বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বাস্তবায়িত চারটি প্রকল্পের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বুধবার (১২জানুয়ারী) ভিডিও টেলিকনফারেন্সের মাধ্যমে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সওজ অধিদপ্তরের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক বাস্তবায়িত ঢাকা-এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডার পাস, সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ লেন মহাসড়ক, বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম (বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগসড়ক এবং রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরে চেংগী নদীর উপর ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং মুজিব শতবর্ষের এই মাহেন্দ্রক্ষণে নব উদ্বোধনকৃত এই প্রকল্পসমুহ দেশবাসীর প্রতি প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ হতে মুজিব শতবর্ষের উপহার। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদের মন্ত্রীবর্গ, সেনাবাহিনী প্রধান, সামরিক ও অসামরিক উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ এবং বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।এছাড়াও, প্রকল্প ভেন্যুসমুহে মন্ত্রীবর্গ, সাংসদ এবং সেনাবাহিনীর উর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, এমপি, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ, এসবিপি, ওএসপি, এনডিইউ, পিএসসি, পিএইচডি এবং সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইনচিফ মেজর জেনারেল ইবনে ফজল সায়েখুজ্জামান, বিএসপি (বার), এসজিপি, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্তৃক ঢাকা-এয়ারপোর্ট মহাসড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজ সংলগ্ন পথচারী আন্ডারপাসটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি। এখানে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন ও বয়স্ক মানুষের সুবিধার জন্য লিফট, র্যাম্প ও চলন্ত সিঁড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়াও রয়েছে নান্দনিক অভ্যন্তরীণ কাঠামো। এই আন্ডারপাসটি নির্মাণের মধ্য দিয়ে সড়কের ঐ অংশ সংলগ্ন বেশ কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ সর্বসাধারনের জন্য নিরাপদে সড়ক পারাপার নিশ্চিত হবে।
সিলেট শহর বাইপাস-গ্যারিসন লিংক ৪ লেন মহাসড়কে উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ৬.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের ফলে স্থানীয় স্কুল কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীদের যাতায়াত আরও সহজতর ও স্বাচ্ছন্দময় হবে। সেই সাথে স্থানীয় জনসাধারণের বানিজ্যিক ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নেও প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
দেশের দক্ষিণ-পূর্ব সীমান্তবর্তী এলাকায় নির্মিত বালুখালী (কক্সবাজার)-ঘুনধুম(বান্দরবান) সীমান্ত সংযোগ সড়ক প্রকল্পে ১.৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে। সড়কটি দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলোর সাথে বাংলাদেশের আঞ্চলিক সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে বানিজ্যিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই তিবাচক প্রভাব বিস্তার করাসহ স্থানীয় জনসাধারণের আর্থ-সামজিক উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধিতেও ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করবে।
রাঙ্গামাটি জেলার নানিয়ারচরে চেংগীনদীর উপর নির্মিত ৫০০ মিটার দীর্ঘ সেতুটি পার্বত্য অঞ্চলের সর্ববৃহৎ সেতু, যাতে রয়েছে ২.২ কিলোমিটার এ্যাপ্রোচ সড়ক। এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের মাধ্যমে রাঙ্গামাটি জেলা সদরের সাথে নানিয়ারচর উপজেলার নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। ফলে সামগ্রিকভাবে পার্বত্য অঞ্চলের প্রত্যাশা পূরণ, প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রাণসঞ্চার এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নের পথে এক ধাপ এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
দেশের বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কর্মকান্ডে সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ইনচিফ শাখা ইতিপূর্বে বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে। আজ উদ্বোধন হওয়া এই ৪টি প্রকল্প এরই ধারাবাহিকতা মাত্র। এই প্রকল্প সমুহ বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের আশা আকাঙ্খা পূর্ণ হবে।