শিরোনাম

South east bank ad

রিকশাচালক বাবার বসতঘরের টিন খুলে নিলো ছেলের পাওনাদাররা

 প্রকাশ: ৩১ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

মো. রাকিব হোসাইন রনি, (লক্ষ্মীপুর) :

‘আবুল কাশেম আমারা বড় ছেলে। বৌ নিয়ে থাকে আলাদা। তার কাছে স্থানীয় ইউনুস, আবুল কালাম ও রবিন নামে তিন যুবক টাকা পাবে বলে দাবি করে আসছে। কিন্তু কিশের টাকা বা কত টাকা পাবে সেটি আমি জানি না। আর এ টাকার জন্য প্রায়ই গালমন্দ ও মারধরের হুমকি শুনতে হয়েছে আমাকে। সর্বশেষ গত শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) আমার বসত ঘরের টিনের চাল খুলে ফেলে পাওনাদার দাবিকৃত ওই তিন যুবক। রবিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে কথাগুলো কান্নাজড়িত কণ্ঠে প্রতিবেদককে বলেছেন রিক্সাচালক আবদুর রহিম (৭৫) নামে এক বৃদ্ধ।

আবদুর রহিম লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের দক্ষিন মজুুপুর গ্রামের ইসহাক ব্যাপারি বাড়ির বাসিন্দা। তাঁর দুই ছেলে এক মেয়ে। অভিযুক্তরা হলেন, একই এলাকার সিরাজের ছেলে ইউনুস, আলীর ছেলে আবুল কালাম ও খোকনের ছেলে রবিন।

আবদুর রহিম বলেন, ছেলের অপরাধের জন্য বাবাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে, এটা কেমন বিচার। আমি রিক্সা চালিয়ে কোনরকম স্ত্রী, স্কুল পড়–য়া দুই নাতনি ও প্রতিবন্ধী ছোট ছেলেকে নিয়ে থাকি। কার সাথে ব্যবসা রয়েছে তাও জানা নেই। তাকে না পেয়ে টাকা পাওয়ার দাবী করে তারা সন্ত্রাসীয় নিয়ে হামলা করে আমার ঘরের টিনের চাল খুলে ফেলে। এখন চাল (ছাউনি) বিহীন ঘরে গত তিনদিন মানবেতর ভাবে বসবাস করছি। রাতে কুয়াশায় ভিজতে হচ্ছে আবার উপরে ছাউনি না থাকায় দিনে রৌদে কষ্ট পেতে হচ্ছে।

তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত আদালত কিংবা থানায় কোন অভিযোগ করেননি ওই রিক্সাচালক। কারন হিসাবে তিনি বলছেন, মামলা করতে টাকা লাগে, সে টাকাতো নাই আমার কাছে। তাছাড়া, ঘটনাটির পর থেকেই আমি মানসিক ও শারিরীকভাবে ভেঙে পড়েছি। এতে কিছুটা অসুস্থতা বোধও করছি। তাই গত তিনদিনই রিক্সা নিয়ে বের হতে পারেননি। অপরদিকে, অভিযুক্তরা স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালি লোক হওয়ায়, ভয়েও রয়েছেন তিনি।
স্থানীয় ও প্রতিবেশিরা জানায়, রিকশাচালক আবদুর রহিমের ছেলে কাশেম চট্টগ্রামে মাছের ব্যবসা করতেন। ব্যবসার জন্য ইউনুস, কালা ও রবিনের কাছ থেকে টাকা ধার নেয়। ব্যবসায় লোকসান হওয়ায় কাশেম গা ঢাকা দেয়। কিন্তু পাওনা টাকা উদ্ধারের জন্য আইনের আশ্রয় না নিয়ে নিজেরাই কাশেমের বাড়িঘরে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে বৃদ্ধ রহিমের বশতঘরের টিন খুলে পেলে তারা। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চান তারা।

স্থানীয় চা দোকানদার হাসেম বলেন, এলাকায় ব্যবসার কথা বলে কাশেম কয়েকজনের কাজ থেকে টাকা নিয়েছে। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় কাশেমের ঘরে কয়েকদিন পূর্বে তালাও দেয় পাওনাদাররা। তাতেও টাকা না দেওয়ায়, কাশেম ও তাঁর বাবার বসত ঘরের টিনের চাল খুলে ফেলে তারা। আর এসব করা হয়েছে সালিশদারদের সিদ্ধান্তে। ওই সালিশি বৈঠকে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল করিম নিশানও উপস্থিত ছিলেন বলে জানা তিনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত পাওনাদারদের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন দিয়েও লক্ষ্মীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. জসিন উদ্দিন বক্তব্য জানা যায়নি।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: