শিরোনাম

South east bank ad

ময়মনসিংহে অপহৃত মাদ্রাসাছাত্রী সানজিদাকে পিবিআইয়ের উদ্ধার

 প্রকাশ: ১৯ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মোঃ নজরুল ইসলাম, (ময়মনসিংহ):

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ময়মনসিংহ শনিবার রাতে মুক্তাগাছা উপজেলার কলাকান্দা সাকিনস্থ বিবাদী ফরহাদ মিয়ার বাড়ী হতে অপহৃত মাদ্রাসাছাত্রী মোছাঃ সানজিদাকে উদ্ধার করেছে।

পুলিশ সুপার পিবিআই, ময়মনসিংহ গৌতম কুমার বিশ্বাস জানান, ভিকটিম মোছাঃ সানজিদা (১৪), পিতা-মোঃ ইউনুছ আলী, সাং-মৈশাদিয়া, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহ মৈশাদিয়া সাকিনস্থ বায়তুল উলুম মাদ্রাসার ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থী। বিবাদী ফরহাদ মিয়া (২৮), পিতা-মোঃ বুরহান উদ্দিন, সাং-কলাকান্দা, থানা-মুক্তাগাছা, জেলা-ময়মনসিংহ ভিকটিমের বড়বোনের স্বামী। গত ২৭/১০/২০১৫ খ্রিঃ তাদের বিবাহ হয় এবং তাদের দাম্পত্য জীবনে ০৪ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। পরবর্তীতে ভিকটিমের বড়বোনকে যৌতুকের জন্য বিবাদী ফরহাদ মিয়া তাড়িয়ে দিলে ভিকটিমের বড়বোন তাদের বাড়ীতে অবস্থান করতে থাকে।

গত ১২/০৯/২১ খ্রিঃ সকাল অনুমান ১০ ঘটিকার ভিকটিম সানজিদা পরীক্ষা দেয়ার জন্য নিজ বাড়ী হতে মাদ্রাসায় যায়। পরবর্তীতে দুপুর অনুমান ২ ঘটিকার সময়ও বাড়ী ফিরে না যাওয়ায় ভিকটিমের মা-বাবা মাদ্রাসায় খোঁজ নিয়ে জানতে পারে যে, ভিকটিম সানজিদা মাদ্রাসায় পরীক্ষা দিতে যায় নাই। পরবর্তীতে ভিকটিমের মা মোছাঃ লাইলী বেগম মুক্তাগাছা থানায় জিডি নং-৮৭৮, তাং-১৮/০৯/২১ খ্রিঃ এন্ট্রি করে।

ভিকটিমের মায়ের ধারনা বিবাদী ফরহাদ মিয়া ঘটনার তারিখ ও সময়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ভিকটিম মোছাঃ সানজিদাকে মুক্তাগাছা থানাধীন মৈশাদিয়া সাকিনস্থ কালাচানের বান্দের পাকা পুলের উপর হতে জোরপূর্বক ইচ্ছার বিরুদ্ধে অপহরণ করে নিয়ে গেছে। বিবাদী ফরহাদ তার সহযোগিদের সহায়তায় ভিকটিম মোছাঃ সানজিদাকে বেআইনীভাবে আটক রেখে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নীতিবহির্ভূত কোন কাজে বাধ্য করেছে অথবা ভিকটিমকে খুন করে লাশ গুম করে ফেলতে পারে। উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের মা মোছাঃ লাইলী বেগম বাদী হয়ে বিবাদী ফরহাদ ও তার মা বাবার বিরুদ্ধে মুক্তাগাছা থানার পিটিশন মামলা নং-১৮৯/২০২১, ধারা-নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ৭/৩০
বিজ্ঞ আদালতে দায়ের করেন।

ডিআইজি পিবিআই জনাব বনজ কুমার মজুমদার, বিপিএম (বার), পিপিএম এর সঠিক তত্ত্বাবধান ও দিক নির্দেশনায় পিবিআই ময়মনসিংহ ইউনিট ইনচার্জ পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাসের সার্বিক সহযোগিতায় মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা উপ-পুলিশ পরিদর্শক (নিঃ) মোঃ রফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করেন।

পুলিশ সুপার গৌতম কুমার বিশ্বাস এর দিক নির্দেশনায় ও তদন্তকারী কর্মকর্তা তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভিকটিমের অবস্থান সনাক্ত পূর্বক গত ১৮/১২/২০২১ খ্রিঃ রাত অনুমান ২১.৩০ ঘটিকার সময় ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানাধীন কলাকান্দা সাকিনস্থ বিবাদী ফরহাদ মিয়ার হেফাজত হতে অপহৃত ভিকটিম মাদ্রাসাছাত্রী মোছাঃ সানজিদাকে উদ্ধার করেন ।

এ বিষয়ে ময়মনসিংহ জেলার পিবিআই এর এসপি জনাব গৌতম কুমার বিশ্বাস আরো বলেন, এটি একটি চাঞ্চল্যকর মাদ্রাসাছাত্রী অপহরণের ঘটনা। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার পিবিআই ময়মনসিংহ জেলাকে প্রদান করা হলে পিবিআই কর্তৃক অত্র মামলার ভিকটিম মোছাঃ সানজিদা (১৪)কে উদ্ধারের লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়।

এক পর্যায়ে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ময়মনসিংহ জেলার মুক্তাগাছা থানাধীন কলাকান্দা এলাকা হতে বিবাদী ফরহাদ মিয়ার হেফাজত হতে অপহৃত ভিকটিম মাদ্রাসাছাত্রী মোছাঃ সানজিদাকে উদ্ধার করা হয়।

জানা যায়, বিবাদী ফরহাদ মিয়া বেশিরভাগ সময়ই তার শ্বশুরবাড়ীতে অবস্থানকরতো। সেই সুবাদে ভিকটিম মোছাঃ সানজিদার উপর তার দুলাভাই বিবাদী ফরহাদ মিয়ার কু-নজর পড়ে। এরই এক পর্যায়ে গত ১২/০৯/২০২১ খ্রিঃ সকাল অনুমান ০৯.০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম মোছাঃ সানজিদা মাদ্রাসায় যাওয়ার পথে বিবাদী ফরহাদ মিয়া ভিকটিমকে ফুসলিয়ে ও ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক সিএনজিতে করে ময়মনসিংহ নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে ময়মনসিংহ হতে তাকে ঢাকার উত্তরার একটি বাসায় নিয়ে আটকে রাখে এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে শারীরিক সর্ম্পক স্থাপন করে।

ভিকটিম মোছাঃ সানজিদা সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে বিবাদী ফরহাদ মিয়া তাকে সহ তার বড়বোনকে হত্যার হুমকী দেয়। এর ফলে ভিকটিম বাধ্য হয়ে বিবাদী ফরহাদ মিয়ার সাথে উত্তরা, ঢাকায় একত্রে বসবাস করতে থাকে। গত ১৭/১২/২০২১ খ্রিঃ বিবাদী ফরহাদ মিয়া ভিকটিম মোছাঃ সানজিদাকে ঢাকা থেকে মুক্তাগাছা থানাধীন কলাকান্দা সাকিনস্থ তার নিজ বাড়ীতে নিয়ে আসে।

উদ্ধারকৃত ভিকটিম মোছাঃ সানজিদা (১৪)কে রবিবার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করা হলে সে স্বেচ্ছায় নারী ও শিশু
নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সং/০৩) এর ২২ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে।

এমএফ

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: