লঞ্চ অগ্নিবিস্ফোরণে বেতাগীতে নিহত-১, নিখোঁজ-৮, আহত-২০
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা):
ঢাকা থেকে বরগুনা নৌরুটের এমভি অভিযান ১০ লঞ্চে আগুন লাগার পর বরগুনার বেতাগী এখন শোকপুরি। বেতাগী উপজেলায় ১ জন নিহত, ৪ জন নিখোঁজ ও ২০জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। তবে নিখোঁজ যাত্রীরা জীবিত আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত প্রায় অর্ধশত যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে বলে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ইউনিটের উপ সহকারি পরিচালক মো. ফিরোজ কুতুবী। একই সাথে অগ্নিকাণ্ডে আহত হয়েছেন কমপক্ষে ৭১ জন যাত্রী। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহত একজন হলেন উপজেলার কাজিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা রিয়াজ হোসেন(২৮)। এছাড়া নিখোঁজ ও আহতরা হলেন কাউনিয়া এলাকার সিকদার বাড়ীর রিনা বেগম (৩৮),লিমা (১৪) মোকামিয়া এলাকার আব্দুল হাকিম (৫৮) তার মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস(১৩) ,আরিফুর রহমান(৩৫), কুলসুম(৪),সেলিম(৪৮) ও সোবাহান খলিফা(৪০)।
এছাড়ও আহত যাত্রীরা হলেন, আবদুল হাই নেছারী,হালিমা বেগম,সফিউল্লাহ,কুশল কর্মকার,জাহানারা বেগম, ফরহাদ খলিফা,মুকুল খলিফা,রুবেল, শাহিন মতিয়র রহমান,শাবনূর,শাহেবআলী, সালাম,ফেরদৌস,ও বুলবুল।
বিষয়টি বেতাগী থানা পুলিশ নিশ্চিত করেছেন। এছাড়াও অনেকের নাম নিশ্চতভাবে জানা যায়নি।
ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে দেড় লাখ টাকা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। শুক্রবার বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দগ্ধ ব্যক্তিদের দেখার পর সাংবাদিকদের এ কথা জানান প্রতিমন্ত্রী।
এদিকে বরগুনা জেলা প্রশাসনে পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, নিহতদের মরদেহ দাফনে প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান শুক্রবার গণমাধ্যমকে বলেন, যেহেতু লঞ্চটি বরগুনায় আসছিল, নিহত ও আহতদের অধিকাংশ এ জেলার বাসিন্দা হবেন।নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর আহতদেরকে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা আমরা জেলা প্রশাসন থেকে দেব।
প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে প্রায় চারশ যাত্রী নিয়ে বরগুনার উদ্দেশ্যে লঞ্চটি ঢাকা সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। চাঁদপুর ও বরিশাল টার্মিনাল লঞ্চটি থামে এবং যাত্রী উঠা-নামা করে।ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে পৌঁছলে রাত ৩টার দিকে এতে আগুন ধরে যায়।
পরে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দিয়াকুল এলাকায় নদীর তীরে লঞ্চটি ভেড়ানো হয়। লঞ্চ থেকে প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন যাত্রীদের অনেকে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা নৌকা নিয়ে লঞ্চের আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন তারা।ফায়ার সার্ভিসের ১৫টি ইউনিটের চেষ্টায় ভোর ৫টা ২০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয় বাসিন্দা, কোস্টগার্ড ও পুলিশ সদস্যরাও উদ্ধার অভিযানে সহযোগিতা করেন।
ফায়ার সার্ভিস নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, রাত ৩টা ২৮ মিনিটে তাদের কাছে অগ্নিকাণ্ডের খবর আসে। তাদের কর্মীরা ৩টা ৫০ মিনিটে সেখানে পৌঁছে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার অভিযান শুরু করেন।
ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক নাজমুল আলম নবীন জানিয়েছেন, এ দুর্ঘটনায় এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ৩৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৭১ জনকে আহত ও দগ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।