লেবুখালী ফেরিঘাটের শতাধিক ব্যবসায়ী বেকার
এম.মিরাজ হোসাইন, (বরিশাল) :
পায়রা সেতুতে যান চলাচল শুরু হওয়ায় অচল হয়ে গেছে পায়রা নদীতে যুগ যুগ ধরে চলাচল করা ফেরিগুলো। ফেরি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বরিশালবাসীর দুর্ভোগের লাঘব হলেও কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এতে ওই ফেরিঘাটকে কেন্দ্র করে জীবিকা নির্বাহকারী শতাধিক ফেরিওয়ালা ও টং দোকানদার। ফেরিঘাটের দুই পাশের দোকানদারদের বেশ কয়েকজন সেতুর প্রান্তগুলোতে ব্যবসা শুরু করলেও অধিকাংশ পড়েছেন বিপাকে। অর্থ সংকটে ফের ব্যবসা শুরু করতে না পারায় শংকার মধ্যে দিন পার করছেন তারা। তাই সরকারি সহায়তায় আত্মকর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন বেকার অতিক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, যুগের পর যুগ কর্মব্যস্ত থাকা লেবুখালী ফেরিঘাটে সুনসান নিরবতা। পায়রা সেতু উদ্বোধনের ফলে এই ফেরিঘাট রূপ নিয়েছে ভোগান্তির উদাহরণে। দক্ষিণাঞ্চলবাসীদের মনে যখন আনন্দের উদ্বেল ঠিক সেই মুহূর্তে বেকার হয়েছেন অনেকেই। এদের মধ্যে কেউ কেউ সেতুর দুই প্রান্তে নতুনভাবে ব্যবসা শুরু করলেও অনেকেই অর্থসংকটে তা পারছেন না। তাই সরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা।
সড়ক ও জনপথের ফেরিবিভাগের দুই নম্বর ফেরির চা বিক্রেতা নুরুজ্জামান ফরাজী জানান, তার বাবা এই ফেরিঘাটে চা বিক্রি করতেন। ফেরি বন্ধ হওয়ার দিন পর্যন্ত ৩৫ বছর ধরে তিনিও ওই ঘাটে চা-পান বিক্রি করেছেন। সেতু চালু হওয়ায় এখন বেকার হয়ে পড়েছেন। পরিবারের সদস্যদের মৌলিক চাহিদা পূরণের শংকা প্রকাশ করেছেন তিনি। নুরুজ্জামানের মত একই অবস্থা আচার বিক্রেতা মোহাম্মদ মিলনের। তিনিও ১২ বছর ধরে ওই ঘাটে আচার বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। সেতুর উদ্বোধন হওয়ায় আনন্দিত হলেও আজ তিনি বেকার। তাই সরকারি উদ্যোগে আত্মকর্মসংস্থানের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
বেকারত্বে ওরা ৪০ জনও : লেবুখালী ঘাটে মোট ফেরি ৬ টি। ৪ টা ফেরি সব সময় চলতো। সব মিলিয়ে এখানে সরকারি বাদে ৪০ জনের মত স্টাফ ছিল। যাদের এই ফেরির উপরই নির্ভর করেই সংসার চলতো। দুমকি উপজেলার বাসিন্দা দুলাল হাওলাদার লেবুখালির ফেরিতে কাজ করছেন ১৬ বছর ধরে। তিনি জানান, আমরা এই ফেরির উপর নির্ভর ৪০টি লোক কিসের মধ্যে পড়ছি আল্লাহ মাবুদ ছাড়া কেউ জানে না। কেমনে চলমু, কেমনে কি করমু বুঝিনা। বউ কইছে ঢাকায় যাইতে, হেয়ানে যাইয়াও বা কি করমু। দুইটা ছেলে, ওগো পড়ালেখাও বা কেমনে করামু।
ফেরিতে ডিউটিরতরাই শুধু নয়, কর্মসংস্থানের অভাবে পড়েছেন লেবুখালীর দুই পারের ফেরিঘাটের শতাধিক দোকানদার। সবার মুখেই বিষন্নতার ছাপ। নতুন করে খোজার চেষ্টায় নতুন কাজ।