হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী খেজুরের রস: রয়েছে গাছের আকাল
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা)
চিরচেনা সেই ঐতিহ্যবাহী একসময়ের গ্রামবাংলার জনপ্রিয় ও শীতের আভাস জানাতে খেজুর গাছ কাটার হীরিক দেখা যেত। খেজুর গাছের রস দিয়ে তৈরি রসের শিন্নির খ্যাতি ছিলো বাংলা জুড়ে। মসজিদে শুক্রবার জুম্মার নামাজ শেষে বসে যেত ছোট-বড় সকলে দোয়ার আয়োজনে। কারন একমাত্র রসের শিন্নি।
আজ রসের দেখা নেই। নেই গ্রাম গঞ্জে সেই রসের শিন্নির হীরিক। কিভাবেইবা দেখা মিলবে? আগে গ্রামের পাশাপাশি ছোট ছোট মফস্বল শহরগুলোতে দু-একটি খেজুর গাছ ছিলো। এখন আর সেই চিরচেনা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুর গাছ নেই বললেই চলে। দু-একটি খেজুর গাছ দেখা গেলেও স্যাতসেতে আর গাছ না কাটার অভাবে শুকিয়ে খাঁট হয়ে গেছে। বট গাছের পাতা আর শিকর গজিয়েছে গাছের পুরো শরীর জুড়ে।
শীতের উষ্ণতাকে আন্দোলিত করতে এখন আর সেই খেজুর রসের দেখা। বাঁশের নল বেয়ে রস পড় হাঁড়ি উথলে পরত। এখন আর কলস ভরে আনা হয় না রস, পাতা হয়না এখন আর মাটির তৈরি হা হাঁড়ি। তাফালে করে জ্বাল দেয়া রস দিয়ে গুড় তৈরি করে বাজারে বিক্রি হতো। আবার রসের তৈরি খেজুরের গুড় দিয়ে নানা ধরনের পিঠা সহ বিভিন্ন খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হতো। সামান্য কিছু রস দিয়ে এখনও খেজুরের গুড় তৈরি হলেও তৈরি হচ্ছে না শীতের আমেজ মাখা রসের শিন্নি।
কোমরে বেঁধে প্লাস্টিকের বোতল কেটে কাঁচি হারি ও রসি নিছক ইতিহাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলার আবহমান ধারা অতিক্রম করে আজ হারিয়ে যাচ্ছে কালের বিবর্তনে নানা ধরনের ইতিহাস ও ঐতিহ্য বিজড়িত বাংলার আদি ও ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুর গাছ।