রাজশাহীর রিকশাচালক কাদের হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার-৩
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
রাজশাহী মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালক আবদুল কাদের (৫৫) খুনের ঘটনায় দায়ের করা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের কাছ থেকে কাদেরের রিকশার বিভিন্ন পার্টস উদ্ধার করা হয়েছে। রবিবার (০৭ নভেম্বর) দুপুরে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রাজশাহী মহানগর পুলিশ (আরএমপি) কমিশনার মো. আবু কালাম সিদ্দিক এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার মিয়াপাড়ার মো. আল-আমিন (২১), বাঘা উপজেলার মালি আনদাহো গ্রামের মো. জনি (২১) ও নাটোরের লালপুর উপজেলার মোহরকয়া গ্রামের আরিফুল ইসলাম (৩৫)। ওই খুনের সঙ্গে কাউসার (২০) নামে আরেক তরুণের সম্পৃক্ত থাকার প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। কাউসার এখনও পলাতক।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- গত ৬ অক্টোবর দিবাগত রাত ১টার দিকে নগরীর বোয়ালিয়া থানার সাগরপাড়া এলাকায় রাস্তার পাশে রিকশাচালক কাদেরের গলাকাটা লাশ পাওয়া যায়। তাঁর বাড়ি নগরীর শ্রীরামপুর এলাকায়। সেদিন তাঁর রিকশাটি পাওয়া যায়নি। মূলত তাঁর রিকশাটি ছিনতাই করতেই তাঁকে খুন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে আরএমপি কমিশনার জানান, আল-আমিন ও কাউসার কিছু দিন আগে অটোরিকশা চুরির সময় ধরা পড়েন। তখন তাঁদের ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। এই জরিমানার টাকা শোধ করার জন্য তাঁরা একটি রিকশা ছিনতাইয়ের পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন রাতে জনি, আল-আমিন ও কাউসার রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলাকায় আবদুল কাদেরের রিকশায় ওঠে। শহরের বিভিন্ন এলাকায় ঘোরার পর সাগরপাড়ার নির্জন এলাকায় কাদেরের গলায় ছুরি চালিয়ে দেওয়া হয়। এরপর তাঁর রিকশাটি নিয়ে গিয়ে তাঁরা লালপুরে আরিফুল ইসলামের দোকানে ২২ হাজার টাকায় বিক্রি করে। এই রিকশা কেনার অপরাধে আরিফুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
আরএমপি কমিশনার আরও জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আল-আমিন জানিয়েছে, পলাতক কাউসার তাঁর চাচাতো ভাই। ঘটনার রাতে কাউসার তাঁকে ডিসিপ্লিন-২ নামের একটি ওষুধ খাওয়ায়। এই ওষুধ খাওয়ার পর সে নিজের হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলে খুন করেছে।
তিনি আরও জানান, ঘটনার সময়ের কোন সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া যায়নি। তবে খুনের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ শহরজুড়ে লাগানো সব সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করেছে। আর তাতেই পাওয়া গেছে কাদেরের রিকশায় তিনজন ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য। এর মাধ্যমেই তিনজনকে শনাক্ত করা হয়। এরপর শনিবার চারঘাট থেকে চাকুসহ আল-আমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গ্রেপ্তার করা হয় অন্য দুজনকে।
আরএমপি কমিশনার জানান, গ্রেপ্তারকৃত তিনজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে রিমাে আবেদন করা হবে। তাঁরা আরও এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে কি না তা রিমান্ডে নিয়ে জানার চেষ্টা করা হবে। মামলার পলাতক আসামি কাউসারকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।