কাহালুতে নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ৪
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বগুড়ার কাহালুতে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নির্বাচনী সহিংসতায় ৪ জন আহত হয়েছেন। এসময় ইটপাটকেল নিক্ষেপ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, নির্বাচনী অফিস, বসত-বাড়িতে হামলা,বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাতে কাহালু উপজেলার নারহট্ট ইউনিয়নের বিবিরপুকুর বাজারে এ সহিংসতার ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে রুহুল আমিন বেলাল নৌকা প্রতীকে নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে, বিদ্রোহী প্রার্থী স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আব্দুর রহিম আনারস প্রতীকে চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন। রাত ৮টার দিকে বিবির পুকুর বাজারে আনারস মার্কার কর্মী সমর্থকরা মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার পথে নৌকা মার্কার কর্মীদেরকে গালিগালাজ করেন। এনিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায় এক পক্ষ আরেক পক্ষের ওপর ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ৫ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে নৌকা মার্কার সমর্থক আব্দুল মমিন ও খলিলুর রহমান এবং আনারস মার্কার কর্মী সোহরাবকে বগুড়া জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নৌকার প্রার্থী বেলাল তালুকদার জানান, এশার নামাজের আগে কর্মী-সমর্থক নিয়ে নিশ্চিন্তপুর একটি অফিস উদ্বোধনের জন্য বের হই। এসময় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে বিদ্রোহী প্রার্থী রহিমের সমর্থক সোহরাফ ইচ্ছেকৃতভাবে হোন্ডা নিয়ে আমার পায়ের উপর তুলে দেয়।
আমার কর্মীরা বেপোয়ারাভাবে হোন্ডা চালানো নিষেধ করলেও নৌকার সমর্থক মোমিন (২০) কে বার্মিজ চাকু দিয়ে আঘাত করে রহিমের সমর্থক।
এসময় কর্মী সমর্থকরা উত্তেজিত হলে রহিমের অফিস থেকে পরিকল্পিতভাবে হাসুয়া, ছামুরাই, লাঠিসোটাসহ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের উপর হামলা করে। এসময় তারা আমার মার্কেটের তিন তলায় একটি অফিস, জুয়েলের হোটেল, একটি চায়ের দোকানসহ বিভিন্ন স্থানে নৌকার অফিস ভাঙচুর করে। মোমিন ছাড়াও আমার আরও দুই কর্মী খলিল (৪৫) ও নাজিম (২৮) কে গুরুতর জখম করে তারা। তিনি জানান, পুলিশ ঘটনাস্থলে আসলেও তাদের সামনে দিয়ে রহিমের সমর্থকরা জামাত-শিবিরের ক্যাডারদের নিয়ে বীরদর্পে উলখার গ্রামে গিয়ে আমার কর্মী বাবলুর বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। তারা বিভিন্ন স্থানে গিয়ে নৌকার সমর্থকদের হুমকি দেওয়ায় বর্তমানে অনেকে আতঙ্কে রয়েছে।
বিদ্রোহী প্রার্থী আব্দুর রহিম জানান, নৌকার সমর্থকরা গায়ে পড়ে গোলমাল করছে। আমার কর্মী রোস্তমের ভাই একটি দোকানে কেনাকাটা করে বাড়িতে যাওয়ার সময় বেলাল তালুকদারের অফিসের সামনে তাকে ধরে চার জায়গায় ছুরিকাঘাত করে। তার ভাষ্য মতে, বেলাল তালুকদারের লোকজন নিজেরাই ভাঙচুর করে আমাদের উপর দোষ চাপানোর চেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমানে আমার দুই কর্মী গুরুত্বর জখম হয়ে বগুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
কাহালু থানার ওসি আমবার হোসেন বলেন, নির্বাচনী সহিংসতার ঘটনায় নৌকার প্রার্থী রুহুল আমিন বেলাল অভিযোগ করেছেন। তবে অন্যপক্ষ এখনও কোনো অভিযোগ করেনি। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।