সংরক্ষিত সাংসদের বাসায় সিসি ক্যামেরা: থানায় জিডি চলছে তদন্ত
এম.এস রিয়াদ, (বরগুনা)
বরগুনা-২ আসনের সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য সুলতানা নাদিরা এমপির বাসভবন লক্ষ্য করে বৈদ্যুতিক খুঁটির সাথে অজ্ঞাত একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
তবে কারা এই ক্যামেরাটি লাগিয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা যায়নি। সাংসদের পরিবারের দাবি তাদেরকে নজরবন্দি ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে এই ক্যামেরাটি লাগিয়েছে একই আসনের আরেক সংসদ সদস্য শওকত হাচানুর রহমান রিমন।
জানা গেছে- পাথরঘাটা ডিগ্রি কলেজে মূল গেটের উত্তর দিকে একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি রয়েছে। ওই খুঁটির সাথে সাদা রঙের একটি সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছে। ক্যামেরার সামনের অংশটি (লেন্স) দক্ষিন দিক অর্থাৎ নারী সাংসদের বাসভবন বরাবর তাক করে রাখা হয়েছে। এতে এমপি নাদিরার বাসায় কেউ প্রবেশ করলে বা বের হলে সহজেই তা ক্যামেরাবন্দী হচ্ছে। এতে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন হচ্ছে এমপি পরিবারের। সেই সাথে বিভ্রান্তিতে পড়েছে এমপি নাদিরা।
এ বিষয়ে নারী সাংসদ সুলতানা নাদিরার মেয়ে ফারজানা সবুর রুমকি জানান- এর আগে এখানে কোন সিসি ক্যামেরা দেখা যায়নি। সম্প্রতি এই সিসি ক্যামেরাটি আমাদের নজরে আসে।
তবে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে ক্যামেরাটি পুলিশ প্রশাসন অথবা পৌরসভা কতৃপক্ষের নয়। তাহলে এই ক্যামেরাটি লাগালো কে ? ক্যামেরাটি এমন ভাবে লাগানো হয়েছে; যাতে আমাদের বাসায় কে প্রবেশ করলো! কে বের হলো! সবকিছু ক্যামেরায় রেকর্ড হচ্ছে।
এতে আমাদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা থাকছে না। পরিবারের সবাই আমারা এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি। ধারনা করছি আমাদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতে বরগুনা-২ আসনের এমপি শওকত হাচানুর রহমান রিমন এই ক্যামেরাটি নিয়ন্ত্রণ করছে। এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়েছি আমরা।
বরগুনা-২ আসনের সংরক্ষিত মহিলা সাংসদ সুলতানা নাদিরা সবুর এমপি জানান- জানিনা কারা আমার বাসায় নজরদারির জন্য গোপনে ক্যামেরা স্থাপন করেছে। এটা আমার জন্য বিব্রতকর ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য হুমকি।
তিনি বলেন- আমার ধারনা এটা এমপি রিমনের কাজ। তিনি আমাদের পরিবারের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ এবং কারা আমার বাসায় আসা-যাওয়া করছে, এমনটা নজরদারিতে রাখার জন্য এই ক্যামেরাটি লাগিয়েছে।
এ ব্যাপারে ঢাকার মধুমতি টাইলস লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার মোঃ সেলিম খলিফা কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক সংসদ সদস্য-৩১৫ সুলতানা নাদিরা ও সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম সবুর টুলু এর বাসভবনে অজ্ঞাত সিসি ক্যামেরা স্থাপনে নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সংরক্ষিত সাংসদদের পক্ষে পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে। (সাধারণ ডায়েরি নং- ১৭৬/০৪.১০.২১)
তবে সাংসদ শওকত হাচানুর রহমান রিমন ক্যামেরার কথা স্বীকার করে বলেন- আমি আমার বাসার নিরাপত্তার জন্য দুটি ক্যামেরা লাগিয়েছি। তবে সেটা মহিলা সাংসদের বাসার উদ্দেশ্য নয়, এমপি নাদিরার অভিযোগ সম্পূর্ন ভিত্তিহীন। তিনি গায়ে পরে বিবাদ সৃষ্টি করার জন্য এমনটা করছেন।
এ বিষয়ে পাথরঘাটা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবুল বাশার বলেন- সংরক্ষিত মহিলা আসনের মাননীয় এমপি সুলতানা নাদিরার পক্ষে তার কোম্পানি মধুমতি টাইলস লিমিটেড এর জেনারেল ম্যানেজার পাথরঘাটা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন।আমরা তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।