শিরোনাম

South east bank ad

যৌবনে দেশের একমাত্র জাগুয়ার দম্পতি

 প্রকাশ: ০৬ নভেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফয়সাল আহমেদ, (গাজীপুর) :

ভারতে পাচারকালে ২০১৭সালে একটি পুরুষ ও একটি স্ত্রী জাগুয়ার শাবক উদ্ধার করেছিল যশোর পুলিশ। পরে বন্যপ্রাণী প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের ব্যবস্থাপনায় এ প্রাণী দুটির স্থান হয় গাজীপুরের শ্রীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারী পার্কে। পরিসংখ্যানে থাকা তথ্য অনুযায়ী দেশের কোথাও আর জাগুয়ার না থাকায় এ দুটিই আমাদের দেশের একমাত্র জাগুয়ার দম্পতি।

আটক হওয়ার সময় বয়স কম থাকলেও চার বছর পর এখন তার পূর্ণ বয়স্ক। সাফারী পার্কের চিকিৎসাকেন্দ্রের কোয়ারাইন্টাইন সেন্টারের শেকলে ঘেরা নির্জনতার মধ্যে অতিবাহিত হচ্ছে তাদের যৌবনেদীপ্ত দিনগুলো। পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন এ জাগুয়ার দম্পতির জন্য নির্দ্দিষ্ট একটি এরিয়াতে তাদের উপযুক্ত বসবাসের স্থান তৈরী প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের প্রথম দিকে দর্শনার্থীরা দেশের একমাত্র জাগুয়ার দম্পতিকে দেখার সুযোগ পাবেন।

সমস্ত পৃথিবীতে জাগুয়ারদের জনসংখ্যা হ্রাসের কারণে এখন প্রায় বিপদাপন্ন অবস্থায় রয়েছে। আমেরিকা মহাদেশের দক্ষিণ আমেরিকা বা আমাজন জঙ্গলের কথা আসলেই শুধু “জাগুয়ার” এর কথা চলে আসে। বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ ও জাগুয়ার মূলত একই শ্রেণীর প্রাণী। এরা সিংহের চেয়েও হিং¯্রতায় ভয়ঙ্কর । বাঘের শরীরে লম্বা লম্বা ডোরা কাটা থাকে আর জাগুয়ারের গোল গোল ছোপ দাগ থাকে। দেহের গঠন চিতা বাঘেরও চেয়েও বড়। মুহুর্তেই গাছের মগ ডালে উঠে যাওয়ার যাদুকরী দক্ষতাও রয়েছে প্রাণীটির। এছাড়াও ফাঁদে ফেলে শিকারকে ধরতে নানা কৌশল রপ্ত করা রয়েছে। এরা শিকারে জলে-স্থলে সমান দক্ষতা দেখাতে পারে এবং এক কামড়েই শিকারকে কাবু করে দিতে পারে। গায়ানা, মেক্সিকো ও ব্রাজিলের জাতীয় পশুর স্থান দখল করে রেখেছে এই জাগুয়ার।

সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তবিবুর রহমান বলেন , জাগুয়ার একটি বিশেষ হিং¯্র প্রাণী। দীর্ঘদিন ধরেই নিবিড় পরিচর্যায় এরা এখন পূর্নবয়স্ক। এদের জন্য নির্দিষ্ট বা বিশেষ প্রক্রিয়ায় শেড দরকার। যা না থাকায় তাদের কোয়ারাইন্টাইন জোনেই এখনও রাখা হয়েছে। তবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর পার্কের কোর সাফারী পার্কের বাঘ বেষ্টনীর ভেতর শেড নির্মাণ করে প্রাণী দুটিকে দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হবে।

তিনি আরো বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত এই জাগুয়ার দম্পতিই একমাত্র। উন্মোক্ত অবস্থায় বিচরণের সুযোগ পেলে এ থেকে শাবক জন্মের ভালো সম্ভাবনা রয়েছে। অচিরেই একটি সুসংবাদের আশা আমরা করতেই পারি।

সাফারি পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মোঃ আনিসুর রহমান জানান, সপ্তাহে ছয়দিন জাগুয়ার দম্পতিকে খাবার দেয়া হয়। এদের মধ্যে ৫দিন খাবার হিসেবে সাড়ে তিন কেজি করে সাত কেজি গরুর মাংস দেয়া হয়। বাকী একদিন মুরগি সপ্তাহে একদিন আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুসারে প্রাণী দুটোকে অভুক্ত রাখা হয়।

উইকিপিডিয়ায় থাকা তথ্য অনুযায়ী, পূর্ণবয়স্ক জাগুয়ারের ওজন ৬৮ থেকে ১৩৬ কেজি। এদের শরীরের দৈর্ঘ্য ১৫০ থেকে ১৮০ সেন্টিমিটার। লেজের দৈর্ঘ্য ৭০ থেকে ৯০ সেন্টিমিটার। মাদি ১২ থেকে ২৪ মাস আর মর্দা জাগুয়ার ২৪ থেকে ৩৬ মাস বয়সে প্রজননক্ষম হয়। এদের গর্ভকাল ৯১ থেকে ১১১ দিন। গড়ে দুটি বাচ্চা দেয়, চারটি বাচ্চা প্রসবেরও নজির রয়েছে। জন্মের পর সম্পূর্ণভাবে মা জাগুয়ারের ওপর নির্ভর করতে হয় শাবকদের। প্রায় দুই সপ্তাহ এরা চোখও মেলে না। ৫ থেকে ৬ মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ খায়। বড় হতে হতে সে শিকার করা শেখে এবং একাই চলাফেরা করে। এদের গড় আয়ু ১১ থেকে ১২ বছর। তবে বন্দি অবস্থায় ২০ বছরও বাঁচে।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: