বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হবে : টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী
মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-২ উৎক্ষেপণ, ফাইভ-জি নেটওয়ার্ক চালু এবং তৃতীয় সাবমেরিন ক্যাবল সংযোগ স্থাপনে যে প্রতিশ্রুতি নির্বাচনী ইশতেহারে জাতিকে দেওয়া হয়েছিল ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ এই তিনটি প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন শুরু করেছে এবং নির্ধারিত সময়ের্ মধ্যেই তা শেষ হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।তিনি বলেন, মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট -১ উৎক্ষেপণের মাধ্যমে আমরা বিশ্বের সাতান্নতম স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণকারি দেশের গৌরবই কেবল অর্জন করিনি বরং গত দু‘বছরে আমাদের নিজেদের ছেলেদের কারিগরি সহায়তায় কোন প্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি ছাড়াই নিরবচ্ছিন্নভাবে স্যাটেলাইট –সেবা প্রদান অত্যন্ত গর্বের বিষয় বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।
মন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশ স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড-বিএসসিএল আয়োজিত 'বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর মাধ্যমে দেশের বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলসমূহের সম্প্রচার শুরুর ২য় বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা'য় এসব কথা বলেন।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, অনলাইনে যুক্ত হয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব মো. আফজাল হোসেন এবং এসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স-এটকো সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিএসসিএল-এর চেয়ারম্যান ড. শাহজাহান মাহমুদ।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর জননেত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা অনুযায়ী ২০২১ সাল বাংলাদেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে রূপান্তরের বছর উল্লেখ করে বলেন, বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, আইটিইউ ও ইউপিইউ-এর সদস্যপদ অর্জন,টিএন্ডটি বোর্ড প্রতিষ্ঠা, প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষা প্রবর্তনসহ বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের বীজ বপণ করে গেছেন। বীর মুক্তিযোদ্ধা জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শত্রুরা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পথকে থমকে দেয়। ২১ বছরের জঞ্জাল ও পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের শাসনামলে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর রোপন করা বীজটিকে চারা গাছে রূপান্তর করেছেন। কম্পিউটার প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত জনাব মোস্তাফা জব্বার বলেন, দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রজ্ঞাবান রাজনীতিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোনের মনোপলি ভেংগে দিয়ে ৪টি মোবাইল কোম্পানিকে লাইসেন্স প্রদান, কম্পিউটারের ওপর থেকে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহার, ভি-সেটের মাধ্যমে ইন্টারনেট প্রবর্তন, তথ্য প্রযুক্তি বিশেষ করে সফটওয়্যার রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় করণীয় নিরূপনে ড. জামিলুর রেজার নেতৃত্বে কমিটি গঠন করেন। তিনি মহাকাশে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে স্পারসোর মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করার উদ্যোগ গ্রহণকরেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত বার বছরে ডিজিটাল প্রযুক্তি দুনিয়ায় বাংলাদেশ অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। কোভিডকালে বাংলাদেশের মানুষের সচল জীবনযাত্রা এবং প্রবৃদ্ধি অর্জনে বৈশ্বিক অবস্থানের মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিলো ডিজিটাল সংযোগ বলে উল্লেখ করেন ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলা ভাষার উদ্ভাবক জনাব মোস্তাফা জব্বার।
টিভি চ্যানেল মালিকদের এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে সম্প্রচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, 'আমরা সবাই নিজ দেশের স্যাটেলাইট ব্যবহার করতে পেরে গৌরব অনুভব করি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অচিরেই দেশের দ্বিতীয় স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন করার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। মন্ত্রী জনাব মোস্তফা জব্বার বিএসসিএল এর সাথে টেলিভিশন চ্যানেলগুলোর সাথে সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। আলোচনা শেষে সংক্ষিপ্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়।