রাজশাহীতে চিকিৎসার নামে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী):
রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ছাড়াও মহানগরীতে গজিয়ে উঠা ক্লিনিক-ডায়াগনস্টিক সেন্টারে চিকিৎসা সেবার নামে নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানানো হয়েছে।
শনিবার রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে সামাজিক সংগঠন ‘রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদ’ আয়োজিত মানবন্ধনোত্তর এক সমাবেশ থেকে এই দাবি জানানো হয়। কর্মসূচিতে রাজশাহীর বিভিন্ন পেশাজীবী ও সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধি ও বীর মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নিয়ে চিকিৎসা সেবার নামে চিকিৎসকদের নানা অপকর্মের চিত্রও তুলে ধরেন।
মানববন্ধন চলাকালীন বক্তারা বলেন, “মানুষ এখন চিকিৎসা ব্যবস্থায় প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। চিকিৎসায় চিকিৎসকদের বর্ধিত ফি নিয়েও অসহায় হয়ে পড়েছেন। বেসরকারি ক্লিনিক, প্যাথলজিতে চিকিৎসকরা রোগীদের কাজ থেকে অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন। কর্মসূচি থেকে মানুষের আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে ফি নেওয়ার দাবি জাননো হয়।”
বক্তারা আরও বলেন, “রামেক হাসপাতালে চিকিৎসকদের পাশাপাশি এখন দায়িত্বরত আনসাররাও বেপরোয় হয়ে উঠেছে। এখানে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হচ্ছেন। কখনো কখনো শারীরিকভাবেও তাদের লাঞ্ছিত করা হচ্ছে।”
এতে রামেক হাসপাতালের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। কর্মসূচি থেকে রামেক হাসপাতালে হয়রানি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতালে খাবারের মান বৃদ্ধি করতে হবে। ভুল চিকিৎসা বন্ধ করতে হবে। হাসপাতালের অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা অবিলম্বে বন্ধ করে চিকিৎসাসেবার মান বৃদ্ধি করতে হবে।
বক্তারা বলেন, রামেক হাসপাতালের হৃদরোগ বিভাগের চিকিৎসকরা মানুষের অসুস্থতাকে পূঁজি করে নানাভাবে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে। এ বিভাগের এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে তারা বলেন, করোনা পরীক্ষা কিংবা রোগ নির্ণয় না করেই তিনি হার্টের রোগীর রিং পরিয়েছেন। তার ভুল চিকিৎসায় সম্প্রতি নগরীর একজন প্রকৌশলীর মৃত্যুও হয়েছে।
বক্তার অবিলম্বে অর্থলোভী এ চিকিৎসকের অপসারণ দাবি করেন। তারা বলেন, এখন চিকিৎসকদের ফি অস্বাভাবিকহারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো এখন অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার মেশিনে পরিণত হয়েছে। চিকিৎসাসেবার নামে এসব অপকর্ম ও নৈরাজ্য বন্ধের দাবি জানান বক্তারা।
রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মো. লিয়াকত আলীর সভাপতিত্বে কর্মসূচিতে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান, সাংগাঠনিক সম্পাদক দেবাশিষ প্রামানিক দেবু, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক হারুনুর রশিদ, মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের সভাপতি নুরুল ইসলাম মতিন, আইনজীবী এন্তাজুল হক বাবু, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের রাজশাহীর নেত্রী সেলিনা বেগম, এ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শফিকুল আলম, বজলুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএফ