শিরোনাম

South east bank ad

মুক্তিপণের দাবীতে অপহরণকৃত বৃদ্ধকে গাইবান্ধা থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব, অপহরনকারী গ্রেফতার

 প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম

মুক্তিপণের দাবীতে ঢাকা হতে অপহরণকৃত ৬২ বছরের বৃদ্ধ আতিয়ারকে গাইবান্ধা থেকে উদ্ধার করেছে র‌্যাব-৪ঃ অপহরনকারী গ্রেফতার।

এলিট ফোর্স হিসেবে র‌্যাব আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি মনুষ্য অপরহরণকারী চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র‌্যাব সদা তৎপর।

গত ৭ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জনৈক আতিয়ার রহমান (৬২) মনিপুর মিরপুরের নিজ বাসা হতে গাইবান্ধা হতে আগত জনৈক আতিয়ার ও আসাদুলদ্বয়ের সাথে মহাখালী সাক্ষাৎ করতে গিয়ে নিখোঁজ হয়। ঘটনর পর ভিকটিমের ছেলে জামিউল ইসলাম জীবন মিরপুর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়রি এবং অধিনায়ক, র‌্যাব-৪ বরাবর ভিকটিম’কে উদ্ধারে একটি আবেদন করেন। প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে ভিকটিম’কে উদ্ধার এবং অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের গ্রেফতারে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল গোয়েন্দা কার্যক্রম শুরু করে। গোয়েন্দা তথ্য ও স্থানীয় সোর্সের সাহায্যে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গত ৯ ডিসেম্বর ভোর ৫টা হতে দুপুর আড়াই ঘটিকা পর্যন্ত গাইবান্ধা জেলার বামনডাঙ্গা এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে অপহৃত ভিকটিম আতিয়ার রহমান (৬২)’কে উদ্ধারপূর্বক অপহরণকারী চক্রের নিন্মোক্ত ১ সদস্য’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃত মোঃ আশিকুর রহমান (২৮) গাইবান্ধা জেলার বাসিন্দা।

গ্রেফতারকৃত আসামী’কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গত ৭ ডিসেম্বর সকাল অনুমান সাড়ে ১০টার দিকে ভিকটিম আতিয়ার রহমান (৬২) এর কাছে গাইবান্ধা হতে আগত অপহরণকারী চক্রের পলাতক সদস্য আসামী আতিয়ার ও আসাদুল একটি ব্যাপারে ভিকটিমের সহযোগিতা চায় এবং মহাখালী আসতে বলে। ভিকটিম আতিয়ার তাদের কথামত মহাখালী আসার পর তিতুমীর কলেজের সামনে অপহরণকারী আতিয়ার ও আসাদুলসহ আরও ৫/৬ জন মিলে তাকে একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাসে জোড় করে টেনে তুলে এবং হাত পিছনে বেঁধে ফেলে। ভিকটিমকে কোন কথা বলতে দেয় না, সোজা আবদুল্লাহপুর হয়ে গাজীপুরের দিকে যায়। ভিকটিমকে চড় থাপ্পড়সহ শারীরিকভাবে লঞ্চিত ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। ভিকটিমের সাথে থাকা মোবাইল এবং মানিব্যাগে থাকা সমস্ত টাকা কেড়ে নেয়। ভিকটিমের মানিব্যাগে থাকা একটি এটিএম কার্ড পেয়ে, কার্ডে থাকা সব টাকা তুলে দিতে বলে। ভিকটিমকে নিয়ে গাইবান্ধার দিকে রওনা দেয়। গাইবান্ধা জেলার বামনডাঙ্গাস্থ একটি বাড়িতে সারারাত ভিকটিমকে আটকে রাখা হয়। সেখানে আতিয়ারের ভাই গ্রেফতারকৃত আসামী আশিক, পলাতক আসামী মারুফ ও আলামিন’রা ভিকটিমকে অমানুষিক নির্যাতন করে ও ভিকটিম’কে মোবাইলের মাধ্যমে কথা বলিয়ে পরিবারের কাছে মুক্তিপন দাবী করে। ভিকটিমের কাছ থেকে জোড়পূর্বক একটি ব্যাংক চেকে সাইন নেয়। সারারাত নির্যাতন শেষে পরদিন গত ৮ ডিসেম্বর ভিকটিমকে গাইবান্ধা শহরে নিয়ে যায়। একটি এটিএম বুথে গিয়ে কার্ড পাঞ্চ করে টাকা তুলতে গেলে দেখে ভিকটিমের একাউন্ট ব্লক করা। এতে অপহরনকারীরা প্রচন্ড ক্ষিপ্ত হয়ে ভিকটিমকে নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরাতে থাকে এবং মেরে ফেলার হুমকি দেয়। একপর্যায়ে ভিকটিমের পরিবারের সাথে ভিকটিম’কে কথা বলিয়ে দিয়ে ১০ লক্ষ টাকা মুক্তিপন দাবি করে অন্যথায় মেরে ফেলার হুমকি দেয়। ভিকটিমের পরিবার কোন মুক্তিপন না প্রদান করায় এবং সন্ধা হয়ে এলে ভিকটিমকে একটি খোলা মাঠের মধ্যে নিয়ে যায় এবং মেরে ফেলবে বলে ভয় ভীতি দেখায়। এরই মধ্যে বার বার ভিকটিমের পরিবারকে টাকা পাঠানোর জন্য চাপ দেয়া হয়। ভিকটিমকে সারারাত খোলা মাঠে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ভিকটিমকে প্রচন্ড চাপ প্রয়োগ করা হয়। এক পর্যায়ে হঠাৎ র‌্যাবের উপস্থিতি টের পেয়ে অপহরনকারীরা মাঠের মধ্য দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। র‌্যাবের আভিযানিক দল আনুমানিক ভোর ৬টার দিকে বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনের পাশের খোলামাঠ সংলগ্ন রেললাইন এর পাশ হতে ভিকটিম আতিয়ার রহমানকে উদ্ধার করে। র‌্যাব সদস্যদের সাথে থাকা ভিকটিমের ছেলে জীবনের শনাক্তমতে ভিকটিমকে উদ্ধার করে বামনডাঙ্গা রেলস্টেশনের ভিতরে নিয়ে আসা হয়। কিছু সময় বিশ্রামের পর ভিকটিমের শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হলে তার দেখানোমতে যে বাড়িতে (অপহরণকারী আতিয়ারের বাড়ি) প্রথমে তাকে আটকে রাখা হয়েছিল সেখানে তল্লাশি চালানো হয়। আনুমানিক সকাল সাড়ে ১১টার দিকে অপহরণকারী দলের মূল নেতা আতিয়ারের ভাই ও সহযোগী আশিকুরকে ঘরে লুকিয়ে থাকা অবস্থায় গ্রেফতার করা হয়। পলাতক অন্যান্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এ আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। অদূর ভবিষ্যতেও এইরুপ অপহরণকারী চক্রের বিরুদ্ধে র‌্যাব-৪ এর জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: