নৌকায় ঠাঁই না পেয়ে আ.লীগের ৪ চেয়ারম্যান এখন বিদ্রোহী প্রার্থী!
আমিনুর ইসলাম জুয়েল, (রংপুর) :
রংপুরের পীরগাছায় দ্বিতীয় ধাপে আগামী ১১ নভেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এরই মধ্যে ৮টি ইউনিয়নে দলীয় চেয়ারম্যান প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু ওই তালিকায় আওয়ামীলীগের বর্তমান ছয় চেয়ারম্যানের চার জনেরই ঠাঁই হয়নি।
গত ইউপি নির্বাচনে এসব ইউনিয়নে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে সাত জন ও বিএনপির একজন নির্বাচিত হয়েছিলেন। এদের মধ্যে আওয়ামীলীগের একজন চেয়ারম্যান মৃত্যুবরণ করেছেন। দুইজন এবারও মনোনয়ন পেয়েছেন। বাকিরা দলীয় মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার পারুল ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আবুল কালাম আজাদ গত নির্বাচনে আওয়ামীলীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এবারও তিনি প্রার্থী হতে আবেদন করেছিলেন কিন্তু তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ওই ইউপিতে মনোনয়ন পেয়েছেন তোফাজ্জল হোসেন। আবুল কালাম আজাদ মনোনয়ন বঞ্চিত হলেও বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ইটাকুমারী ইউনিয়নে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আবুল বাশার। ওই ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের প্রধান বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালাচ্ছেন।
তাম্বুলপুর ইউনিয়নে বর্তমান চেয়ারম্যান রওশন জমির রবুকে এবার দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। ওই ইউনিয়নে প্রথমে দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন বিদ্যুৎ কুমার রায়। কিন্তু আওয়ামীলীগের স্থানীয় কোন পদে না থাকাসহ নানা অভিযোগে তাকে পরিবর্তন করে শাহীন সরদারকে দলীয় প্রার্থী করা হয়েছে। বর্তমান চেয়ারম্যান রওশন জমির রবুসহ আওয়ামীলীগের বেশ কয়েকজন নেতা ওই ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন।
কান্দি ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ও বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খানের এবার নৌকায় ঠাঁই হয়নি। ওই ইউপিতে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন আমিনুল ইসলাম রাজ্জাক। তবে তিনি দলীয় কার্যক্রমে সক্রিয় নন এমন অভিযোগ তুলে প্রতিবাদ সভার মাধ্যমে নজরুল ইসলাম খানকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
কৈকুড়ী ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলাম ও অন্নদানগর ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম এবারও দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন। তবে অন্নদানগর ইউনিয়নে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মনোনয়ন না পেয়ে নিজেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করেছেন। ছাওলা ইউপিতে আওয়ামীলীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত চেয়ারম্যান আব্দুল হাকিম সরকার সম্প্রতি মৃত্যুবরণ করেছেন। তার মৃত্যুর পর ইউপি সদস্য আব্দুল হাকিম ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি এবার দলীয় প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছেন।
কান্দি ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘এবার আমাকে দলীয় মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। আমার সমর্থক ও দলীয় নেতাকর্মীরা প্রতিবাদ সভায় আমাকে জোর করে প্রার্থী ঘোষণা করেছেন।'
তাম্বুলপুর ইউপি চেয়ারম্যান রওশন জমির রবু বলেন, আমি দলীয় প্রার্থী হতে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু দেওয়া হয়নি।’
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মিলন বলেন, ‘নৌকার বিপক্ষে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিতে হবে।’