পরীক্ষার হলে শিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়া সরকারি আজিজুল হক কলেজে পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে এক প্রভাষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ওই শিক্ষক একই কলেজের আরবি ও ইসলামি শিক্ষা বিভাগের প্রভাষক জাকিরুল ইসলাম।
ভুক্তভোগী ছাত্রী গাবতলী বাগবাড়ি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগে ২য় বর্ষে পড়ালেখা করছে। রবিবার (১৯ ডিসেম্বর) কলেজ অডিটোরিয়ামের স্নাতক প্রথম বর্ষে পরীক্ষা চলাকালিন সময়ে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, গতকাল অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়ন পরীক্ষা চলছিল। ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর প্রথম বর্ষের একটি সাবজেক্টে ফলাফল খারাপ হওয়ায় তিনি আবারও পরীক্ষাটি দিতে আসেন। কলেজের অডিটোরিয়ামে পরীক্ষার চলাকালিন সময়ে দুপুর ১টা থেকে ৫টা পর্যন্ত ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত শিক্ষক নানাভাবে শ্লীলতাহানি করেন। মেয়েটি পরীক্ষা চলার জন্য তাৎক্ষণিক কোন প্রতিবাদ না করে বাড়িতে চলে যায়।
বাড়িতে গিয়ে তার বাবাকে সব ঘটনা জানালে রবিবার পরিবারের সদস্যরা কলেজ অধ্যক্ষ কার্যালয়ে এসে অভিযোগ করেন। পরে দুপুর দেড়টা থেকে ৩টা পর্যন্ত সরকারি আজিজুল হক কলেজ অধ্যক্ষ তার নিজ কার্যালয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক ও ভুক্তভোগী ছাত্রীকে নিয়ে মুখোমুখি করে অভিযোগ সম্পর্কে শোনেন। ওই সময় কলেজের অন্যান্য সিনিয়র শিক্ষকদের জেরার মুখে অভিযুক্ত প্রভাষক জাকিরুল ইসলাম ওই ছাত্রীর শরীরে হাত দেওয়া ও অশালীন কথা বলার কথা স্বীকার করেন।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষ শাহাজাহান আলী জানান, “ভুক্তভোগি ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে আমরা প্রাথমিক তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়েছি। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ”
অভিযোগকারী মেয়ের বাবা বলেন, “আমি আমার মেয়ের শ্লীলতাহানির বিচার চাই। একজন শিক্ষক এতবড় নেক্কার জনক কাজ করতে পারেন এটা অবিশ্বাস্য। আমার মেয়ের নিরাপত্তার ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি শংকিত। ”
অভিযুক্ত শিক্ষক জাকিরুল ইসলাম জানান, “মেয়েটির পরীক্ষার হলে বারবার পেছন ফিরে তাকাচ্ছিল। এজন্য আমি তাকে হাত ধরে সোজা করে দিয়েছি। অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। আমার কোন খারাপ উদ্দেশ্য ছিলো না।”
এদিকে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে দোষী শিক্ষকের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নাইমুর ইসলাম তিতাস।
আজিজুল হক ক্যাম্পাসে সাধারণ ছাত্রদের হয়ে তিনি বলেন, “এই শিক্ষক মহান এই পেশার জন্য কলঙ্কজনক। তাকে এই পেশায় রেখে সুযোগ তৈরী করে দিলে আরো ছাত্রী শ্লীলতাহানি হবার সুযোগ রয়েছে। এ কারণে আমরা তার বহিষ্কার চাই।”