গোদাগাড়ী পৌরসভা উপ-নির্বাচনে একে একে তিন স্বতন্ত্র মেয়রপ্রার্থীর ভোট বর্জন
আমজাদ হোসেন শিমুল, (রাজশাহী ব্যুরো) :
রাজশাহীর গোদাগাড়ী পৌরসভার মেয়র পদের উপ-নির্বাচনে একে একে সব স্বতন্ত্র প্রার্থীই ভোট বর্জন করেছেন। সবশেষ বৃহস্পতিবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে ফেসবুক লাইভে এসে ভোট বর্জন করেন সদ্য প্রয়াত মেয়র মনিরুল ইসলামের স্ত্রী ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে- গোদাগাড়ী পৌরসভা উপ-নির্বাচন বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত চলে। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ১৬টি কেন্দ্রে মোট ৩২ হাজার ৯০৫ জন ভোটারের মধ্যে ইভিএমএ চলা এই নির্বাচনে ২১.৬ শতাংশ ভোট পড়ে বলে জানান নির্বাচনের সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা মশিউর রহমান।
এদিকে নির্বাচনের প্রচারণার দিন থেকে নৌকার প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপর তিন প্রার্থী পোস্টার ছেড়াসহ নানা রকম হুমকির অভিযোগ করে আসছেন। এসব অভিযোগের ধারাবাহিকতায় গত বুধবার দুপুর জামায়াত নেতা ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী আমিনুল ইসলাম ভোট বর্জন করেন। তিনি জগ প্রতীকে নির্বাচনে নেমেছিলেন। একই অভিযোগ তুলে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে ভোট বর্জন করেন বিএনপি নেতা ও স্বতন্ত্রপ্রার্থী গোলাম কিবরিয়া।
ফেসবুক লাইভে এসে স্বতন্ত্র প্রার্থী জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর থেকেই তিনি অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে যেসব পোস্টার-ব্যানার-ফেস্টুন লাগিয়েছিলেন, তা নৌকা প্রতীকের সমর্থকরা প্রশাসনের সহায়তায় ছিঁড়ে ফেলে। থানায় অভিযোগ করলে তাঁরা দেখিয়ে দেয় ইউএনওকে, ইউএনওর কাছে গেলে বলে উপজেলা রিটার্নিং অফিসারের কাছে যেতে। আর তাঁকে বললে তিনি বলেন, জেলা পর্যায়ে নির্বাচন কর্মকর্তাকে বলেন। এভাবে তাঁরা হয়রানি করেছেন। কিন্তু কেউই সহযোগিতা করেননি। তিনি আরও জানান, তাঁর প্রচারণায় বাধা দেওয়া হয়েছে। মাইক ভাঙচুর করা হয়েছে। সমর্থকদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে। সপরিবারে তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়েছে।
তিনি আরও জানান, তিনি ১৬টি কেন্দ্রে এজেন্ট দিয়েছেন। কিন্তু কোনোটাতেই তাঁর কোনো এজেন্টকে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। ১ নম্বর ওয়ার্ডের কেন্দ্রে তিনি গিয়েছিলেন। শাহীন, জামরুল ও কমিশনার জাব্বারের নাম উল্লেখ করে তিনি বলেন, এদের বাহিনী নিয়ে তাঁকে অ্যাটাক করেছেন এবং তাঁকে কেন্দ্র থেকে ঠেলে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বিএনপি মেয়রপ্রার্থী গোলাম কিবরিয়া বলেন, সকালের দিকে পরিস্থিতি দেখে তিনি সিদ্ধান্ত নেন এই ভোট তিনি করবেন না। কোনো কেন্দ্রে তাঁর এজেন্ট নেই। আওয়ামী লীগ থেকে তাঁর প্রতীক মোবাইল ফোনের এজেন্ট বানিয়ে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এ কারণে তিনি তাঁর সমস্ত সমর্থকদের ভোট বর্জন করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং নিজেও এই ভোট বর্জন করেছেন। তিনি দাবি করেন, যতগুলো ভোট পড়েছে সকাল থেকে, তা জোর করেই নিয়েছে। তাই এই ভোট তিনি মানেন না। তিনি পুনরায় নির্বাচন চান।
গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থীদের ভোট বয়কটের খবর জানেন না। এসব বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে পরে জানানো হবে জানান তিনি।