শিরোনাম

South east bank ad

শতবর্ষী বিদ্যালয় বিলীন চান না এলাকাবাসী

 প্রকাশ: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ১২:০০ পূর্বাহ্ন   |   অটোমোবাইল

প্রদীপ মোহন্ত, (বগুড়া) :

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার শতবর্ষী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রহিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি মহাসড়ক সম্প্রসারণের কারণে অধিগ্রহণ করায় বিদ্যালয়টি উচ্ছেদের আওতায় পড়েছে। ফলে এই বিদ্যালয়টিকে তার স্ক্যাচমেণ্ট এলাকায় প্রতিস্থাপন না করে এক কিলোমিটার দুরে আড়িয়া-রহিমাবাদ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। কিন্তু জমি দান করেও বিদ্যালয়টি নিজ এলাকায় প্রতিস্থাপন করতে না পেরে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এমতাবস্থায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের এমন হঠকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং নিজ এলাকায় বিদ্যালয় প্রতিস্থাপনের দাবি জানিয়ে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসি।

শনিবার দুপুরের দিকে রহিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের পাশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়।
মানববন্ধনে আড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী অধ্যাপক আওরঙ্গজেব, অবসরপ্রাপ্ত সহকারী প্রাথমিক শিক্ষক মোহসিন আলী, ইউপি সদস্য তাজুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও এলাকার শত শত নারী-পুরুষ অংশ গ্রহন করেন।

মানববন্ধনে স্থানীয় ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম তার বক্তব্যে বলেন, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরিত করা হলে রহিমাবাদ গ্রামের শিশুরা এক কিলোমিটারের মধ্যে কোন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার সুযোগ পাবে না। সেই সঙ্গে রহিমাবাদ এলাকা থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাবে পূর্ব পুরুষদের স্থাপন করা ঐতিহ্যবাহী প্রাথমিক বিদ্যালয়টি। অথচ বিদ্যালয়ের জমি ও ভবনের মূল্য বাবদ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রায় ৫ কোটি টাকা পাচ্ছে। সেই টাকা দিয়ে স্ক্যাচমেণ্ট এরিয়ার মধ্যে বিদ্যালয়টি স্থানান্তর করা যায়। তারপরও এলাকাবাসি বিদ্যালয়টিকে নিজ এলাকায় ধরে রাখতে ১৪ শতক জমি দান করার ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু সে দিকে অগ্রসর না হয়ে অজ্ঞাত কারণে স্কুলটি অন্যত্র সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় শিক্ষার্থীরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে লেখপড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হবে।

মানববন্ধনে আসা আড়িয়া-রহিমাবাদ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি সহকারী অধ্যাপক (অব:) আওরঙ্গজেব জানান, তার বিদ্যালয়টি বালিকা বিদ্যালয়। সেখানে অন্য একটি বিদ্যালয় সমন্বয় করা শোভনীয় হবে না। এছাড়া মহাসড়কে অধিগ্রহণের কারণে তার বিদ্যালয়টি সংকীর্ণ হয়ে পড়েছে। ফলে নিজস্ব শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর উপর অন্য স্কুল সমন্বয় করলে তা হবে বিদ্যালয়টিকে গলা টিপে হত্যার শামিল। পাশাপাশি দুটো বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হবে।

উল্লেখ্য, এলেঙ্গা-হটিকুমরুল-রংপুর মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীতকরণ প্রকল্প বাস্তাবায়নের ক্ষেত্রে শাজাহানপুর উপজেলার ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জমি অধিগ্রহণের আওতায় পড়েছে। এর মধ্যে রহিমাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অধিকাংশ জমি অধিগ্রহণ হওয়ায় সেখানে বিদ্যালয় ভবন তৈরির সুযোগ নেই। এমতাবস্থায় ১৯২৫ সালে স্থাপিত ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি নিজ এলাকায় ধরে রাখতে স্থানীয়রা ১৪ শতক জমি দান করার ঘোষণা দেন। তারপরও অজ্ঞাত কারণে ২৮ জুন ২০২১ তারিখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সভায় বিদ্যালয়টিকে তার স্ক্যাচমেণ্ট এরিয়ার বাইরে ১ কিলোমিটার দক্ষিণে আড়িয়া-রহিমাবাদ বালিকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সমন্বয় করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

পরবর্তীসময়ে ৩১ আগস্ট শাজাহানপুর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সভায় বিদ্যালয় স্থানান্তরের বিষয়ে সুপারিশ করা হয়। এমতাবস্থায় স্কুল স্থানান্তরের বিষয়টি জানাজানি হলে রহিমাবাদ গ্রামবাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শাজাহানপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসিফ আহমেদ জানান, বিদ্যালয়টি স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে নেওয়া হয়েছে। স্থানীয়দের দাবির বিষয়টি তিনি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে ধরবেন। বিদ্যালয়টি কোথায় স্থানান্তর করা হবে সেটা নির্ধারন করবে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।

BBS cable ad

অটোমোবাইল এর আরও খবর: