ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর বসবাসে বন্য পশুরা নিরাপদ নয়
বিডিএফএন টোয়েন্টিফোর.কম
দেশে পাহাড়ের ভেতর খাসিয়াসহ বেশ কিছু ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষের বসবাসে বন্য পশুরা নিরাপদ নয় বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনমন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।
বুধবার (১৭ নভেম্বর) সকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত বন্য প্রাণীর অবৈধ বাণিজ্য দমনে আইন প্রয়োগ শক্তিশালী করার লক্ষ্যে পরামর্শ সভা’য় মো. শাহাব উদ্দিন এসব কথা বলেন। বন অধিদপ্তর এ সভার আয়োজন করে।
পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘পাহাড়েও বন্য পশু নিরাপদ নয়। আমাদের খাসিয়া সম্প্রদায়ের অনেকে পাহাড়ে পান চাষ করে। আরও অনেকে আছে যারা পাহাড়ের ভেতরে গিয়ে বসবাস করছে। যে কারণে বন্য পশু সেখানেও নিরাপদ নয়। এসব কারণ আমাদের চিহ্নিত করতে হবে। বনকে সুরক্ষিত করতে হবে। তাহলে বন্য প্রাণীকেও আমরা সুরক্ষা দিতে পারব।’
সরকারের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তার সমালোচনা করে এই মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী হাবিবুন নাহার বলেন, ‘সুন্দরবনে বাঘ গণনা মাঝেমধ্যেই হয়ে থাকে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী এ রকম একটি অনুষ্ঠানে যাবেন। কিন্তু সেই বাঘ গণনার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ পাইনি। কারণ, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অনেক উঁচু স্তরে থাকা এক কর্মকর্তা বলেছেন, বাঘ না থাকলে কী হয়? পৃথিবীর কত দেশেই তো বাঘ নেই, তাতে কী হয়েছে? এই উঁচু পর্যায়ে গিয়েও যদি কর্মকর্তার মনোভাব এই থাকে, তাহলে দেশের সাধারণ মানুষ কী চিন্তা করবে।’
বন্য প্রাণী পাচার বন্ধ করতে সরকারের বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সহযোগিতা চেয়ে উপমন্ত্রী বলেন, একটি বাঘকে হত্যার পর সেটার চামড়া, নখ, দাঁত বিক্রি করতে না পারলে কেউ বাঘ হত্যা করবে না। পাচারকারী চক্র যতদিন তাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকবে, ততদিনই তারা অনুপ্রাণিত হবে এসব অপকর্ম করতে। সুন্দরবনের অনেক প্রাণী এভাবে পাচার হয়ে যায়।
এই মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোস্তফা কামাল বলেন ‘পাহাড়ে জুমচাষের জন্য আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। যেখানে বন্য প্রাণী বাস করে, সেখানে পুড়িয়ে চাষ করার তো দরকার নেই। বান্দরবানের একটা কলেজ থেকে প্রস্তাব দিয়েছে, পরিবেশ উন্নয়নের অংশ হিসেবে পাহাড় কেটে তারা সেখানে স্ট্যাচু বানাবে। পাহাড় কেটে তো পরিবেশের উন্নয়ন হতে পারে না।’ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থাসহ সবার কাছে অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, অধিকারের নামে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের মতো কাজগুলো সমর্থন করবেন না।
মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) ইকবাল আবদুল্লাহ হারুন বলেন, ‘বন্য প্রাণী সংরক্ষণ আইন ২০১২ আরও পরিষ্কার করতে হবে। আর আইনটাকে বাস্তবায়ন করার জন্য আমাদের আরও বেশি সমাজের কাছে যেতে হবে।’