তুচ্ছ ঘটনায় খুন করা হয় মাইক্রোবাস চালককে
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ায় প্রকাশ্যে চাঞ্চল্যকর মাইক্রোবাস চালক খাইরুল ইসলাম (২৭) হত্যার ঘটনায় এক ফার্নিচার শ্রমিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তুচ্ছ ঘটনায় একটি গ্যারেজের টয়লেটে যাওয়া নিয়ে তর্কের জেরে এ হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হয়।
শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার সময় জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও বনানী ফাঁড়ি পুলিশ কাহালু উপজেলার মুরইল থেকে আসামী বাবু (২৭)কে গ্রেপ্তার করে। সোমবার দুপুর ১২টায় বগুড়ার পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী এক সংবাদ ব্রিফিং এ তথ্য জানান।
বাবু গাবতলী উপজেলার সোনারায় ইউনিয়নের আব্দুস সামাদের ছেলে। সে কানছগাড়ী এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো।
ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত মাসের ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার সময় খুন হওয়া খাইরুল তার বন্ধুদের নিয়ে কানুছগাড়ী এলাকার ফার্মেসির সামনে নিজের মাইক্রোবাসে চড়ে আড্ডা দিচ্ছিলো। আড্ডা দেওয়ার এক পর্যায়ে খাইরুল পাশের ইবনে সিনা হাসপাতালের গ্যারেজের ভিতর টয়লেটে যাওয়ার জন্য প্রবেশ করে। ওই সময় অভিযুক্ত বাবু ও তার বন্ধুদের সঙ্গে খাইরুলের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে তর্ক-বিতর্কের হয়। বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে খাইরুল আবারও তার মাইক্রোবাসে চড়ে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে থাকে। এর প্রায় ১০ থেকে ১৫ মিনিট পরে রাত ১১টার সময় আসামী বাবু তার সহযোগীদের নিয়ে খাইরুলের ওপর হামলা করে। এ সময় তার মাইক্রোবাসের গ্লাস ভেঙে তার শরীরে ছুরিকাঘাত শুরু করে। খাইরুল নিজেকে বাঁচাতে দৌঁড়ে পাশের ফার্মেসিতে গেলে সেখানেও তার হাত ও পায়ে চাকু দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত করে অভিযুক্তরা।
পরে নিহত খাইরুলের বন্ধুরা ও স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তার বাবু রোববার (৩ অক্টোবর) আদালতে হত্যাকান্ডের সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছে।
বাবুর সঙ্গে আরও কারা এ ঘটনায় সম্পৃক্ত জানতে চাইলে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তারের স্বার্থে আমরা তাদের নাম এখন প্রকাশ করছি না। তবে বাবুর বিরুদ্ধে এর আগে কোন মামলা না থাকলেও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ কয়েকটি মামলা আছে। এর আগে গত ৩০ সেপ্টেম্বর হত্যাকান্ডের একদিন পরে নিহত খায়রুলের বাবা আব্দুল খালেক বগুড়া সদর থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার বাদী (খায়রুলের বাবা) আব্দুল খালেক জানান, শুধুমাত্র টয়লেটে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমার ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। তাইলে কি যারা খুন করেছে তারা অস্ত্র নিয়ে সেখানেই বসে ছিল ?
তিনি আরও জানান, পুলিশের পক্ষ থেকে শুধুমাত্র মৌখিকভাবে আসামি গ্রেপ্তার ও হত্যার কারণ জানানো হয়েছে। তবে রোববার আসামিকে আদালতে হাজির ও ১৬৪ ধারা স্বীকারোক্তি নেওয়া হলেও বাদীপক্ষকে আদালতে আসতে বলা হয়নি।