শিরোনাম

South east bank ad

শেকলে বাধা মৌসুমী এখন স্বাভাবিক জীবনে

 প্রকাশ: ২৬ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

ফয়সাল আহম্মেদ, (গাজীপুর) :

গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর গ্রামের হতদরিদ্র আব্দুল খালেকের মেয়ে মৌসুমী আক্তার(১৪)। অভাব আর দারিদ্রতার মধ্যেও বেড়ে উঠছিল। চতুর্থ শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়াও করেছিল। বাবার দন্যদশা ও বনিবনা না হওয়ায় মা হয়েছিলেন সংসার ত্যাগী। দারিদ্রতার কষাঘাতে সমাজব্যবস্থায় পিষ্ট মৌসুমী মায়ের অভাব মেনে নিতে পারছিলেন না। কান্নাকাটি করতে করতে একটি সময় মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তাই পায়ে পড়েছিল শেকল। তিন বছর ধরে শেকল বন্দি ও চিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে ভুগছিলেন মেয়েটি।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে সংবাদটি পৌছে গাজীপুর-৩আসনের সাংসদ গাজীপুর জেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন সবুজের কাছে। তিনি এই কিশোরীর চিকিৎসার দায়িত্ব নেন। স্থানীয় সাংসদের উদ্যোগে গাজীপুর ও রাজধানীর ঢাকায় চিকিৎসা শুরু হয়। আর এতেই কিশোরী মৌসুমী ফিরছে শেকলমুক্ত জীবনে।

মঙ্গলবার (২৬অক্টোবর) বিকেলে এই কিশোরীকে দেখতে স্থানীয় সাংসদ হাজির হন তার বাড়ীতে। এসময় কিশোরীর পরিবারকে বস্ত্র ও নগদ অর্থ প্রদান করেন। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের রাজনৈতিক দর্শনই হচ্ছে মানবিক হওয়া ও মানুষের পাশে দাড়ানো। বঙ্গবন্ধু আমাদের আদর্শ হিসেবে সে শিক্ষা দিয়ে গেছেন। আর দলীয় সভাপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের সে পথ দেখিয়ে যাচ্ছেন। আমাদের সভ্য সমাজে কোন মানুষের পায়ে শেকল থাকতে পারেনা। বিষয়টি দেখে আমি থমকে গিয়েছিলাম। তাই গত ০৪আগষ্ট শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নেই। চিকিৎসায় মেয়েটি সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছে এটা আমাদের সবার জন্য একটি ভালো খবর।

তিনি আরো বলেন, মেয়েটিকে সুস্থ করেই শুধু তার দায়িত্ব শেষ হয়ে যাচ্ছে না। তিনি এই মেয়েটিকে একজন সাবলম্ভী নারী হিসেবে গড়ে তোলারও দায়িত্ব নিয়েছেন।

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রনয় ভূষন দাস বলেন, স্থানীয় সাংসদের উদ্যোগে এই কিশোরীর চিকিৎসা প্রথমে গাজীপুর ও ঢাকার জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটে করা হয়। সেখানে ১৯দিন চিকিৎসার পর তার উন্নতি হওয়ায় তাকে বাড়ীতে পাঠানো হয়। সে বর্তমানে ৭০ভাগের উপর সুস্থ হয়েছে, চিকিৎসকের ফলোআপে রয়েছে সে। এখন আর তাকে শেকলে বেধে রাখতে হয় না। তার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার স্থানীয় সাংসদ বহন করেছেন।

মৌসুমীর বাবা আব্দুল খালেক বলেন, তার দুই মেয়ে। মৌসুমী বড়। দারিদ্রতার কারণে তার স্ত্রী চলে যাওয়ায় কান্নকাটি করে সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে। পরে তাকে শেকলে বেধে রাখতে হয়েছিল। অভাবের কারণে তার চিকিৎসাও করানো যাচ্ছিল না। অবশেষে স্থানীয় সাংসদের উদ্যোগে চিকিৎসার পর তার মেয়ে সুস্থ হয়ে উঠছে। শেকলও খুলে দেয়া হয়েছে। তার মেয়েকে লেখাপড়া করিয়ে ভালো মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার স্বপ্নও তিনি এখন দেখতে পারছেন।

স্থানীয় সাংসদের সাথে উপস্থিত ছিলেন, শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ প্রনয় ভূষন দাস, শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ন আহবায়ক হুমায়ুন কবির হিমু, গাজীপুর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আজহার তালুকদার, সাধারন সম্পাদক শহিদ মিয়া প্রমুখ।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: