মোকসেদ হত্যার মূলহত্যাকারীকে মিরপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন এলাকা হতে রংপুর জেলার চাঞ্চল্যকর ক্লুলেস মোকসেদ মিয়া হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মূলহত্যাকারী
মোঃ শামিম (৪৫)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে।
গত ১৪ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ সকাল আনুমানিক ০৯.০০ ঘটিকার সময় রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন বড় আলমপুর ইউনিয়নের কৈগাড়ী গ্রামস্থ একটি পুকুরপাড় থেকে গলায় গুরুতর কাটা রক্তাক্ত যখম, ডান হাতের কব্জি ও তালু, বাম হাতের কব্জির নিচে, ঠোঁটের নিচে ও বাম পাশে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম অবস্থায় ভিকটিম মোকসেদ মিয়া (৪০) এর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মৃতদেহের অনুমান ১০ ফিট দূরে রক্ত মাথা ০১ টি চাকু, অনুমান ১০০ গজ দূরে ভিকটিমের ব্যবহৃত রক্তমাখা মাফলার ও স্যান্ডেল পাওয়া যায়। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পরিবার রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানায় অজ্ঞাতনামা আসামীদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। উক্ত ক্ললেস হত্যার ঘটনায় প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিকস্ মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। ফলশ্রæতিতে পুলিশের পাশাপাশি র্যাব উক্ত হত্যার রহস্য উদঘাটন ও আসামী গ্রেফতারে ছায়া তদন্ত শুরু করে।
গোয়েন্দা তথ্য ও স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে জানা যায়, উক্ত হত্যার মূল আসামী ঢাকায় অবস্থান করছে। প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ০৪ জানুয়ারি ২০২২ তারিখ ০৮.৩০ ঘটিকায় র্যাব-৪ এর একটি আভিযানিক দল রাজধানীর মিরপুর মডেল থানাধীন দক্ষিন পীরেরবাগ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক মূলহত্যাকারী মোঃ শামিম (৪৫), জেলা-রংপুর’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ভিকটিম ও আসামীর বাড়ী একই এলাকায় এবং পূর্ব পরিচিত। তাদের মধ্যে মাঝে মাঝে আর্থিক লেনদেন হত। গত নভেম্বর ২০২১ মাসে ভিকটিম মোকসেদ মিয়া আসামীর নিকট বিশ হাজার টাকা ধার চাইলে আসামি একটি এনজিও থেকে লোন নিয়ে ভিকটিমকে ২০ হাজার টাকা ধার হিসেবে দেয়। ভিকটিম উক্ত টাকা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আসামিকে ফেরত দিতে না পারলে তাদের মধ্যে দন্দের সৃষ্টি হয় এবং এক পর্যায়ে ভিকটিম আসামিকে বিভিন্ন হুমকি প্রদান করে। এতে করে আসামী ভিকটিমের উপর চরমভাবে ক্ষিপ্ত হয় এবং তখন থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করে এবং ভিকটিমের সাথে স্বাভাবিক সম্পর্ক বজায় রাখতে থাকে। গত ১৩ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখ রাত আনুমানিক ১৯.৩০ ঘটিকার সময় পার্শ্ববর্তী গ্রামে যাবার কথা বলে আসামী ভিকটিমের ব্যাটারি চালিত ভ্যানে উঠে এবং রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন ৭নং বড় আলমপুর ইউপির কৈগাড়ী গ্রামস্থ বাগরাসা দিঘীর পূর্ব পাশে কাঁচা রাস্তার ধারে নির্জন স্থানে পৌঁছালে আসামী তার সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়া পেছন থেকে ভিকটিমের গলায় উপর্যুপুরি আঘাত করতে থাকে। আঘাতের একপর্যায়ে ভিকটিম মাটিতে পড়ে গেলে আসামি ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় এলোপাথাড়ি কুপিয়ে ঘটনাস্থল হতে পালিয়ে নিজ বাড়ীতে চলে যায় এবং নিজ বাড়িতে ৪/৫ দিন স্বাভাবিকভাবে অবস্থান করে ঘটনা পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। পরবর্তীতে নিজেকে আড়াল করতে রংপুর থেকে ঢাকায় এসে মিরপুরের একটি গ্যারেজে থেকে রিকশা চালানো শুরু করে। গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত হত্যার সাথে সরাসরি জড়িত বলে স্বীকারোক্তি প্রদান করেছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন এবং এই ধরনের অপরাধীদের বিরুদ্ধে র্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।