলা, বরিশাল ও পটুয়াখালীর বিস্তীর্ণ সাগরে। তাদের দৌরাত্ম্যে বঙ্গোপসাগরে জেলেদের মধ্যে পুনরায় দস্যু আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সাগরে মাছ ধরার কাজে নিয়োজিত জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে দস্যুরা মুক্তিপণ আদায় করছে। এ সময় জেলেদের হত্যাকাণ্ডের মতো নৃশংসতায়ও জড়িয়েছে দস্যুরা।

সর্বশেষ গত ১৪ জানুয়ারি নোয়াখালী থেকে সাগরে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলারের ১৭ জেলেকে জিম্মি করে দুই লাখ টাকা নেয় দস্যুরা। টাকা পাওয়ার পর ১৬ জেলেকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আনোয়ার হোসেন নামের একজন এখনো নিখোঁজ রয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, দস্যুরা তাঁকে হত্যা করে সাগরে ফেলে দিয়েছে। নিখোঁজ আনোয়ারের খোঁজ পেতে তাঁর স্বজনরা এখন র‌্যাবের কাছে ধরনা দিচ্ছেন। র‌্যাব বলছে, এখন আনোয়ারের সন্ধান চলছে।

গত ১৪ জানুয়ারি সাগরে দস্যুতার ঘটনার তথ্য প্রথমে পায় র‌্যাব-৮। তাদের মাধ্যমে র‌্যাব সদর দপ্তর হয়ে র‌্যাব-৭ তথ্য পায়। এরপর শুরু হওয়া অনুসন্ধানের ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার চট্টগ্রামের বাঁশখালী, কক্সবাজারের চকরিয়া ও পেকুয়া এলাকায় টানা অভিযান চালিয়ে দস্যু বাহিনীর প্রধান নুরুল কবিরসহ ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-৭। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি বিদেশিসহ আটটি বন্দুক এবং দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো জলদুস্য বাহিনীর প্রধান মো. নুরুল কবির, সেকেন্ড ইন কমান্ড মো. মামুন, থার্ড ইন কমান্ড মো. আব্দুল হামিদ ওরফে কালা মিয়া, বোট সংগ্রাহক মো. ইউসুফ, বোটচালক মো. হাসান, মো. নুরুল আবছার, সহযোগী আবু বক্কর, গিয়াস উদ্দিন, নুরুল কাদের, মো. সফিউল আলম মানিক, মো. আবদুল খালেক, মো. রুবেল উদ্দিন, মো. সাইফুল ইসলাম জিকু, মো. সুলতান ও মো. মনজুর আলম। তারা সবাই বাঁশখালী, চকরিয়া, পেকুয়া ও কুতুবদিয়া এলাকার বাসিন্দা।

অভিযান শেষে আজ শনিবার সন্ধ্যায় র‌্যাব-৭-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল এম এ ইউসুফ সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় তিনি বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বর সুন্দরবনে জলদুস্যদের আত্মসমর্পনের পর সাগরে দস্যুতা বন্ধ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি দস্যুতা শুরু হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায়। এরই মধ্যে কিছুদিন আগে র‌্যাব-৮ জলদস্যুদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় সাতজন গ্রেপ্তার হয় এবং তিনজন মারা যায়।

এ ছাড়া ১৪ জানুয়ারি নুরুল কবিরের নেতৃত্বে একদল দস্যু সাগরে যাত্রা করে। তাদের মধ্যে কবিরের নেতৃত্বে পেকুয়ার মগনামা ঘাট থেকে সাত দস্যু এবং কুতুবদিয়া থেকে আট দস্যু বোটে উঠেছিল। দলটি নোয়াখালী থেকে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে যাওয়া একটি মাছ ধরার ট্রলারে থাকা ১৭ জেলেকে জিম্মি করে। ট্রলারে থাকা ইলিশ মাছ ছিনিয়ে নেওয়া ছাড়াও ট্রলার মালিকের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করে। মুক্তিপণ পেয়ে ১৬ জনকে মুক্তি দিলেও আনোয়ার হোসেন নামের এক জেলেকে এখনো ফিরিয়ে দেয়নি। বিষয়টি জেনে অনুসন্ধানে নামে র‌্যাব। এরপর গ্রেপ্তার হয় ১৫ জন। তাদের বিরুদ্ধে কক্সবাজার থানায় মামলা দায়ের করা হবে।

কালের কণ্ঠের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই দুস্যরা বঙ্গোপসাগরে বরিশাল-পটুয়াখালী পর্যন্ত পৌঁছে যায়। সেখানে গিয়ে দুস্যতার পর বোট জিম্মি করে। এরপর স্থলভাগে দস্যুদের অন্য সদস্যরা বিকাশসহ নানা মাধ্যমে বোট মালিকের কাছ থেকে টাকা আদায় করে। গ্রেপ্তার হওয়ার আগে তারা পুনরায় দস্যুতার উদ্দেশ্যে বোট ভাড়া করেছিল। তবে তার আগেই দস্যুরা গ্রেপ্তার হয়েছে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এই দস্যুরা সুন্দরবনে গিয়ে দস্যুতা করে না। সেখানে অন্য দস্যুরা জড়িত থাকতে পারে। ’

এ সময় র‌্যাব অধিনায়ক আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘এখন ছোটখাটো দস্যু বাহিনী থাকলেও চট্টগ্রাম কক্সবাজার অঞ্চলের বড় দস্যু বাহিনীকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে। ফলে সাগরে জেলেরা নিরাপদে মাছ ধরতে পারবেন। ’

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: