শিরোনাম

South east bank ad

আমন চাষে পোকা মাকড়ের কামড়ে বিবর্ণ কৃষকের স্বপ্ন!

 প্রকাশ: ০৬ অক্টোবর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :

বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় রোপা আমনের ক্ষেতজুড়ে নানা রোগবালাইয়ের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কৃষককে এসব রোগবালাই দমনে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ইতিমধ্যে মাজরা ও খোলপচা রোগ নিয়ন্ত্রণে এলেও নতুন করে কারেন্ট পোকার আক্রমণ কৃষকদের দিশেহারা করে তুলেছে। দ্রুত এসব পোকার আক্রমণ দমন করা না গেলে ফলন অন্য বছরের চেয়ে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।

বুধবার (৬ অক্টোবর) উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ভুক্তভোগী একাধিক কৃষকের সঙ্গে কথা বললে ফসলের মাঠের এসব চিত্র ওঠে আসে।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে এই উপজেলায় ২০ হাজার আটশ’ হেক্টর জমিতে রোপা আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও তা ছাড়িয়ে গেছে। চাষ হয়েছে ২২ হাজার দুইশ’ হেক্টর। এসব জমিতে বিনা-৭, ব্রি ধান-৪৯, ব্রি ধান বিআর-১১, স্বর্ণা-৫, কাটারীভোগ, ব্রি-ধান-৩২ ও উচ্চ ফলনশীল রকমারি জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। এরইমধ্যে জমিতেও কমবেশি পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। কিন্তু তেমন শঙ্কার কোনো কারণ নেই। সব ধরণের রোগই নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে বলেও সূত্রটির দাবি। তবে বাস্তব চিত্র সম্পুর্ণ ভিন্ন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, এই উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে এসব জাতের ধান চাষ করা হয়েছে। রোপা-আমনের ক্ষেতজুড়েই রয়েছে বিভিন্ন রোগবালাই। যা দমন করতে প্রতিনিয়তই কীটনাশক প্রয়োগ করতে হচ্ছে কৃষকদের। এরপরও নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বিশেষ করে কারেন্ট পোকা নিয়ে কৃষকরা বড় দুশ্চিন্তার মধ্যে রয়েছেন।
কথা হয় কুসুম্বী ইউনিয়নের আলতাদীঘি বোর্ডের হাট এলাকার চাষী মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ১৫ বিঘা জমিতে আমন চাষ করেছেন। ধানচাষের মাঝামাঝি সময়ে এসে জমিতে মাজরা ও খোলপচা রোগের আক্রমণ হয়। তিন থেকে চার দফা কীটনাশক প্রয়োগের ফলে এসব রোগের আক্রমণ কিছুটা কমে গেছে। কিন্তু নতুনভাবে দেখা দিয়েছে কারেন্ট পোকার আক্রমণ। যা কোন ভাবেই দমাতে পারছেন না তিনি।

সাধুবাড়ী গ্রামের ফজলুল করিম উকিল ও মামুরশাহী গ্রামের শফিকুল ইসলাম হাজি বলেন, এবার আমন মৌসুমের শুরু থেকেই তুলনামূলক পোকার আক্রমণ একটু বেশি। তাই রোগবালাই দমনে দফায় দফায় কীটনাশক প্রয়োগ করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। ইতিমধ্যে অন্যান্য রোগ কমে গেলেও কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। এই পোকা দমনে একাধিকবার কীটনাশক প্রয়োগ করেছেন। এছাড়া তাদের পাশের অন্যান্য গ্রামের অবস্থা খুবই খারাপ। কারেন্ট পোকার আক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সব মিলিয়ে কৃষকরা ভীষণ চিন্তিত। পোকামাকড়ের কামড়ে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন বিবর্ণ হতে চলেছে বলেও মন্তব্য করেন তারা।

উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা মোসাম্মাৎ জান্নাতুল ফেরদৌস এ প্রসঙ্গে বলেন, জমিতে ধান চাষ করলে রোগ বালাই থাকবেই। পোকা ও বিভিন্ন রোগ নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে। তাই কারেন্ট পোকা নিয়ে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই। সব মিলিয়ে মাঠের সার্বিক অবস্থা ভালো রয়েছে-দাবি করে এই কর্মকর্তা আরও বলেন, এ মুহুর্তে করণীয় সম্পর্কে কৃষকদের মাঝে সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রত্যেক ওয়ার্ডে একজন করে উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা সার্বক্ষণিক মাঠে কাজ করছেন। তাই আমন ধানের ফলন কমে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই বলে জানান তিনি।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: