জলহস্তির ঘরে ফেরা নতুন অতিথি
ফয়সাল আহমেদ, (গাজীপুর):
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে ফের জলহস্তি পরিবারে শাবকের জন্ম হয়েছে। গত ২১অক্টোবর শাবকটির জন্ম হলেও প্রথমবারের মতো ১৬ নভেম্বর(মঙ্গলবার) বিকেলে মায়ের সাথে ডাঙ্গায় ঘুরতে দেখা যায় তাকে। এর আগে গত ২০১৬ ও ২০১৮ সালে জলহস্তি শাবকের জন্ম দিলেও তাদের বাঁচানো যায়নি। বর্তমানে পার্কে নতুন শাবক নিয়ে জলহস্তির সংখ্যা ৩টি। তবে নতুন এ শাবকটি পুরুষ না স্ত্রী তা এখনো নির্ধারণ করতে পারেনি পার্ক কর্তৃপক্ষ।
সাফারী পার্ক কর্তৃপক্ষের দেয়া তথ্য মতে, জলহস্তি আফ্রিকান তৃণভোজী স্তন্যপায়ী প্রাণী। এরা পানিতে জলজ উদ্ভিদ খেয়ে জীবন ধারণ করে। জলের সাথে ডাঙ্গায়ও এরা বসবাস করতে পারে। অনিয়ন্ত্রিত শিকার ও চোরাচালানের কারণে ২০০৬সালে জলহস্তিকে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় স্থান দিয়েছে। জলহস্তিকে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহৎ প্রাণী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারণত জলহস্তির দৈর্ঘ্য ৩.৫মিটার উচ্চতা ১.৫মিটার ও ওজন হয়ে থাকে ৩২০০কেজি পর্যন্ত। এরা নিশাচর প্রাণী। রাতের বেলায় খাবারের খোঁজে বের হয়। প্রকৃতিতে এরা ৩০ বছরের অধিক সময় পর্যন্ত বেঁচে থাকে। জলহস্তির গর্ভধারণের সময়কাল ১০মাস, একটি করে শাবক জন্ম দিয়ে থাকে মা জলহস্তি।
পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক আনিছুর রহমান বলেন, জন্মের পর এখন পর্যন্ত শাবকটি সুস্থ রয়েছে। শাবকটিকে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা দিচ্ছে তার মা। মা ও তার শাবকের পুষ্টিমানের কথা বিবেচনা করে খাবারের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে। দিনের বেশীরভাগ সময়ই মায়ের সাথে শাবকটি পানিতেই থাকছে। সারা শরীর ডুবিয়ে চোখ বের করে কুচুরীপানার ভেতরেই সবার লোকচক্ষুর আড়াল হয়ে থাকে সে। তবে মাঝে মধ্যে মায়ের সাথে সে ডাঙ্গায়ও উঠে পড়ে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাফারী পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন, পার্ক প্রতিষ্ঠালগ্ন সময় দক্ষিন আফ্রিকা থেকে ২টি জলহস্তি আনা হয়। এ থেকে ইতিপূর্বে দুটি পুরুষ শাবকের জন্ম হলেও প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ জলহস্তির সাথে মারামারি করে ছোট সময়েই তারা মারা যায়। তবে এবারের শাবকটিকে কড়া নজরে রাখছে তার মা। প্রায় ১মাস বয়স হয়েছে। শাবকটির এখন পর্যন্ত ভালোভাবেই বড় হচ্ছে সে। আমাদের আশা এবারের শাবকটি হয়তো টিকে যাবে।