‘নির্মাণত্রুটির’ কারণে ফাটল দেখা দিয়েছে : চসিক মেয়র
স্টাফ রির্পোটার
চট্টগ্রাম নগরের বহদ্দারহাটে এম এ মান্নান উড়ালসড়কের র্যাম্পের একটি পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। নগরের কালুরঘাট সড়কমুখী র্যাম্পের পিলারে এই ফাটল দেখা দেয়। ফাটল দেখা দেওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে গতকাল সোমবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে উড়ালসড়কের এই অংশে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। উড়ালসড়কের র্যাম্পের পিলারেরে এই ফাটল ‘নির্মাণত্রুটির’ কারণে দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। অন্যদিকে নকশাগত ত্রুটি বা নির্মাণত্রুটির কারণে এই ফাটল দেখা দিতে পারে মনে করেন সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন মেয়র রেজাউল। এ সময় তার সঙ্গে সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। আজ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মেয়র রেজাউল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি তো প্রকৌশলী নই। ফাটলের সুনির্দিষ্ট কারণ আমি বলতে পারব না। সাধারণভাবে যেটা বলতে চাই, নিশ্চয়ই নির্মাণে ত্রুটি আছে। যার ফলে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। এখানে প্রকৌশল দৃষ্টিকোণ থেকে কী হয়েছে না হয়েছে, এটা আমার চেয়ে আমাদের প্রকৌশলীরা ভালো বলতে পারবেন। তারা কারিগরি বিষয়ে ভালো বোঝেন।’
বর্তমান অবস্থায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘ইতিমধ্যে উড়ালসড়কের সংশ্লিষ্ট অংশে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। উড়ালসড়ক ও র্যাম্প নির্মাণ করেছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ)। তাই এ ব্যাপারে শিগগিরই ব্যবস্থা নিতে আজ সিডিএকে চিঠি দেওয়া হবে।’
র্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দেওয়ার ঘটনায় মেয়র রেজাউল অবাক হয়েছেন জানিয়ে বলেন, এতে যেকোনো সময় একটি দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। কারণ, এই উড়ালসড়কে আগেও একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। গার্ডার পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল। ফাটল কী কারণে দেখা দিয়েছে, তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে জানান মেয়র রেজাউল। তিনি বলেন, এ ব্যাপারে সিডিএ ব্যবস্থা নেবে। যেসব ঠিকাদার কাজ করেছেন, তাদের কোনো নির্মাণত্রুটি আছে কি না, তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিটি করপোরেশনের সহযোগিতা চাইলে পূর্ণ সহযোগিতা করা হবে।
উল্লেখ্য, যানজট নিরসনে সিডিএ নগরের শুলকবহর থেকে বহদ্দারহাট পর্যন্ত এক কিলোমিটার এলাকায় এম এ মান্নান উড়ালসড়ক নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। ২০১০ সালের জানুয়ারিতে উড়ালসড়কটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ চলাকালে ২০১২ সালের নভেম্বরে গার্ডার ধসে ১৪ জন নিহত হন। উড়ালসড়কটি উদ্বোধন করা হয় ২০১৩ সালের অক্টোবরে। উদ্বোধনের পর উড়ালসড়কটি কার্যকর না হওয়ায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আরাকান সড়কমুখী র্যাম্প নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সিডিএ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে দিয়ে এ কাজ করানো হয়।
নির্মাণকাজে যুক্ত থাকা প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সের সঙ্গে কথা বলেছেন জানিয়ে প্রধান প্রকৌশলী বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, র্যাম্প মূল নকশায় ছিল না। পরে যুক্ত করা হয়েছে। এ জন্য নকশায় ত্রুটি থাকতে পারে। রফিকুল ইসলাম বলেন, এটি সিডিএ নির্মাণ করেছে। সমস্যার সমাধানে তারাই ব্যবস্থা নেবে। কী পরিমাণ লোড নিতে পারবে, সেটা তারাই হিসাব করে এটি নির্মাণ করেছে। গাড়ি চলাচল না থাকায় ফাটল বড় হওয়ার আশঙ্কা নেই। আর নিচে চলাচল করা গাড়ির কম্পনের কারণে ফাটল বড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
তবে র্যাম্প নির্মাণে কোনো ধরনের নকশা বা কাজের ত্রুটি ছিল না বলে দাবি করেছেন সিডিএর প্রকল্প পরিচালক ও নির্বাহী প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান। তিনি বলেন, ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে ফাটল দেখা দিতে পারে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে তা মেরামত করা হবে।