শিরোনাম

South east bank ad

সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নারদ নদ দূষণমুক্ত করার আহ্বান

 প্রকাশ: ১১ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :

দলমত নির্বিশেষে প্রশাসন, সমাজকর্মী ও সাধারণ মানুষসহ সবার সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নাটোরের নারদ নদ দখল-দূষণমুক্ত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ নভেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) আয়োজনে রাজশাহী মহানগরীর একটি রেস্তোরাঁয় ‘নারদ নদ দখল-দূষণমুক্তকরণে আদালতের নির্দেশনা : বাস্তবায়নে অগ্রগতি ও করণীয়' শীর্ষক এক সভায় এ আহ্বান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, নারদ নদকে কেন্দ্র করেই নাটোরের ব্যবসা-বাণিজ্য গড়ে উঠেছিল। নদ পথে মালামাল আনা-নেওয়া হতো। নদের মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন স্থানীয় জনগোষ্ঠী। নাটোর সদর থেকে গুরুদাসপুর পর্যন্ত প্রবাহিত পথে নাটোর শহরের মধ্যে নদটির প্রায় ছয় কিলোমিটার অংশ পড়েছে। সর্পিলাকার এ নদের দৈর্ঘ্য প্রায় ১৬ কিলোমিটার। কিন্তু অবাধ দখল-দূষণের ফলে একদিকে যেমন নারদ নদের প্রবাহ কমে গেছে। অন্যদিকে কল-কারখানার রাসায়নিক বর্জ্য নদে ফেলায় পানি দূষিত হওয়াসহ অসহনীয় গন্ধে শহরের বাতাস প্রতিনিয়ত ভারী হচ্ছে। মশা-মাছি উপদ্রব বাড়ছে। এছাড়াও নানা রকম চর্ম রোহে আক্রান্ত হচ্ছেন নদ পাড়ের মানুষ। এতে নদের স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এলাকার প্রতিবেশ ব্যবস্থা ও ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক জীবন।

বক্তারা আরও বলেন, নারদ নদ দূষণ-দখল থেকে মুক্ত করাসহ নদের স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করার দাবিতে ২০১৪ সালে হাইকোর্টে রিট মামলা (রিট নম্বর ৭৩২/২০১৪) দায়ের করে বেলা। রিটের শুনানি শেষে আদালত নারদ নদের প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করে এমন সব স্থাপনা অপসারণ এবং নদে বর্জ্য নিষ্কাশনের ও পানি দূষণের সব ধরনের দূষণের উৎস থেকে নদকে রক্ষা করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে বিবাদীদের প্রতি আদালত রুল জারি করেন। কিন্তু ২০২১ সালের আগস্ট মাসে নারদ নদ পরিদর্শনে দেখা যায়, নদের ওপর নির্মিত ৩৭টি স্থাপনার মধ্যে মাত্র একটি স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে।

বর্জ্য নারদ নদে ফেলা থেকে বিরত থাকতে আদালতের নির্দেশনা থাকলেও স্থানীয় প্রশাসন দূষণ রোধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নদের ওপর নির্মিত সব স্থাপনা অপসারণ এবং দখল-দূষণমুক্ত করাসহ নদটির প্রবাহ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তেমন কোনো উদ্যোগ পরিদর্শনকালে দৃশ্যমান হয়নি।

নদকে ‘জীবন্ত সত্তা’ উল্লেখ করে একে রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগের আহ্বান জানিয়ে বক্তারা বলেন, হাইকোর্টের একটি রায়ে নদকে ‘জীবন্ত সত্তা' উল্লেখ করা হয়েছে। কেননা মানুষের জীবন-জীবিকা নদের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কিন্তু মানুষ নিজেই এ সম্পর্কটি নষ্ট করেছে। অথচ মানবজাতি টিকে থাকার অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নদ। কিন্তু দিন যতো যাচ্ছে নারদ নদটি মৃতপ্রায় হয়ে যাচ্ছে। এ নদকে রক্ষা করার সময় এসেছে। আশপাশের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের ভারসাম্য টিকিয়ে রাখতে নারদ নদ রক্ষায় সবাইকে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। পর্যায়ক্রমে সমন্বিত উদ্যোগের মাধ্যমে নদের দূষণ রোধ হবে। যদি তা না করতে পারি তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ও পরিবেশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- রাজশাহী পরিবেশ অধিদফতরের সিনিয়র কেমিস্ট মো. মিজানুর রহমান, স্থানীয় দৈনিক সোনার দেশ পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত, এনজিও সাথীর নির্বাহী পরিচালক মো. শিবলী সাদিক প্রমুখ। এতে সঞ্চালনা করেন বেলার রাজশাহী ও রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের সমন্বয়কারী তন্ময় কুমার সান্যাল।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: