মেলান্দহে সেতু না থাকায় চরম দূর্ভোগ
শামীম আলম, (জামালপুর) :
জামালপুর জেলার মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার সড়কে একটি সেতু না থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়েছে ওই এলাকার প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ। প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করছে মানুষ। দ্রুত এলাকাবাসীর দাবী বাস্তবায়নের আশ্বাস উপজেলা প্রশাসনের।
জানা যায়, জেলার মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়া এলাকার সড়কে একটি স্থায়ী সেতু ছিলো। সেতুটি নির্মাণের ১বছরের মাথায় বন্যায় দেবে গেছে। ১৯৯৭সনে বন্যার পানির স্রোতের তোড়ে সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে সেতুটি দেবে গেছে। সেতুটি দেবে যাওয়ায় ওই এলাকার মানুষ নয়াপাড়া-চরগোবিন্দি সড়ক দিয়ে যাতায়াতে চরম দূর্ভোগে পড়েছে। পরে স্থানীয় লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা দেবে যাওয়া সেতুর জায়গায় একটি বাঁশের সাঁকো তৈরি করেছে। বর্ষা মৌসুমে নৌকা আর শুকনো মৌসুমে বাঁশের সাঁকো এখন ওই এলাকার মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন। দীর্ঘ প্রায় ২যুগ থেকে তিন উপজেলার প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র অবলম্বন ওই বাঁশের সাঁকো। নয়াপাড়া-চর গোবিন্দি বাজার সড়কে একটি স্থায়ী সেতু এখন সময়ের দাবী।
শুক্রবার সরেজমিনে চর মাহমুদপুর নয়াপাড়া এলাকা গিয়ে দেখা যায়, মেলান্দহ উপজেলার মাহমুদপুর নয়াপাড়া এলাকায় নয়াপাড়া-চর গোবিন্দি বাজার সড়কে একটি সেতুর অভাবে চরম দূর্ভোগে রয়েছে ওই এলাকার প্রায় ১৫টি গ্রামের মানুষ। নয়াপাড়া-চর গোবিন্দি বাজার সড়কে প্রতিদিন প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। ওই সড়কে যাতায়াত করে মেলান্দহ, মাদারগঞ্জ, ইসলামপুর উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার কিছু মানুষ। ওই সড়কে প্রতিদিন চর গোবিন্দি, কাজলা, কাটমা, মানিকদার, বড়বন্ত, চরখাবিলিয়া, মাইজবাড়ি, নব্বইয়ের চর, কয়েলাকান্দিসহ তিন উপজেলার প্রায় ১৫টি এলাকার মানুষ। এছাড়াও ওই সড়কে প্রতিদিন পার্শ্ববর্তী বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলার মানুষও যাতায়াত করে। ওই সড়কে একটি বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন যাতায়াত করে প্রায় ১০-১২হাজার মানুষ। মাহমুদপুর ইউনিয়নের নয়াপাড়ার বাঁশের সাঁকোর পশ্চিম পার্শ্বে রয়েছে চর গোবিন্দি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদ্রাসা ও উচ্চ বিদ্যালয়। সেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। বন্যার সময় নৌকা আর শুকনো মৌসুমে নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করে ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা। সেতু না থাকায় সবচেয়ে বেশি দূর্ভোগে পড়তে হয় হাসপাতালে রোগী নেয়ার সময়। এছাড়াও বয়স্ক মানুষের নড়বড়ে বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতেও সমস্যা হয়। কোন যানবাহন ওই বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে না পাড়ায় রোগী নিয়ে চরম দূর্ভোগে পড়তে হয় ওই এলাকার মানুষদের। ওই এলাকার কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পূর্ণ বাঁশের সাঁকো দিয়ে উপজেলা শহরসহ জেলা শহরে নিতে বিপাকে পড়তে হয় কৃষককে। বাঁশের সাঁকো দিয়ে কৃষক তাঁর উৎপাদিত কৃষি পূর্ণ সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পেড়ে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তাই ওই এলাকার মানুষের দাবি নড়বড়ে বাঁশের সাঁকোর জায়গায় একটা স্থায়ী সেতু নির্মানের।
চর মাহমুদপুর নয়াপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী মো.শফিকুল ইসলাম জানান, বাঁশের সাঁকো দিয়ে যাতায়াত করতে খুব সমস্যা হয়। জেলা-উপজেলা শহর থেকে দোকানের মালামাল নিয়ে বিভিন্ন যানবাহন দিয়ে বাঁশের সাঁকোর পূর্ব পাড়ে এসে দোকানের সেই মাল নামিয়ে কাঁধে করে বাঁশের সাঁকো পাড় হয়ে পশ্চিম পাড়ে গিয়ে আবার মালামাল গাড়িতে তুলতে হয়। সেই গাড়ি দিয়ে মালামাল নিতে হয় দোকানে। এভাবে মাল উঠা নামা করার কারনে মালের ক্ষতির পাশাপাশি ব্যবসায় লোকশান গুনতে হচ্ছে। দ্রুত বাঁশের সাঁকোর জায়গায় একটি স্থায়ী সেতু খুব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।
মেলান্দহ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শফিকুল ইসলাম জানান, বাঁশের সাঁকো দিয়ে ওই এলাকার মানুষের চলাচলে দুর্ভোগ হচ্ছে।