স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ৫০ কিলোমিটার হাঁটলেন বিমল পাল
মো. নজরুল ইসলাম, (ময়মনসিংহ):
স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী আর জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন উপলক্ষে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল পাল ৫০ কিলোমিটার পদব্রজের যাত্রা গতকাল বিকেলে সফলভাবে সমাপ্ত কররেন। গতকাল শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস রাতে তিনি এ পদযাত্রা শুরু করেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল পালের বয়স এখন ৭০ ছুঁই ছুঁই। ১৯৭১ সালে তিনি ভারতের মেঘালয় সীমান্তঘেঁষা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার তেলিখালিতে যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি এবার সেই হালুয়াঘাট থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার হাঁটলেন। গতকাল শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) ময়মনসিংহ মুক্ত দিবস সকালে মেঘালয় সীমান্ত থেকে হাটা শুরু করে ময়মনসিংহ সার্কিট হাউসে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে পদযাত্রা সমাপ্ত করে সমাবেশে যোগ দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল পাল বলেন, ৫০ কিলোমিটার হাঁটার জন্য ইতিমধ্যে কয়েকদিন ধরেই প্রস্তুতি নেন তিনি। তিনি স্বাভাবিকভাবেই প্রতিদিন ২ থেকে ৩ ঘণ্টা পর্যন্ত হাঁটেন। এতে দীর্ঘ সময় হাঁটার অভ্যাস হয়েছে। তবে হালুয়াঘাট থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার হাঁটা স্বাভাবিক হাঁটা নয়। এর প্রস্তুতি হিসেবে সম্প্রতি তিনি প্রতিদিন সকালে চার ঘণ্টা করে হাঁটছেন। শুক্রবার ভোরে তিনি ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা পর্যন্ত অন্তত ২৫ কিলোমিটার হেঁটেছেন বলে জানান।
বিমল পাল বলেন, ‘৯ ডিসেম্বর ময়মনসিংহ থেকে মুক্তাগাছা পর্যন্ত ২৫ কিলোমিটার হাঁটার পর ৫০ কিলোমিটার হাঁটার সাহস পাচ্ছি।’
বিমল পাল বলেন, ৯ ডিসেম্বর ভোর সাড়ে ৬টায় ময়মনসিংহের স্মৃতিসৌধের সামনে থেকে হাঁটা শুরু করে সকাল সাড়ে ১০টায় তিনি মুক্তাগাছা উপজেলায় পৌঁছান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাঁটার সময়কার বিভিন্ন স্থান থেকে ছবি পোস্ট করেছেন তিনি।
৫০ কিলোমিটার হাঁটার পরিকল্পনা সম্পর্কে বিমল পাল বলেন, গতকাল শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) রাত ১২টা ১ মিনিটে হাঁটা শুরু করেন হালুয়াঘাট উপজেলা সদর থেকে। সঙ্গে থাকে একটি অ্যাম্বুলেন্স। তাঁর সঙ্গে আরও অনেকেই ছিলেন। তাঁরা মাঝে মাঝে হেঁটে যান আবার অ্যাম্বুলেন্সে করেও যান। অ্যাম্বুলেন্সটিকে পেছনে রেখে তিনি হাঁটেন। হাঁটার সময় মাঝেমধ্যে বিশ্রাম নেন। বিমল পাল দুপুরের পর তিনি ময়মনসিংহে এসে পৌঁছেছেন। ময়মনসিংহ নগরের পাটগুদাম জয় বাংলা চত্বর থেকে আরও অনেকেই তাঁর সঙ্গী হবেন বলে আশা। ময়মনসিংহ সার্কিট হাউসে বঙ্গবন্ধু চত্বরে এসে পদযাত্রা সমাপ্ত করে সমাবেশে যোগ দেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা বিমল পাল বিভিন্ন ধরনের সামাজিক কাজের সঙ্গে যুক্ত। তিনি ময়মনসিংহের স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে মিলে করোনায় মারা যাওয়া মানুষের লাশ দাফন ও সৎকারকাজের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।