ধুনটে নারী ইউপি সদস্য হত্যা মামলায় এবার স্বামী গ্রেপ্তার
প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :
বগুড়ার ধুনট উপজেলার মথুরাপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও মানবাধিকারকর্মী রেশমা খাতুন হত্যাকান্ডের এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও এ হত্যার রহস্য এখনো অন্ধকারেই থেকে গেছে। তবে পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে এ হত্যাকান্ডে জড়িত সন্দেহে রেশমার স্বামী ফরিদুল ইসলামকে (৪৮) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ফরিদুল উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের আলতাব আলীর ছেলে।
শুক্রবার দুপুরে ধুনট থানা থেকে আদালতের মাধ্যমে ফরিদুলকে বগুড়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ পর্যন্ত পাঁচজনকে আটক করা হলেও তাদের কেউই হত্যাকা-ে সরাসরি জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেনি।
মামলা সূত্রে জানা যায়, কুড়িগাতী গ্রামে ধানক্ষেত থেকে ২২ সেপ্টেম্বর রেশমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহত রেশমার ভাই মিজানুর রহমান বাদি হয়ে ২৩ সেপ্টেম্বর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে। কিন্তু ওই মামলায় কোন আসামীর নাম উল্লেখ নেই। তবে নানামুখি তদন্তে মাঠে নামেন পুলিশ। মোবাইল ফোনের কললিস্টের সূত্র ধরে রেশমার পরকীয়া প্রেমিক নরেশ চন্দ্রকে আটক করে পুলিশ। তার দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গোবিন্দপুর গ্রামের জুয়েল সেখ ও শান্তি বেগমকে আটক করে। এরমধ্যে শান্তি বেগম এ হত্যাকান্ডের প্রত্যক্ষদর্শী ও জুয়েল সেখ গোবিন্দপুর থেকে ভ্যানে রেশমার লাশ কুড়িগাতী গ্রামে ধানক্ষেতে ফেলে দেয়। বগুড়া আদালতে এমন স্বীকারোক্তি দিয়েছে শান্তি ও জুয়েল। তাদের তথ্যমতে এ হত্যায় প্ররোচনাকারী হিসেবে গ্রামের মাতব্বর নুরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এদিকে পাঁচ বছর আগে ইউপি সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর বখে যাওয়া রেশমা একাধিক পুরুষের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। অবাধ্য স্ত্রীকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে ফরিদুলের পরিকল্পনায় গ্রামের এক ব্যবসায়ীসহ ৭জন এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছে বলে পুলিশের ধারনা। সেই সন্দেহ থেকেই ফরিদুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ধুনট থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কৃপা সিন্ধু বালা বলেন, এ পর্যান্ত ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। এরমধ্যে নরেশ ও শান্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাকী ৩ জনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আরো ৪ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। এই মুহূর্তে তাদের নজরদারিতে রাখা হয়েছে। তাদের আটকের পর এ হত্যার প্রকৃত রহস্য পাওয়া যেতে পারে।