নবনির্বাচিত নারী ইউপি সদস্যের ছেলেকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ার শাজাহানপুরে মাসুদ রানা (১৭) নামে এক কলেজ ছাত্রকে কৌশলে অপহরণ করে ধারালো অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবির ঘটনা ঘটেছে। পরে কৌশলে দৌড়ে পালিয়ে লোকালয়ে এলে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে।
বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) রাতে উপজেলার রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। এঘটনায় রাতেই থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
মাসুদ রানা উপজেলার কাঁটাবাড়িয়া মধ্যপাড়ার মোস্তাফিজার রহমানের ছেলে। এবছর সে এইচএসসি অটোপাস করেছে। লেখাপড়ার পাশাপাসি সে রঙমিস্ত্রির কাজ করে। তার মা মাসুদা বেগম এবার আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৪, ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সংরক্ষিত নারী আসনের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
মাসুদ রানার মা নবনির্বাচিত নারী সদস্য মাসুদা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার রাত ৭টার দিকে তার ছেলে মাসুদ রানা বাড়িতে না ফেরায় তার মোবাইল নাম্বারে ফোন করেন। এসময় অপরিচিত এক ব্যক্তি ফোন ধরে বলেন, মাসুদ রানাকে ফিরে পেতে চাইলে ১ লাখ টাকা দিতে হবে। এসময় তার পরিচয় জানতে চাইলে সে পরিচয় গোপন করে ফোন কেটে দেয়।
মাসুদ রানা জানায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর আড়িয়া বাজার থেকে তার সহকর্মী রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়ার আবু তালেবের ছেলে রাজু আহমেদ কথা আছে বলে তাকে রহিমাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামের রাস্তায় ডেকে নিয়ে যায়। কিছু দুর গিয়ে একই গ্রামের বাসিন্দা উপজেলার যুবদল নেতা সাজু আহমেদ সহ ৪-৫ জন তাকে গলা টিপে ধরে জোর করে গ্রামের জলপাইতলা ঈদগাহ মাঠের পাশে কলাবাগানের ভিতর নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে তার মায়ের কাছে ১ লাখ টাকা দাবি করে। এসময় অপহরণকারীরা ফোনে জানতে পারে যে লোকজন তাকে অপহরণের কথা জেনে গেছে। তারা বলতে থাকে এখানে থাকা যাবে না অন্য কোথাও নিয়ে যেতে হবে। এই কথা বলে একজন তাকে ধারালো অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে আর অন্যরা কোথাও চলে যায়। এসময় মাসুদ রানা সুযোগ বুঝে দৌড়ে রাস্তায় এসে চিৎকার দিলে স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে।
এবিষয়ে যুবদল নেতা সাজু আহমেদের সঙ্গে তার মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
রহিমাবাদ গ্রামের মেম্বার সাইদুর রহমান জানান, কোন পক্ষই তাকে কিছু জানাননি। তবে লোকমুখে জানতে পেরেছেন যে, ওই রাতে জনৈক এক মেয়েসহ মাসুদ রানা ধরা পড়ে। পরে তাকে আটকে রেখে টাকা দাবি করা হয়।
কাঁটাবাড়িয়া গ্রামের মেম্বার আব্দুল বাছেদ জানান, মেয়েসহ ধরা পড়লে তারা আইনের আশ্রয় নিতে পারতেন। কিন্তু তা না করে মারপিট করে অস্ত্রের মুখে আটকে রেখে মুক্তিপণ দাবি করা অপরাধ। নিশ্চয় এর পিছনে নির্বাচন কেন্দ্রিক অন্য কারো হাত রয়েছে বলে এলাকায় কথা উঠেছে।
শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, থানায় অভিযোগ হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।