অন্তঃসত্ত্বা পাগলীর পাশে দাড়লো প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধি
এইচ কবীর টিটো, (গফরগাঁও) :
ময়মনসিংহ জেলা গফরগাঁও উপজেলার উস্থি ইউনিয়নের কান্দিপাড়ার কড়ই তলা এলাকায় এক ভারসাম্যহীন পাগলী নারী মর্জিনা(আনুমানিক বয়স ৩৩)নামের ৮ মাসের এক অন্তঃসত্ত্বা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীকে দেখা যাচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৬ মাস পূর্বে আসা এই ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীটি অসহায় অবস্থায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন।না খেয়ে থাকার কারণে তাঁর শরীরের অবস্থা দিনদিন অবনতি দিকে যাচ্ছে বলে এলাকাবাসী জানায়।
জানা যায়, বিগত ৬ মাস ধরে কান্দিপাড়া বাজারের কাছে কড়ই তলা অবস্থান করা পাগলীর মানবেতর জীবন যাপন দেখে সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন জাগতে শুরু করছে না জানি মানুষ নামের কেমন নরপশুর যৌন লালসার স্বীকার হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন পাগল নারীটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে রাস্তায় রোদ-ঝর-বৃষ্টিতে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
আলিমুননেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান সবুজ বলেন, গত ৬ মাস ধরে বাজারে এই অন্তঃসত্ত্বা পাগলীকে ঘুরাফেরা করতে দেখছি।বিষয়টি অতন্ত্য দুঃখজনক। এলাকার যুবক রক্সী বলেন,আমি রাতে পাঁচ শত টাকা গাড়ি ভাড়া দিয়েছি। চৌকিদার আসলেও তাদের খরচ দেয়া হয়নি।তারপরও এই মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর রক্ষা হোক।
কান্দিপাড়া বাজারের ব্যবসায়ীরা বলেন, এ ঘটনাটি অমানবিক। পাগলীটি অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় সারাদিন ব্যবসায়ীদের দোকানের সামনে বসে থাকে। যখন যা পারে খেতে দেয়া হয়। বর্তমানে তার সারা শরীরে পানি জমে গেছে যে কোন মুহুর্তেই তার বাচ্চা প্রসবের অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে। তাই গফরগাঁও উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় জননেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যেন দ্রুত এই অসহায় পাগলীটির সুচিৎকিসার সুব্যবস্থা করে সন্তান প্রসব না হওয়া পর্যন্ত বাসস্থানের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেন।
পরে বিষয়টি গফরগাঁও উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রেশমা আক্তার কে জানানো হলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাজুল ইসলাম ও মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা খালেদা আক্তারের প্রচেষ্টায় এই পাগলী নারী কে গত রাত ১২টার পরে স্থানীয় গফরগাঁও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
উস্থি ইউনিয়নের কান্দিপাড়া বাজার এলাকাটিতে রাতে মাদকসেবিদের আড্ডা চলে গভীর রাত পর্যন্ত।এদের কাছে পাগল কেন কোন মানুষই নিরাপদ নয় বলে এলাকাবাসী অভিযোগ করে।
উস্থি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম তোতা চৌকিদার পাঠালেও কোন খরচ দেননি বলে উপস্থিত লোকজন জানান।
এ বিষয়ে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রেমা আক্তার বলেন,মানুষ মানুষের জন্য। সমাজের বসবাসরত একজন নারী মানুষ কোন কারণে মানসিক ভারসাম্যহীন হতে পারে, কিন্তু তার বেঁচে থাকার অধিকার আছে।
তাই বলে আমরা যারা সুস্থ মস্তিষ্কের অধিকারী তারা কি করে এমন বিকৃত আচরণের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারি।আমরা সব সময় মানসিক ভারসাম্যহীন মর্জিনার খোঁজ নিচ্ছি।
সন্তান প্রসবকালে তার দুর্ঘটনার আশংকায় এলাকাবাসী তাকে উপযুক্ত স্থানে পুণর্বাসনের দাবি জানান।
এ ব্যাপারে উপজেলা প.প কর্মকর্তা ডাক্তার মাইন উদ্দিন খান জানান, প্রসবকালে তাকে প্রয়োজনীয় মেডিক্যাল সাপোর্ট দেয়া হবে। তাঁর অবস্থা ঠিক আছে তবে শারিরীক অবস্থা খুব দুর্বল।