South east bank ad

নকলায় আ’লীগ ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত-২০

 প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

শাবাব আহমেদ, শেরপুর

শেরপুরের নকলা উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর ২০২১) বিকেলে উপজেলার চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের চন্দ্রকোনা বাজারে ওই ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ২ প্রার্থী পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার (২৩ নভেম্বর ২০২১) বিকেল ৫টার দিকে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মো. কামরুজ্জামান গেন্দুর (আনারস প্রতীক) ভাবি সালমা বেগমের নেতৃত্বে একদল কর্মী-সমর্থক চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের দড়িপাড়া এলাকায় প্রচারণা চালাতে যান। ওইসময় আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান চেয়ারম্যান সাজু সাইদ সিদ্দিকীর কয়েকজন সমর্থক তাঁদের বাধা দেন ও আনারসের প্রচার বন্ধ করে এলাকা ছেড়ে চলে যেতে বলেন।

এ নিয়ে কামরুজ্জামানের ভাবি সালমা বেগমের সঙ্গে নৌকার সমর্থকদের কথা–কাটাকাটি হয়। সংবাদ পেয়ে সালমা বেগমের ছেলে সম্বিত তার দুই সহযোগী শাহিন ও জাফরকে নিয়ে দড়িপাড়া এলাকায় যান এবং আনারসের প্রচারে বাধা দেওয়ার বিষয়ে জানতে চান। পরে সংবাদ পেয়ে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান প্রার্থী সাজু সাইদ সিদ্দিকীও দড়িপাড়া এলাকায় যান। ওইসময় উভয়পক্ষের কর্মী-সমর্থকের মধ্যে বাগ্‌বিতণ্ডা হয়।

একপর্যায়ে সাজু সাইদ সিদ্দিকীর সমর্থকেরা কামরুজ্জামানের ভাতিজা সম্বিত ও তার সহযোগীদের কাছে ‘অস্ত্র’ আছে দাবি করে তাদের আটক করেন এবং পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের চন্দ্রকোনা তদন্ত কেন্দ্রে নিয়ে যায়।

এদিকে সম্বিতসহ ৩ জনকে আটকের খবর ছড়িয়ে পড়লে বিদ্রোহী কামরুজ্জামান গেন্দুর সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা সংঘবদ্ধ হয়ে চন্দ্রকোনা বাজার থেকে দড়িপাড়া এলাকায় যাওয়ার প্রস্ততি নেন। পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে সাজু সাইদ সিদ্দিকীর সমর্থকেরাও চন্দ্রকোনা বাজারে যান। ওইসময় উভয় পক্ষে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া, সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। এতে বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান গেন্দুর বড় ভাই চন্দ্রকোনা কলেজের অধ্যক্ষ মো. রফিকুল ইসলামসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হন। ওইসময় চন্দ্রকোনা বাজারসংলগ্ন এলাকায় নৌকা প্রতীকের একটি নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভাঙচুর করা হয় বলে অভিযোগ করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজু সাঈদ সিদ্দিকী।

সংবাদ পেয়ে শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. হান্নান মিয়া ও নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য চন্দ্রকোনা বাজারে গিয়ে ১০ রাউন্ড শটগানের ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাজু সাইদ সিদ্দিকী অভিযোগ করে বলেন, কামরুজ্জামান গেন্দুর সমর্থকেরা তার গ্রামের বাড়ি দড়িপাড়া এলাকায় অস্ত্র নিয়ে প্রচারের কাজ চালাতে যান এবং পরে তার একটি নির্বাচনী প্রচারকেন্দ্র ভাঙচুর করেন।

তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বুধবার সকালে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী কামরুজ্জামান গেন্দু চন্দ্রকোনা বাজারে তার নির্বাচনী অফিসে সাংবাদিকদের বলেন, তার কোনো কর্মী বা সমর্থকের কাছে অস্ত্র ছিল না। তার কোনো লোক নৌকার প্রচারকেন্দ্র ভাঙচুর করেননি। এসব অভিযোগ মিথ্যা, ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। উল্টো সাজু সিদ্দিকীর লোকজন হামলা চালিয়ে তার বড়ভাই কলেজের অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম ও ভাতিজাকে ঢিল ছুড়ে গুরুতরভাবে আহত করেছে। আমার অন্তত: ২৫ জন সমর্থক আহত হয়েছেন। তিনি আরও বলেন, সাজু সাঈদ সিদ্দিকী একজন জনবিচ্ছিন্ন লোক। তার সাথে ইউনিয়নের কোন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নেই। এজন্য তিনি আমার লোকজনকে হুমকি দিচ্ছেন এবং ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। ওইসময় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোখলেসুর রহমান মোখলেস, সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মিন্টুসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এ ব্যাপারে নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি বর্তমানে পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আছে। চন্দ্রকোনা বাজারে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়ন করা হয়েছে। ওই ঘটনায় কোনো পক্ষ থেকে এখনও থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: