বুয়েটেও দেশ সেরা বগুড়ার সেই মেফতাউল আলম সিয়াম
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া):
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষাতেও প্রথম স্থান অধিকার করেছেন বগুড়ার সেই শিক্ষার্থী মেফতাউল আলম সিয়াম। গতাকল বৃহস্পতিবার ( ২৫ নভেম্বর ২০২১) রাতে প্রকাশিত ফলাফলে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে তিনি শীর্ষস্থান দখল করেন। বিষয়টি মুঠোফোনে নিশ্চিত করেছেন মেফতাহুল। এর আগে মেফতাউল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক ইউনিটে সর্বোচ্চ নম্বর পেয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেন। এছাড়া চলতি বছরের কুয়েট, রুয়েট ও চুয়েট সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় ৩য়, মেডিকেলের ভর্তি পরীক্ষায় মেধা তালিকায় ৫৯তম এবং ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজির (আইইউটি) ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করেছিলেন সিয়াম।
মেফতাউল আলম সিয়াম বলেন, ‘বুয়েটের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়ে ভবিষ্যতে গবেষক হতে চান।
বগুড়ার শিবগঞ্জ উপজেলার দাড়িদহ গ্রামের খোরশেদ আলম ও মুনজিলা আলম দম্পতির প্রথম সন্তান সিয়াম। মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করেন বগুড়া শহরের রহমাননগর এলাকায় ভাড়া বাসায়। তাঁর বাবা বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। তিন ছেলের মধ্যে সিয়াম সবার বড়। তার অপর দুই ভাই মোবাশ্বির আলম সানি ও মুনজির আলম সামি বগুড়া জিলা স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। এ বছর বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন তিনি।
বাবার চাকরির সুবাদে প্রাথমিকের গ-ি পর্যন্ত কেটেছে দেশের বিভিন্ন শহরে। শৈশব থেকেই স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। সেই স্বপ্ন নিয়ে মাধ্যমিকে ভর্তি হন বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল ও কলেজে। ষষ্ঠ শ্রেণির বার্ষিক পরীক্ষায় ২৫২ থেকে রোল হয় ২০। সপ্তম শ্রেণিতে ক্লাসের সেকেন্ড বয় হন। অষ্টম শ্রেণিতে ক্লাসের সেরা হন। এসএসসি পরীক্ষায় গোল্ডেন জিপিএ-৫ পেয়ে ভর্তি হন সরকারি আজিজুল হক কলেজে। এইচএসসি পরীক্ষাতেও গোল্ডেন জিপিএ-৫ পান।
মেফতাউল বলেন, ‘ঢাবি আর আইইউটিতে প্রথম হলেও বুয়েটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হতে পারব কি না, সেটি নিয়ে সংশয় ছিল। জেলা শহরের কলেজ থেকে পাস করে দেশের নামকরা বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মেধাবীদের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হয়েছে। তবে আমি সব সময় আত্মবিশ্বাস ধরে রেখেছিলাম।’
বুয়েটে প্রথম হতে পেরে বেশ উচ্ছ্বসিত মেফতাউল। তিনি জানান, ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগে পড়তে চান তিনি। এ বিষয়ে উচ্চতর শিক্ষার পাশাপাশি গবেষণা করার পরিকল্পনা আছে তাঁর।
যদিও শৈশব থেকে স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। তবে এক গৃহশিক্ষকের অনুপ্রেরণায় চিকিৎসকের বদলে একসময় প্রকৌশলী হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনি।
মেফতাউল জানান, এ সাফল্যের পেছনে মায়ের পরিশ্রম আর বাবার অনুপ্রেরণা সবচেয়ে বেশি কাজ করেছে।