বগুড়ায় দুর্গাপূজায় বউ মেলা!
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দুর্গাপূজায় উৎসব মুখর পরিবেশে উদযাপিত হলো প্রাচীনতম ‘বউ মেলা’। শুক্রবার ইছামতি নদীর তীরে সরকারপাড়ায় অনুষ্ঠিত এই মেলায় হাজারও মানুষের সমাগম ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবছর দুর্গা প্রতিমা বিসর্জন উপলক্ষে মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দুর্গাপূজায় বাড়তি আনন্দ দেয় এই বউ মেলা।
বউ মেলা বলে কথা। তাই বিভিন্ন এলাকা থেকে আসেন বউ-ঝি আর মায়েরা সব ব্যস্ততাকে পিছনে ফেলে। কেননা বছরের একটি মাত্র দিনই যে বরাদ্দ। বেচাকেনা থেকে শুরু করে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাত আর প্রিয়জনের সঙ্গে মধুর সময় পার করা। সবই যেন এই মেলার অনন্য উপকরণ। এ মেলায় নেই কোন চাকচিক্য কিংবা আধুনিক সাজসজ্জা। কিন্ত গ্রামীন আবহে সত্যিকারের আনন্দ যাকে বলে তারই স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি যেন এই মেলা। যার বেশীর ভাগ দর্শনার্থী নারী। এ জন্য এটি বউ মেলা নামে পরিচিত।
মেলার মুল অংশে পুরুষদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। মেলায় সব ধর্মের মানুষের মহামিলন ঘটে। মেলায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক গভীর মেলবন্ধনের সৃষ্টি হয়। মেলায় নারীরা আসেন কেনাকাটা করতে যা অনেকেটাই রেওয়াজে পরিণত হয়েছে এ অঞ্চলে। মেলায় হরেক রকম পণ্যের পসরা সাজিয়েছেন বিক্রেতারা। বিক্রি হচ্ছে রেশমী চুরি, আলতা, ফিতে, টিপ, প্রসাধনী, শিশুতোষ খেলনাসহ নিত্যদিনের ব্যবহার্য সামগ্রী। সনাতন ধর্মাবলম্বী ছাড়াও অনেকে ঘুরতে এসেছেন একদিনের এই মেলায়।
মেলায় এসেছেন মৌ ভৌমিক, রিয়া ভৌমিক, পূজা সরকার। তারা জানান, পুরানো ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন সরকারপাড়া বউ মেলাটি। এখনও কত দর্শনার্থী। আমরা আসি ঘুরতে আর ঐতিহ্যের গরম জেলাপি নিতে।
মেলায় আসা তিথী রানী ভট্টাচার্য্য, বিথী রানী ভট্টাচার্য্য, ও সনি সরকার জানান, পুরনো স্মৃতির পটভূমিতে নতুন করে আঁচড় কাটে মেলাটি। তাই বছর ঘুরে এই দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকি। বৈশাখ আর পূজা ছাড়া এমন আমেজ তো পাওয়া যায় না।
মেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক আনন্দ কুমার সরকার জানান, বউ-ঝিরা কেনাকাটা করতে আসেন বলেই এর নাম দেওয়া হয়েছে বউ মেলা। মেলার মূল অংশে পুরুষ প্রবেশ নিষিদ্ধ। শত বছরেরও অধীক সময় ধরে এই মেলার আয়োজন করে আসছেন।