হাতিরঝিল থেকে চিটাগাং রোড সড়ক হচ্ছে
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ভিত্তিতে হাতিরঝিল থেকে চিটাগাং রোড পর্যন্ত সড়ক হচ্ছে। ঢাকা শহরের যানজট নিরসনে এ সড়ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সড়ক যোগাযোগের জন্য নতুন প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করবে। এজন্য গতকাল চুক্তিসই হয়েছে। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) এবং কনসোর্টিয়াম অব চায়না কমিউনিকেশনস কনসট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও চায়না রোড অ্যান্ড ব্রিজ করপোরেশনের মধ্যে চুক্তিসই হয়। হাতিরঝিল-রামপুরা সেতু-বনশ্রী-শেখেরজায়গা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়ক (চিটাগাং রোড মোড় এবং তারাবো লিংক মহাসড়কসহ) (সংক্ষেপে ‘রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা’ মহাসড়ক) চার লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটির চুক্তিতে সই করেন।
চুক্তিপত্রে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের পক্ষে স্বাক্ষর করেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী আবদুস সবুর এবং সিসিসিসি-সিআরবিসি কনসোর্টিয়ামের পক্ষে স্বাক্ষর করেন প্যাং মিং।
এটি পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের (পিপিপি) আওতায় সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ২য় প্রকল্প এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। প্রথম প্রকল্প হিসেবে ঢাকা বাইপাস প্রকল্পটির নির্মাণকাজ চলমান। পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটি (পিপিপিএ) রামপুর-আমুলিয়া-ডেমরা প্রকল্পের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংককে ট্রানসেকশন অ্যাডভাইজার হিসেবে নিয়োগ দেয়। ১৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রামপুরা-আমুলিয়া-ডেমরা মহাসড়কটি এক্সপ্রেসওয়ে মানে উন্নীত করা হলে ঢাকা শহরের রামপুরা থেকে ডেমরা হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হবে।
এ সড়কটির বৈশিষ্ট্য হলো- ক. প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত ৪-লেনে মহাসড়ক নির্মাণ; খ. ৪-লেন সড়কের উভয়পাশে টোলবিহীন সার্ভিস রোড নির্মাণ; গ. ২টি সেতু, ২টি কালভার্টসহ পথচারী ও স্বল্প গতির যানবাহন পারাপারের জন্য ৩টি আন্ডারপাস নির্মাণ; ঘ. প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত মহাসড়কটিতে প্রবেশ এবং বহির্গমনের জন্য নির্ধারিত ৪টি স্থানে (যথা : চিটাগাং রোড মোড়, ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার, মেরাদিয়া ও রামপুরা সেতুতে) ৪টি ইন্টারচেঞ্জ রাখা হয়েছে এবং এ ৪টি স্থানের মাধ্যমে এ মহাসড়কে আগত যানবাহনগুলো টোল প্রদানের মাধ্যমে উক্ত মহাসড়কটি ব্যবহার করবে; ঙ. প্রকল্প মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে একাধিক স্তরবিশিষ্ট একটি ফ্লাইওভার নির্মাণের মাধ্যমে নারায়ণগঞ্জ এবং চট্টগ্রামের ট্রাফিকগুলোর নিরবচ্ছিন্ন প্রবাহ নিশ্চিত হবে; এবং চ. ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টারসংলগ্ন এলাকায় একটি টোল প্লাজা নির্মাণ হবে।
চুক্তির মেয়াদ ২৫ বছর। এর মধ্যে নির্মাণকাল ৪ বছর এবং পরবর্তী সময়ে ২১ বছর কনসোর্টিয়াম কর্তৃক গঠিত প্রকল্প কোম্পানি সড়কটি পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। এ সড়ক নির্মাণে সম্ভাব্য ২০৯৪ কোটি টাকা ব্যয় হবে এবং প্রকল্পটি ২০২৬ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। পিপিপি চুক্তিতে বাস্তবায়িত হলে সড়ক অবকাঠামো নির্মাণ, টোল সংগ্রহ ও ব্যবস্থাপনা, রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য সরকারকে সরাসরি কোনো অর্থ ব্যয় করতে হবে না। অপরপক্ষে মূল প্রকল্প বাস্তবায়নে ১২০৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে সহায়ক প্রকল্প অনুমোদিত হয়েছে। সহায়ক প্রকল্পের আওতায় ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন, মূল প্রকল্প তদারকি, পরামর্শক সেবা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নকারী ইউনিটের বেতনভাতা ও অন্য আনুষঙ্গিক ব্যয় নির্বাহ করা হবে।
গতকালের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকার কথা ছিল সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের। কিন্তু তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেননি। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান প্রিন্সিপাল রওশন আরা মান্নান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এনামুল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ছলিম উদ্দীন তরফদার, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম। এ ছাড়া পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ অথরিটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, সরকারের সচিব সুলতানা আফরোজ প্রমুখ।